Assam: বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে 'নিজুত ময়না' প্রকল্প চালু করলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী, কী এটা জানেন?
হিমন্ত বিশ্বশর্মা (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে অভিনব উদ্যোগ নিল অসম সরকার। উচ্চ শিক্ষা নেওয়া মেয়েদের মাসিক উপবৃত্তি ঘোষণা করলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma)। সরকারি-চালিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে উচ্চ মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্রীদের জন্য মাসিক আর্থিক সহায়তা দিতে নতুন প্রকল্প চালু করল অসম সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma) বলেন, "নতুন প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে 'নিজুত ময়না'। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে এই গঠনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। অসম পুলিশ বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে দুটি বড় অভিযান চালিয়ে ৪ হাজার জনেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনার এক বছর পর এই প্রকল্প চালু করা হল। এই প্রকল্পটি সকলের জন্য করা হয়েছে। তবে, যারা এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে চান না, তারা স্বেচ্ছায় এই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন।"
আরও পড়ুন: আজ দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে নাগ পঞ্চমী, জানুন পৌরাণিক কাহিনী
অসম (Assam) সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের অধীনে শিক্ষাবর্ষের ১০ মাস ছাত্রীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। উচ্চ মাধ্যমিকের একজন ছাত্রী ১০ মাসের জন্য প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে পাবেন। স্নাতক স্তরে একজন ছাত্রী প্রতি মাসে ১২৫০ টাকা এবং স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্রী ১০ মাসের জন্য প্রতি মাসে ২৫০০ টাকা পাবে। এই প্রকল্পের সুবিধাগুলি প্রাথমিকভাবে ছাত্রীদের প্রথম বছরের জন্য হবে। এই প্রকল্পের দুটি শর্ত রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীর উপস্থিতি এবং তার "চরিত্র"-এর রেকর্ড বজায় রাখতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে বা স্নাতক স্তরে থাকাকালীন বিবাহিত মেয়েদের জন্য বা মন্ত্রী, বিধায়ক এবং সাংসদদের কন্যাদের ক্ষেত্রে এই প্রকল্পটি প্রযোজ্য হবে না। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে প্রথম বিভাগ পাওয়ার জন্য যারা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে স্কুটার পাবেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য হবে না।
জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, অসমে (Assam) ৩১.৮ শতাংশ মেয়ে ২০-২৪ বছর বয়সের মধ্যে মা হয়েছেন। তার মানে তাঁদের বিয়ে হয়েছে ১৮ বছরের আগে। মূলত ৩০ শতাংশ মেয়ের ১৮ থেকে ২১ বছরের মধ্যে বিয়ে হয়। ফলে তাঁরা অপুষ্টিতে ভোগেন। শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হন এবং পারিবারিক হিংসার শিকার হন। মধ্য ও নিম্ন অসমে বাল্যবিবাহ সবচেয়ে বেশি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন,"দক্ষিণ সালমারা এবং ধুবরি জেলায় ৫০ শতাংশেরও বেশি মেয়ের ১৮ বছরের মধ্যে বিয়ে হয়ে যায়। আমরা প্রায়ই দেখি যে তারা ১২-১৩ বছরের মধ্যে মা হয়ে যায়। আমরা বিশ্বাস করি, বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে শিক্ষাই সবচেয়ে বড় অস্ত্র। শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে বিবাহের বয়স যদি আমরা আরও এক বা দুই বছর বাড়াতে পারি, তাহলে আমরা বাল্যবিবাহ এবং কিশোরী বয়সে গর্ভাধারণ বন্ধ করতে সক্ষম হব। সরকার ১০ লক্ষ ছাত্রীকে এই প্রকল্পের সুবিধা দিতে চায়। এই প্রকল্পে পরবর্তী চার বছরের জন্য ১৫০০ কোটি টাকা প্রস্তাবিত খরচ ধরা হয়েছে।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।