RSS: মোদি মন্ত্রিসভায় কেরলের কুরিয়েন, এই খ্রিস্টানের আরএসএস যোগ কেমন জানেন?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দলের জন্য যাঁরা প্রাণপাত করেছেন, তাঁদের স্বীকৃতি দিয়েছেন ইনিই। ফাইল ছবি।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তিনি খ্রিস্টান, সংখ্যালঘু। ঠাঁই হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় মন্ত্রিসভায়। সংখ্যালঘু জর্জ কুরিয়েনের সঙ্গে আরএসএসের সম্পর্ক নিবিড় (Kerala BJP)। ১৯৮০ সালে কেরলের কোয়েট্টামে পদসঞ্চালন (রুটমার্চ) করে চমকে দিয়েছিল আরএসএস। এই পদ সঞ্চালন কর্মসূচির উদ্যোক্তা ছিলেন মূলত তিনজন খ্রিস্টান। এঁরা হলেন বিজেপি নেতা তথা দলের স্টেট ভাইস প্রেসিডেন্ট ওএম ম্যাথিউ, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টরিক্যাল রিসার্চের ডক্টর সিআই আইজ্যাক এবং তরুণ বিজেপি নেতা জর্জ কুরিয়েন।
কোয়েট্টামের বেসিলিয়স কলেজে পড়াতেন ম্যাথিউ (Kerala BJP)। এখানকারই সিএমএস কলেজে অধ্যাপনা করতেন আইজ্যাক। সেই সময় জর্জ ছিলেন যুব মোর্চার নেতা। আটের দশকে কেউ আরএসএসে যোগ দিলে সমাজ তাঁকে ঘৃণার চোখে দেখতেন। সেই সময়ই কোয়েট্টামের রাস্তায় রুটমার্চ করে চমকে দিয়েছিলেন তিন খ্রিস্টান মুখ। আরএসএসের সঙ্গে এই তিন ব্যক্তির নাড়ির সংযোগ। সমাজের উল্টো স্রোতে হাঁটায় নানা ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁদের। হতে হয়েছিল হয়রানির শিকারও। তার পরেও আরএসএস-সঙ্গ ছাড়েননি এই ত্রয়ী।
১৯৮২ সালে তৎকালীন আরএসএস নেতা কুম্মানাম রাজশেখরনের নেতৃত্বে নীলাক্কালে যে বিদ্রোহ হয়েছিল, তাতে যোগ দিয়েছিলেন ম্যাথিউ। যার জেরে চার্চের রোষের মুখে পড়েছিলেন এই খ্রিস্টান মানুষটি। খ্রিস্টান হয়েও আরএসএস সঙ্গ করায় আটকে গিয়েছিল তাঁর প্রমোশন। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কলেজের প্রিন্সিপাল করা হয়নি তাঁকে। দেশপ্রেমিক আইজ্যাক ছিলেন ইতিহাসের প্রতিষ্ঠিত অধ্যাপক। ইতিহাসের যেসব ‘ভুল’ এবং ‘বিকৃত’ তথ্য শেখানো হত ছাত্রছাত্রীদের, সেই ভুল শুধরে সত্য ঘটনা তুলে ধরতেন ছাত্রছাত্রীদের সামনে। বিজেপির কেরলের ভারতীয় বিচার কেন্দ্রের অংশ ছিলেন তিনি। ইউপিএ জমানায় প্রাপ্য সম্মান পাননি এই প্রতিথযশা অধ্যাপক। ২০২৩ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে নরেন্দ্র মোদির সরকার।
এই দু’জনের তুলনায় বয়সে অনেকটাই ছোট কুরিয়েন। ১৯৮০ সালে বিজেপি গঠিত হওয়ার পর থেকে তিনি রয়েছেন পদ্ম শিবিরের সঙ্গেই। বিজ্ঞানে স্নাতক। গ্র্যাজুয়েশন করেন আইনেও। পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করেন হিউম্যানিটিজে। বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক, সহ সভাপতি, রাজ্য মুখপাত্র, ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ সদস্য, জাতীয় সহ সভাপতি, ভারতীয় জনতা যুবমোর্চার সাধারণ সম্পাদক, সংখ্যালঘু মোর্চার জাতীয় সাধারণ সম্পাদক, ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক, এডুকেশন সোস্যাইটির সেক্রেটারি এবং ফাইন আর্টসের সেক্রেটারিও ছিলেন তিনি। এহেন কুরিয়েনকেই মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দিয়ে কার্যত সংগঠনের জন্য তাঁর ত্যাগকেই স্বীকৃতি দিলেন (Kerala BJP) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।