জঙ্গির পায়ে যন্ত্রের বেড়ি! কী এই 'জিপিএস ট্র্যাকার অ্যাঙ্কলেট'?
জঙ্গির পায়ে পরানো হচ্ছে 'জিপিএস ট্র্যাকার অ্যাঙ্কলেট' (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবার জঙ্গিদের গতিবিধি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে! সাধারণভাবে জিপিএস সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই নির্ণয় করা যায় কোনও বস্তুর অবস্থান এবং গতিবিধি। এবার এই সিস্টেমকে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করল জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ, তাও আবার সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ দমনের ক্ষেত্রে। জামিনে মুক্তি পাওয়া এক জঙ্গির গতিবিধির উপর নজর রাখার জন্য তার পায়ে পরানো হল 'জিপিএস ট্র্যাকার অ্যাঙ্কলেট' (GPS Anklet)।
আদতে 'জিপিএস ট্র্যাকার অ্যাঙ্কলেট' (GPS Anklet) হল অনেকটা নুপূরের মতো। পায়ের গোড়ালিতে তা পরিয়ে দেওয়া হয়। এই যন্ত্রের সাহায্যে খুব সহজেই নির্ণয় করা যায় ওই ব্যক্তি কোথায় যাচ্ছে? কী তার গতিবিধি রয়েছে? ইত্যাদি। কোনও ব্যক্তি যদি এটা খুলে ফেলতে চায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সংকেত চলে আসে পুলিশের কাছে। যে স্থানে সে এটা খুলছে, সেই অবস্থানও জানতে পারে পুলিশ। জামিনে মুক্তি পাওয়া গুলাম মহম্মদ ভাটের পায়ে শনিবারই জিপিএস পরিয়েছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। আগামী দিনে এই যন্ত্রের আরও ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে ভূ-স্বর্গের প্রশাসন। ভারতে এই যন্ত্র প্রথমবারের জন্য ব্যবহার করা হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মতো দেশে জামিনে মুক্ত আসামিদের কিংবা গৃহবন্দীদের গতিবিধির উপর নজর রাখতে জিপিএস সিস্টেম (GPS Anklet) ব্যবহার করা হয়।
জানা গিয়েছে, জঙ্গি গুলাম মহম্মদ ভাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, সন্ত্রাসবাদীদের আড়াই লাখ টাকা তহবিল দেওয়ার। সেই টাকা দিতে যাওয়ার আগেই অবশ্য গ্রেফতার করা হয় গুলাম মহম্মদকে। তার বিরুদ্ধে ইউএপিএ-এর বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে তার যোগসূত্রের প্রমাণও মিলেছে। জানা গিয়েছে, গুলাম মহম্মদ সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ছিল নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের। ওই সংগঠনের নির্দেশেই সে সন্ত্রাসবাদকে ফান্ডিং করত বলে অভিযোগ। সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ এবং নাশকতার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দিল্লির পাতিয়ালা হাউসের এনআইএ আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। এরপর গুলাম মহম্মদ জামিনের আবেদন করে। সেই মামলার শুনানি মুলতবি থাকাকালীন সে অন্তবর্তী জামিনে মুক্তি চায়। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে। তবে শনিবার তাকে মুক্তি দেওয়ার সময়ই 'জিপিএস ট্র্যাকার অ্যাঙ্কলেট' (GPS Anklet) পরিয়ে দেওয়া হয়েছে তার পায়ে।
জম্মু-কাশ্মীরের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় পুলিশ আধিকারিক জানাচ্ছেন, সম্প্রতি এনআইএ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, ইউএপিএ আইনে জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর শর্তাবলী আরোপ করার। মুক্তির পরেও জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের উপর কড়া নজর রাখা উচিত বলে পর্যবেক্ষণে জানায় আদালত। তারপর এনআইএ আদালতের নির্দেশেই অভিযুক্তের পায়ে জিপিএস পরানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশে জঙ্গি দমনে নতুন প্রযুক্তির (GPS Anklet) ব্যবহার দেখা গেল।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।