সরকারের নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য গঠিত একটি সাব কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন অধ্যাপক আলতাফ হোসেন।
অধ্যাপক আলতাফ হোসেন।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ রয়েছে সন্দেহে কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক(Kashmir Professor)-সহ তিন সরকারি কর্মীর চাকরি গেল। সংবিধানের ৩১১ ধারা অনুযায়ী জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন ওই তিনজনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক আলতাফ হোসেন পণ্ডিত ছাড়াও স্কুল শিক্ষক মহম্মদ মকবুল হাজাম এবং পুলিস কনস্টেবল গুলাম রসুলকেও বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ,তাঁরা বৈষম্যমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত এবং তাঁদের সঙ্গে জঙ্গিদের যোগাযোগ রয়েছে।
সরকারের নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য গঠিত একটি সাব কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন অধ্যাপক আলতাফ হোসেন। এছাড়া রসায়ন সংক্রান্ত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জার্নালে তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণাপত্র ছাপা হয়েছে। দেশেও রসায়ন বিজ্ঞানে মহলে তাঁর বিরাট নামডাক। এছাড়াও ব্যক্তিগত সততা, আচরণ ইত্যাদির কারণেও অধ্যাপক আলতাফ হোসেন পন্ডিত বিশ্ববিদ্যালয়ে খুবই জনপ্রিয়। দেশের বহু নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে রয়েছেন।
জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা জানান, সরাসরি জঙ্গিদের সমর্থন করেন আলতাফ। অভিযোগ, জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গেও তিনি জড়িত। সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, অধ্যাপক হুসেন জামাত-এ-ইসলামের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তিনি জঙ্গি প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য পাকিস্তানেও গিয়েছিলেন। ১৯৯৩ সালেও হুসেন গ্রেফতার হন। গ্রেফতার হওয়ার আগে টানা তিন বছর তিনি জেকেএলএফের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। জঙ্গি নিয়োগের ক্ষেত্রেও তাঁর প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি হত্যার প্রতিবাদে যতগুলি হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে বা নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়াছুড়ি হয়, তার সবকটিতেই হুসেন যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ। ২০১৫ সালে কাশ্মীর ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী কমিটির সদস্য হন ওই অধ্যাপক। অভিযোগ,ওই পদমর্যাদাকে কাজে লাগিয়ে তিনি ছাত্রদের মধ্যে বিচ্ছেদ এবং বৈষম্যের প্রচার চালাতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রকে জঙ্গি কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগও রয়েছে হোসেনের বিরুদ্ধে।
কাশ্মীর প্রশাসন জানায়, স্কুল শিক্ষক মকবুল হাজাম সোগামে থানা এবং অন্যান্য সরকারি অফিসে হামলার ঘটনায় জড়িত ছিলেন। সরকারি কর্মী হওয়া সত্ত্বেও তিনি জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত হয়ে পড়েন। পুলিস কনস্টেবল গুলাম রসুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনিও জঙ্গিদের নানা ভাবে সাহায্য করতেন। নিরাপত্তাবাহিনীর গতিবিধি জঙ্গিদের জানিয়ে দেওয়া ছিল তাঁর অন্যতম কাজ। তার সঙ্গে হিজবুল জঙ্গি মুসতাক আহমেদ ওরফে ঔরঙ্গজেবের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। তিনজনের বিরুদ্ধেই এসব গুরুতর অভিযোগ খতিয়ে দেখার পর সংশ্লিষ্ট সরকারি কমিটি তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্তের সুপারিশ করে। সেইমতো প্রশাসন তিনজনকে বরখাস্ত করে।