Marital Rape: বৈবাহিক ধর্ষণও ধর্ষণই! গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ গুজরাট হাইকোর্টের
স্বামী করলেও ধর্ষণ, ধর্ষণই মত গুজরাট হাইকোর্টের।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতের আইন এখনও পর্যন্ত বৈবাহিক ধর্ষণকে (Marital Rape) ধর্ষণ হিসেবে মান্যতা দেয়নি। এ সংক্রান্ত বহু মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তারই মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ এল গুজরাট হাইকোর্ট (Gujarat High Court) থেকে। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, স্বামী যদি তাঁর স্ত্রী'কে ধর্ষণ করেন, তাহলে সেটা ধর্ষণ বলেই বিবেচিত হবে। গুজরাট হাইকোর্ট ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারার অধীনে বৈবাহিক ধর্ষণের ব্যতিক্রমের সঙ্গে সহমত পোষণ করেনি।
গুজরাট হাইকোর্টের (Gujarat High Court) বিচারপতি দিব্যেশ যোশীর পর্যবেক্ষণ, সারা দেশে নারী নির্যাতনের যত অভিযোগ নথিভুক্ত হয়, তার থেকে আসল সংখ্যাটা অনেক বেশি। মহিলাদের হিংসা সয়ে যেতে হয়, এমনকী অত্যাচারের পরিবেশে থেকেও যেতে হয়। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, মহিলাদের প্রতি কুদৃষ্টি দেওয়া, নানারকম মৌখিক ও শারীরিক হেনস্থাকে ছোটখাটো অপরাধ হিসেবে দেখে সমাজ। এমনকী সিনেমার মতো জনপ্রিয় গণমাধ্যমে এই বিষয়গুলিকে তুচ্ছ করে বা স্বাভাবিক হিসেবেই দেখানো হয়ে থাকে, সেগুলিকে রোম্যান্টিক বিষয় হিসেবেও দেখানো হয় । এটা সত্যিই অনুশোচনা করার মতো বিষয়।
যে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই পর্যবেক্ষণ তা হল, পূত্রবধূকে ক্রমাগত নির্যাতন করা ও ভয় দেখানোর অভিযোগে এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, তার ছেলে ও স্বামী মিলে পুত্রবধূকে ধর্ষণ করত ও সেই ভিডিও তুলে পর্ণোগ্রাফির সাইটে পোস্ট করে টাকাও রোজগার করত তারা। আর পুরো ঘটনায় সামিল ছিল ওই মহিলাও। নির্যাতিতাকে ভয় দেখানো, অত্যাচার করা, কিছুই করতে বাদ রাখেনি সে। এই মামলায় জামিনের আবেদন করে অভিযুক্ত শাশুড়ি। তার জামিনের আর্জি নাকচ করে দেয় আদালত ও এই পর্যবেক্ষণ সামনে রাখেন বিচারপতি।
শুনানিতে গুজরাট হাইকোর্টের (Gujarat High Court) বিচারপতি দিব্যেশ এ জোশী বৈবাহিক ধর্ষণের (Marital Rape) যুক্তি দিতে গিয়ে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটেনের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি বলেন, আমেরিকার ৫০টি রাজ্য, অস্ট্রেলিয়ার ৩টি রাজ্য এবং অন্যান্য অনেক দেশে বৈবাহিক ধর্ষণ বেআইনি। অর্থাৎ এটি হল অপরাধ। আদালত বলেছে, সংবিধান একজন নারীকে একজন পুরুষের সমান বলেই বিবেচনা করে এবং বিবাহকে সমতুল্যতার একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করে। যৌন হিংসার ঘটনার ক্ষেত্রে নীরবতা ভাঙা প্রয়োজন, এবং সেক্ষেত্রে মহিলাদের থেকেও পুরুষদের বেশি এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করে আদালত। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, "ধর্ষণের মতো ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক হল যে পুরুষটি যদি স্বামী হয়, তাহলে সে অন্য পুরুষের মতো একই কাজ করলেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কিন্তু আমার মনে হয় সেটা ভুল। একজন পুরুষ পুরুষই, ধর্ষণও ধর্ষণই, সেটা যদি স্বামী স্ত্রীর উপর করে থাকে তাহলেও তা বদলাবে না," জানিয়েছেন বিচারপতি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।