ভোটের খরচে মূল্য বেঁধে দিল নির্বাচন কমিশন...
প্রতীকী ছবি
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও অবাধ করার ঘোষণা কমিশন (Election Commission) আগেই করেছিল। সেই মতো একের পর এক পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে কমিশনকে। এবার ভোটের খরচকে স্বচ্ছ করতে বিভিন্ন রেট বেঁধে দিতে চলেছে কমিশন। এমনটাই জানা গিয়েছে। এবিষয়ে এক কদম এগিয়ে ২৮১টি সামগ্রীর মূল্য বেঁধে দিল যোগী রাজ্যের গৌতম বুদ্ধ নগর জেলা প্রশাসন। তবে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্থানীয় দরকে মাথায় রেখে এই রেট চার্টে সামান্য অদলবদল করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। কিন্তু, কেন এমন মূল্য বেঁধে দেওয়ার প্রয়োজন হল?
গৌতম বুদ্ধ নগরের এক আধিকারিকের কথায়, “কেউ হিসাবে গরমিল দেখাতে পারবে না। ধরুন কোনও দল ১ হাজার সিঙাড়া বা মিষ্টি বিতরণ করেছে, তখন এর মূল্য এই রেট তালিকার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে।” নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেক প্রার্থীকে নির্বাচনী খরচের জন্য একটি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করে রাখতে হবে। প্রচারের প্রতিটি খরচ সেই অ্যাকাউন্ট থেকেই হওয়া বাঞ্ছনীয়। ২০ হাজার টাকার বেশি খরচ করলে তা চেকের মাধ্যমে করতে হবে প্রার্থীদের। এই হিসাবে দেখা যাচ্ছে ২০১৯ সালের তুলনায় ১৮তম লোকসভা নির্বাচন প্রার্থীদের ২০% খরচ বাড়তে চলেছে। কারণ গত পাঁচ বছরে সিঙাড়া থেকে থেকে স্পেশাল থালি, কফি, পোহা, পুরি-সবজি সমেত অন্যান্য সামগ্রীর দাম বেড়েছে।
নির্বাচনে কমিশনের (Election Commission) একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২০১৯ সালে যে সিঙাড়ার দাম ৮ টাকা ছিল বর্তমানে তা পৌঁছেছে ১০ টাকায়। এইভাবে ১০০ টাকার স্পেশাল থালি ২০২৪ সালে হয়েছে ১৬০ টাকা। পোহার দামও বেড়েছে পাঁচ টাকা। এক কাপ চায়ের দাম ধরা হচ্ছে ১৪ টাকা। পুরি-সবজির দাম ৬০ টাকা, লাঞ্চ প্যাকেট ১২০ টাকা, ভিআইপি লাঞ্চ প্যাকেট ২০০ টাকা, জলের বোতল ২০ টাকা, কোল্ড-ড্রিঙ্কস ১৫ টাকা। একইভাবে, বরফি ২০০ টাকা কিলো, বিস্কুট ১৫০ টাকা কিলো, ব্রেড পকোড়া ১০ টাকা, স্যান্ডউইচ ১৫ টাকা এবং জিলিপি ১৪০ টাকা কিলো ধার্য করেছে কমিশন।
হোটেলে রুম বুক করলে এসি সিঙ্গেল বেডের ভাড়া ধরা হয়েছে ১,৬৫০ টাকা। আর ডবল বেডে ভাড়া ধরা হয়েছে ২,১০০ টাকা, এসি ছাড়া হোটেল রুমের খরচ ধরা হচ্ছে ৯০০ টাকা। ডাবল বেডে ১,৩০০ টাকা। এর পাশাপাশি, নির্বাচনের প্রচারের (Election Commission) কাজে ব্যবহৃত যানবাহনগুলির খরচাও বেড়েছে। এই যানবাহনগুলির একদিনের ভাড়া আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা হয়েছে। জীপ গাড়ির দর ঘণ্টাপ্রতি ১০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে। একইভাবে টেম্পো ৮৫০ টাকা, টাটা সুমো ১২০০ টাকা, ইনোভা ২৭০০ টাকা, স্করপিও ১৫০০ টাকা, ইন্ডিগো, সুইফ্ট এবং বোলেরো ১২০০ টাকা, টাটা সাফারি ১৬০০ টাকা এবং টাভেরা ১৭০০ টাকা। গাড়ি চালকের মজুরি ধরা হয়েছে ৫৪০ টাকা হয়েছে।
বড় বড় তারকা প্রচারকরা (Election Commission) সাধারণত হেলিকপ্টারে উড়ে প্রচারে আসেন। তাঁদের জন্য নির্মাণ করতে হয় হেলিপ্যাড। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও হেলপ্যাড তৈরিতে খরচ ছিল ১০,০০০ টাকা। ২০২৪ সালে এটা ধরা হয়েছে ১২ হাজার টাকা। এর পাশাপাশি প্যান্ডেল, মঞ্চ, ব্যানার ইত্যাদির খরচও বেশি ধরা হয়েছে আগের থেকে। ড্রোন ক্যামেরার খরচ ১৫ মিনিটের জন্য ১৬ হাজার টাকা রাখা হয়েছে।
রেট বেঁধে দেওয়া হয়েছে ফুলের মালাতেও (Election Commission)। গাঁদা ফুলের মালার এক পিসের দাম ধরা হয়েছে ২৫ টাকা। ফুলের তোড়ার দাম ধার্য করা হয়েছে ১৮০ টাকা। ভিভিআইপি নেতারা মঞ্চে এলে দৈত্যকায় ফুলের মালা ব্যবহার করতে দেখা যায়। এর দাম ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত ধরা হয়েছে। গোলাপ ফুলের বুকের দাম ৪০০ টাকা নির্ধারিত হয়েছে। খরচ বেড়েছে প্রজেক্টরেরও। ৪৪ ইঞ্চি এলইডি'র ডিসপ্লে ২০২৪ সালে ৫০০০ টাকা ভাড়া হিসাবে ধরা হচ্ছে প্রতি ১২ ঘণ্টায়। ২০১৯ সালে যা ৩,০০০ টাকা ছিল।
প্রচারে জনসংযোগ বাড়াতে বহু প্রার্থী খোল-করতাল থেকে শুরু করে ডিজে ও নাচগানের আয়োজন করেন। নির্ধারিত হয়েছে তার খরচও। জানা যাচ্ছে, ঢোল-নাগাড়ার জন্য ঘণ্টাপ্রতি ৫৫০ টাকা এবং নাচগানের আসরের জন্য ৯,৫০০ টাকা নির্ধারিত করা হয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।