উত্তরাখণ্ডে ভেসে গেল সাত বছরের শিশু...
জলমগ্ন দিল্লি (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বন্যায় (Flood in North India) জনজীবন বিপর্যস্ত রাজধানী দিল্লিতে। একনাগাড়ে বৃষ্টি হয়েই চলেছে। যমুনার জল বিপদসীমা অতিক্রম করেছে, এর জেরে জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে রাজধানীর রেড ফোর্ট, রাজঘাটের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। যমুনা ফুঁসছে, তবে এখনও আশার বাণী শোনাতে পারেননি হাওয়া অফিসের আধিকারিকরা। আবারও বৃষ্টি হবে বলে সতর্কবার্তা জারি করেই চলেছে মৌসম ভবন। জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। একই অবস্থা উত্তরাখণ্ড ও হিমাচলেরও। হরিদ্বারে সাত বছরের শিশু সমেত তিন জন ভেসে গিয়েছে বলে খবর মিলেছে। একাধিক রাস্তা সেখানে ধসের কারণে বন্ধ রয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে উত্তরাখণ্ডে প্রায় ৬০০ এর কাছাকাছি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। জনজীবন সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত।
হরিদ্বার, ভগবানপুর, লস্কর এবং রুরকি এই সমস্ত জায়গার অবস্থা খুব খারাপ। এই সমস্ত এলাকার মানুষজনকে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। খাবারের প্যাকেট, পানীয় জল এবং অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী বিলি করা হচ্ছে সরকারের তরফ থেকে। জানা গিয়েছে, বন্যার (Flood in North India) কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পুলিশ এবং সেনা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার হরিদ্বারের বন্যাকবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। রোজই মিলছে মৃত্যুর খবর। সূত্রের খবর, হাবিবপুর কুণ্ডি গ্রামে সৎপাল নামে ৪৭ বছর বয়সি এক ব্যক্তি জলের তোড়ে নিঁখোজ। আবার বাসেদি খাদার গ্রামে বন্যার জলে তলিয়ে মৃত্যু হয়েছে অজয় কুমার নামে ২৭ বছরের এক যুবকের।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে যমুনার জলস্তর কিছুটা নেমেছে। কিন্তু এতেও পরিত্রাণ নেই কারণ বিপদসীমা থেকে এখনও অনেকটা ওপরে যমুনা বইছে। তথ্য বলছে, চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছিল যমুনার জলস্তর। ৫০ বছরের রেকর্ডকে ভেঙে দিয়েছিল যমুনা। ছুঁয়ে ফেলেছিল ২০৮.৬৬ মিটার। বিপদসীমার (Flood in North India) থেকে তিন মিটার বেশি। তবে সূত্রের খবর, সামান্য কিছুটা পরিবর্তন হতে দেখা গিয়েছে শুক্রবার। জলস্তর এখন ২০৭.৯৮ মিটার। এদিকে রাস্তাঘাট জলমগ্ন হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। নীচু জায়গায় বসবাস করেন, এমন হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লির মুকুন্দপুর চকে চলছে মেট্রোর কাজ। স্থানীয়দের দাবি, বানের জলের তোড়ে শুক্রবার ভেসে গিয়েছে তিন শিশু। নিখিল, পীযুষ ও আশিস নামে তিন নাবালকের ভেসে যাওয়ার খবর সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় পুরো এলাকায়। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে এই পুরো ঘটনা অস্বীকার করা হয়েছে। রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। ওই জায়গা ঘিরে দেওয়া হয়েছে, যাতে কেউ প্রবেশ করতে না পারে।
জানা গিয়েছে, বর্তমানে বন্যা (Flood in North India) মোকাবিলায় দিল্লিতে কাজ করছে ১৬টি এনডিআরএফ-এর টিম। সূত্রের খবর, দিল্লির কমলা নগর, কালকাজি, পটেল নগর, শাস্ত্রী নগর, গোবিন্দপুরীর মতো একাধিক জায়গায় জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হাওয়া অফিস বলছে, আগামী ৪-৫ দিনও দিল্লিতে আরও ভারী বৃষ্টি হবে। ১৭ ও ১৮ জুলাই বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। দিল্লির এমন বন্যা পরিস্থিতি শুধুমাত্র বৃষ্টির জলে নয়, অন্য রাজ্য থেকে জল ছাড়ার ফলেই এই অবস্থা বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।