Light Battle Tank: রেকর্ড সময়ে নিজস্ব যুদ্ধট্যাঙ্ক বানিয়ে ফলল ভারত, চিন্তায় ঘুম উড়েছে চিনের...
ডিআরডিও-র লাইট ট্যাঙ্ক জোরাবর। ছবি-সংগৃহীত
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেশের প্রতিরক্ষায় আত্মনির্ভর ভারত-এর আরও একটি সাফল্য। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হাল্কা যুদ্ধট্যাঙ্ক ‘জোরাবর’-এর (Zorawar) পরীক্ষা শুরু হল প্রৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লাগোয়া লাদাখের পার্বত্য এলাকায়।
চিন-সীমান্তের সুরক্ষা মজবুত করার জন্য সেখানে যুদ্ধট্যাঙ্ক মোতায়েন করা যে অবশ্যম্ভাবী, তা টের পেয়েছিল ভারত। সেই অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যবহৃত দেশীয় ‘অর্জুন’, রুশ টি-৯০ (ভীষ্ম), টি-৭২ (অজেয়) ট্যাঙ্কগুলি অত্যন্ত ভারী হওয়ায় সেগুলিকে ওই দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে তুলে নিয়ে গিয়ে মোতায়েন করা ভীষণই কষ্টসাধ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল সেনার কাছে। শুধু তাই নয়, ওই যুদ্ধট্যাঙ্কগুলি লাদাখের মতো প্রতিকূল আবহাওয়ায় বেশিদিন কার্যকর থাকছিল না।
অন্যদিকে, চিনারা ওই জায়গায় হাল্কা ট্যাঙ্ক মোতায়েন করা শুরু করেছিল। যা রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ভারতীয় সেনার কাছে। প্রাথমিকভাবে, রুশ নির্মিত বিএমপি-২ ‘ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিকল’ দিয়ে পরিস্থিতি ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। এক সময় স্থির করা হয়েছিল, রাশিয়ার কাছে এই বিএমপি আমদানি করা হবে। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রতিরক্ষায় আত্মনির্ভর হতে।
এই প্রেক্ষিতে ভারতের কাছে এই প্রতিকূলতা বা সমস্যার একটাই সমাধান ছিল। তা হল, যদি ভারতের হাতে এমন একটা হাল্কা ট্যাঙ্ক থাকে, যা সহজেই সেখানে মোতায়েন করা সম্ভব হয়। সেনার এই প্রয়োজনীয়তা এবং দাবিকে মান্যতা দিয়ে চার বছর আগে এক নতুন ধরনের ট্যাঙ্ক (Light Battle Tank) তৈরির কাজ শুরু করে দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা— ডিআরডিও। চার বছরের প্ররিশ্রম ও প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে তৈরি হয়েছে মাত্র ২৫ টন ওজনের লাইট ব্যাটল ট্যাঙ্ক ‘জোরাবর’ (Zorawar)। বলা যেতে পারে, রেকর্ড সময়ে এই ট্যাঙ্ক তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে ডিআরডিও।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, জোরাবর তৈরির সময় চারটি বিষয়কে মাথায় রাখা হয়েছে। প্রথমত, ট্যাঙ্কটি হাল্কা (Light Battle Tank) হতে হবে যাতে দুর্গম রুক্ষ পার্বত্য অঞ্চলে তাকে মোতায়েন করতে ঝক্কি না পোহাতে হয় সেনাকে। দ্বিতীয়ত, ট্যাঙ্কটি এমন হতে হবে যাতে প্রতিকূল পরিস্থিতি, পরিবেশ ও আবহাওয়ায় যেন সমান সচল থাকে এর কার্যকারিতা। তৃতীয়, এই ট্যাঙ্ককে দ্রুত এক জায়াগা থেকে আরেক জায়গায় স্থানাস্তর করা যাবে। চতুর্থ, এই ট্যাঙ্ককে উভচর হতে হবে। অর্থাৎ, স্থলের পাশাপাশি জলেও সচল থাকবে এমন ট্যাঙ্ক (Zorawar)।
আপাতত, ডিআরডিও এই ট্যাঙ্কের ট্রায়াল শুরু করেছে। এটা হচ্ছে উৎপাদনী মহড়া। যা চলবে প্রায় চার মাস। তাতে উত্তীর্ণ হলে, এই ট্যাঙ্কটি (Light Battle Tank) তুলে দেওয়া হবে ভারতীয় সেনার হাতে। তারা আবার এর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। যা ইউজার-ট্রায়াল বা ব্যবহারকারী মহড়ার অঙ্গ হবে। একবার সেনা জোরাবরকে ফিট ঘোষণা করলেই, দ্রুত এই ট্যাঙ্কের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে। এই ট্যাঙ্ক (Zorawar) হাতে আসলে ভারতীয় সেনার পক্ষে এলএসি-তে চিনা আগ্রাসনের মোকাবিলা অনেক সহজ হবে বলে সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।