img

Follow us on

Friday, Jun 28, 2024

Energy Security: প্রচলিত শক্তি উৎসের বিকল্প হতে পারে ‘হাইড্রোজেন’! উৎপাদন বাড়ছে ভারতেও

কয়লা-তেল-গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমাতে পারে হাইড্রোজেন, দিতে পারে শক্তির নিরাপত্তা 

img

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি

  2024-06-01 16:24:00

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পরিবেশকে যদি বাঁচানো যায় তবে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে তা পৃথিবীর জীবনকে বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম হবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মনুষ্যজনিত কাজেই পরিবেশের ভারসাম্য সবথেকে বেশি বিঘ্নিত হয়। এই আবহে প্রচলিত শক্তির নিরাপত্তাও (Energy Security) প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে। ক্রমশই তা ফুরিয়ে আসছে বলে উদ্বেগ প্রকাশও করছেন বিজ্ঞানীরা। আবার প্রচলিত শক্তির বিপুল ব্যবহারের ফলে ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ, বাড়ছে দূষণ। দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলিতে আবার প্রচলিত শক্তির অভাব ব্যাপক দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে, সারা বিশ্বজুড়ে এখনও পর্যন্ত সাড়ে ৬৭ কোটি মানুষ রয়েছেন যাঁদের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। ওই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, আমাদের দেশ ভারত আগামী কুড়ি বছরের বিশ্বব্যাপী শক্তির চাহিদা ২৫ শতাংশ মেটাতে সক্ষম হবে। প্রচলিত শক্তির নিরাপত্তা যখন চ্যালেঞ্জের মুখে, তখন পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি অনেক বেশি ভরসার জায়গা দেখাচ্ছে এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এখন পরিবেশের ভারসাম্যকে বজায় রাখতে যতটা সম্ভব পুনর্নবীকরণ শক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। আজকের আমাদের প্রতিবেদনে শক্তি নিরাপত্তা, শক্তি নিরাপত্তায় হাইড্রোজেনের ভূমিকা এবং ভারতের প্রচেষ্টা এই নিয়ে আলোচনা করব।

শক্তি নিরাপত্তা

বিশেষজ্ঞদের মতে, শক্তি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট জিনিস নয় তবে তা অন্য সমস্ত জিনিসের একটি মৌলিক উপাদানও বটে। অর্থাৎ বায়ু, জল, মাটি- এ সমস্ত কিছুরই মৌলিক উপাদান হল শক্তি। জোরের সঙ্গে বলা যায় যে মানব সভ্যতার বিকাশের লক্ষ্যে শক্তি নিরাপত্তা একটা মৌলিক প্রয়োজন। 'দ্য ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি' ইতিমধ্যে জানিয়েছে, শক্তির উৎসকে অত্যন্ত সাশ্রয়ী করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে তারা। অর্থাৎ সকল মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে শক্তিকে। এমন অবস্থায় সম্পূর্ণভাবে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে শক্তির উৎসগুলি। ঠিক এই কারণেই সূর্য শক্তি, বায়ু শক্তি, জৈব বস্তু, হাইড্রোজেন ইত্যাদির মতো পুনর্নবীকরণ শক্তিগুলির ওপরে জোর দেওয়া প্রয়োজন বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। পুনর্নবীকরণ শক্তি অত্যন্ত সাশ্রয়ী। এই শক্তিগুলি পরিবেশবান্ধবও হয়। 

বিশ্বে শক্তির ৮৪ শতাংশ আসে খনিজ তেল-কয়লা-গ্যাস থেকে 

একটি রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে , এখনও সারা বিশ্বে শক্তির ৮৪ শতাংশ আসে খনিজ তেল, কয়লা এবং গ্যাস থেকে। তবে একথা ঠিক শক্তির উৎস সব দেশে সমান নয় এবং এক্ষেত্রে আলাদা আলাদা দেশে আলাদা আলাদা রকমের শক্তির উৎস রয়েছে। কোনওটাতে খুব বেশি, কোনওটাতে একেবারেই নেই। ঠিক এই কারণেই শক্তি সম্পদের অসম বন্টন হয়। পৃথিবীব্যাপী কয়েকটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলেই খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস শক্তির উৎস হিসেবে রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সর্বোচ্চ খনিজ তেল উৎপাদনকারী দেশ হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, ইরাক এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। কয়লা উৎপাদনে চিন শীর্ষস্থান অধিকার করে। গ্যাসের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ উৎপাদনকারী দেশ হল রাশিয়া। বর্তমানে ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন যুদ্ধ, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চিনের আগ্রাসন, জ্বালানি নিরাপত্তাকেও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।

হাইড্রোজেন কি আমাদের শক্তি নিরাপত্তা দিতে পারে?

বিজ্ঞানীরা হাইড্রোজেনকেই ভবিষ্যতের জ্বালানি (Energy Security) হিসেবে দেখছেন। হাইড্রোজেনের ব্যবহার বাড়লে জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক শক্তি ব্যবস্থার ওপর নির্ভরতা অনেকটাই কমবে। জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক শক্তির ব্যবহারের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য সর্বদা বিঘ্নিত হয়। পরিবেশ দূষিত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের মত বিষয়গুলিও এর সঙ্গে সম্পর্কিত। কিন্তু হাইড্রোজেনের ব্যবহারের ফলে জলবায়ুর পরিবর্তনের মতো সমস্যা থেকেও মুক্তি মিলবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীতে বেশিরভাগ হাইড্রোজেনে জলের সঙ্গে মিশে রয়েছে। হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন মিলেই জল তৈরি হয়। এভাবে জলকে বিশ্লেষণ করে হাইড্রোজেন তৈরি হতে পারে। হাইড্রোজেনকে আলাদাভাবে বিচ্ছিন্ন করার অনেক পদ্ধতি রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ইলেকট্রোলাইসিস, গ্যাসিফিকেশন ইত্যাদি। গঠনের ওপর ভিত্তি করে হাইড্রোজেনকে ধূসর, বাদামী, নীল এবং সবুজ এই হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে।

পৃথিবীর সব দেশেই সম্ভব হাইড্রোজেনের উৎপাদন 

পৃথিবীর সব দেশেই হাইড্রোজেন উৎপাদিত (Energy Security) হতে পারে। পৃথিবীজুড়ে খনিজ তেল, গ্যাস ও কয়লা উৎপাদনে যে নির্দিষ্ট কিছু ভৌগোলিক অবস্থান রয়েছে সে প্রভাব থেকে হাইড্রোজেন মুক্ত। এর ফলে লাভবান হতে পারে উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলি। এতে শক্তি নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে না। তার কারণ হাইড্রোজেন উৎপাদিত বস্তু এবং তা জল থেকেই বিভিন্ন পদ্ধতিতে বিশ্লিষ্ট হয়ে পাওয়ার যাবে। পাশাপাশি সূর্য শক্তি, বায়ু শক্তি, বায়োমাসের মতো পুনর্নবীকরণ শক্তির সাহায্যে উৎপাদিত হলে প্রকৃতিতে দূষণও ছড়াবে না হাইড্রোজেন। উৎপাদিত হাইড্রোজেনকে সাধারণভাবে সবুজ হাইড্রোজেন বলা হয়। হাইড্রোজেনের উৎপাদনের ফলে তা কাজে লাগবে পরিবহন ব্যবস্থার জ্বালানিরূপে ও শিল্পের কাজে।

ভারত ও হাইড্রোজেন (Energy Security)

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অর্থাৎ মোদি জমানায় ভারতে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার ব্যাপক হয়েছে। অর্থনৈতিক বৃদ্ধির দিক থেকে ভারত পিছনে ফেলে দিয়েছে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিকেও। সাধারণভাবে ভারতে যে সমস্ত শক্তির চাহিদা রয়েছে তার ৮০ শতাংশ মেটে তিনটি জ্বালানি থেকে। এগুলি, কয়লা, তেল ও বায়োমাস। এছাড়াও ভারতে ক্রমবর্ধমান যেভাবে পরিবহন চাহিদা বেড়ে চলেছে সে কারণে খনিজ তেলের ব্যবহার (Energy Security) এবং আমদানি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত বছরগুলিতে প্রচলিত শক্তির ব্যবহার থেকে ভারত পুনর্নবীকরণ শক্তির ব্যবহারে অনেক বেশি ঝুঁকেছে। সবুজ হাইড্রোজেন ও বৈদ্যুতিক যানবাহনও বহুল পরিমাণে দেখা যাচ্ছে। ভারতে চালু হয়েছে ১৯ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকার 'ন্যাশনাল গ্রিন হাইড্রোজেন মিশন'। এর ফলে প্রতি বছর 5MMT হাইড্রোজেন উৎপাদন হবে। সবুজ হাইড্রোজেনকে বাণিজ্যিকভাবে আরও বেশি জনপ্রিয় করাই এই মিশনের লক্ষ্য। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখনও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে ভারতকে। কারণ দেশে হাইড্রোজেন ইকোসিস্টেম এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। অর্থাৎ হাইড্রোজেন উৎপাদনের যে পরিকাঠামো তা আরও বাড়াতে হবে। সে ক্ষেত্রে জাতীয় হাইড্রোজেন মিশন, এই দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। গত বছরের সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৮তম জি২০ সম্মেলন। সেখানেই একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যার নাম ছিল 'গ্রীন হাইড্রোজেন পাইলটস ইন ইন্ডিয়া', এখানেই ভারতের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়িত নানা গ্রিন হাইড্রোজেন প্রকল্পগুলিকে প্রদর্শন করা হয়। 

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Tags:

Madhyom

bangla news

Bengali news

green hydrogen

hydrogen

Energy Security

hydrogen ecosystem

producing hydrogen

National Hydrogen Mission

Hydrogen Production Analysis

18th G20 Summit

Green Hydrogen Pilots in India


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর