পাওয়ার, ফারুকের পর গোপালকৃষ্ণ গান্ধীও ফেরালেন মমতার প্রস্তাব
পাওয়ার, ফারুকের পর গোপালকৃষ্ণ গান্ধীও ফেরালেন মমতার প্রস্তাব
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: একে একে তিন, মমতা (Mamata) বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিন পছন্দের প্রার্থীই মুখ ফেরালেন। শরদ পাওয়ার (Sharad Pawar), ফারুক আবদুল্লার (Farooq Abdullah) পর এবার গোপালকৃষ্ণ গান্ধী (Gopalkrisna Gandhi) । এক বিবৃতিতে, মমতার তৃতীয় পছন্দের নেতা একদা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জানান, "বিরোধীদের এমন একজনের প্রার্থী হওয়া উচিত যিনি জাতীয় সহমতের ও বিরোধীদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচিত হবেন। আমার মনে হয়, (আমার) থেকেও আরও কেউ এই কাজটা ভাল করতে পারবেন।" ঘুরিয়ে নয় সরাসরিই গোপালকৃষ্ণ বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি সব বিরোধীর পছন্দের নাম নন! শুধুমাত্র মমতার পছন্দের নাম।
দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবের প্রথম বৈঠকেই রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী (President Election) হিসেবে এনসিপি (NCP) নেতা শরদ পাওয়ারের নামোল্লেখ করেন মমতা। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি পিছিয়ে আসেন। মমতার বাঁদিকে বসে নিজের অনিচ্ছার কথা জানিয়ে দেন বৈঠকেই। এরপরই মমতা তার নিজের স্টাইলে অন্য কারো সঙ্গে কোনরকম আলোচনা ছাড়াই সামনে তুলে আনেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লার নাম। মমতার ডানদিকে তখন বসে মেহবুবা মুফতি। দীর্ঘদিনের পরিণত রাজনীতিবিদ ফারুক ফিরিয়ে দেন মমতার প্রস্তাব। একেবারে শেষ পর্বে মমতা আবার সংবাদবাজারে ছড়ান গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর নাম। তিনি সময় চেয়েছিলেন ভাববার। সোমবার মমতার সে প্রস্তাবও খারিজ করে দিলেন,পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী।
এমন এক সময়ে গোপালকৃষ্ণ গান্ধী তাঁর মতামত জানালেন, ঠিক তার পরদিনই বিরোধী ঐক্যমতের রাষ্ট্রপতির নাম ঠিক করার দ্বিতীয় বৈঠক হওয়ার কথা। সে বৈঠক ডেকেছেন শরদ পাওয়ার। সেই কারণে ঐ বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না মমতা। নিজে গুরুত্ব না পাওয়ায়, ২০১২-র মুকুল রায়কে পাঠিয়েছিলেন। এবার যাচ্ছেন মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। যাকে ইতিমধ্যেই কয়লা, সোনা সহ একাধিক মামলায় সিবিআই-এ হাজিরা দিতে হয়েছে। ফলে স্বাভাবিক কারণেই অভিষেকের বক্তব্য বিরোধী নেতাদের কাছে আদৌ ওজনদার হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।
গত ১৫ জুন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের সহমতের প্রার্থী ঠিক করতে বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 'মর্নিং শোজ দ্য ডে'র মত প্রথম বৈঠকেই বিরোধী শিবিরের ছন্নছাড়া দশা প্রকট হয়েছিল। যে বাইশটি দলের নেতাদের ডাকা হয়েছিল শুরুর বৈঠকেই ৫টি দল অনুপস্থিত ছিল। আপ, টিআরএস, টিডিপি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, বিজু জনতা দল যোগ দেয়নি। বাকি যে দুটি দলকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল তাঁরা বিজেপি নেতৃত্বে এনডিএ-র (NDA) সঙ্গে আছে। স্বাভাবিক কারণে তারাও আসেনি বৈঠকে। একতরফা বৈঠক ডাকায় তখন বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই তাঁদের প্রথম শ্রেণীর প্রতিনিধিদের পাঠায়নি। মাধ্যম তখনই বলেছিল, মমতার আরেক ফ্লপ শোয়ের সাক্ষী থাকল দিল্লি।
দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে বৈঠকের আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজস্ব স্টাইলে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন যশোবন্ত সিনহার নাম। বুঝতে চাইছিলেন বিজেপি (BJP) ভেঙে তৃণমূলে (TMC) যোগ দেওয়া যশোবন্তকে কিভাবে নেন বিরোধী নেতারা। সেই অঙ্কও মেলেনি। গোপালকৃষ্ণের সময় নেওয়ার সময়েই বোঝা গেছিল জল মাপতে চাইছেন তিনি। অন্য কোন বিরোধী রাজনৈতিক দল তার নাম নিয়ে উৎসাহ না দেখানোয় অবশেষে ফিরিয়ে নিলেন নিজেকে। ঠিক যেভাবে নিজে বৈঠক ডাকার সুযোগ না পাওয়ায় মঙ্গলবার বিরোধীদের দ্বিতীয় বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না মমতা।