Mahua Moitra: মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল আনসন ফান্ডসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোয়েজ কাসামের স্ত্রী মারিসার...
মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল আনসন ফান্ডসের!
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাড়তি পর্যবেক্ষণের মুখে হেজ ফান্ড আনসন ফান্ডস ও হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিষ্ঠাতা নাথান অ্যান্ডারসন (Hindenburg)। তাঁদের বিরুদ্ধে বাজারে কারসাজি এবং সিকিউরিটিজ প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। আদালতের নথিপত্রে দেখা গেছে, আনসন ফান্ডস নাকি অ্যান্ডারসনের সঙ্গে একত্রে কাজ করে লক্ষ্যমাত্রাভিত্তিক শর্ট-সেলিং ক্যাম্পেইন চালিয়েছে। মার্কেট ফ্রডস ওয়েবসাইটে শেয়ার করা নথির স্ক্রিনশট থেকে জানা যায় যে, আনসন ফান্ডস হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের বিষয়বস্তু ঠিক করে দিত, যা প্রমাণ করে যে সংস্থাটি স্বাধীনভাবে গবেষণা পরিচালনা করেনি। এই ঘটনাগুলোর তদন্ত করছে মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (US SEC)-এর মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি। তাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অভিযোগ আনার প্রক্রিয়া (Mahua Moitra) চলছে।
আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্যও উঠে এসেছে। জানা যাচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং আনসন ফান্ডসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোয়েজ কাসামের স্ত্রী মারিসা সিগাল কাসামের মধ্যে যোগাযোগের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। দুজনেই আগে জেপি মর্গানে কাজ করেছেন। মহুয়া প্রায় ১২ বছর ধরে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। পরে যোগ দেন রাজনীতিতে। আর মারিসা লন্ডন, হংকং এবং নিউইয়র্কে জেপি মর্গানের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁদের এই যোগাযোগ আদানি গ্রুপের ওপর হামলার পেছনে উদ্দেশ্য এবং সম্পর্কগুলো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। প্রসঙ্গত, এর আগে ওপিইন্ডিয়া রিপোর্ট করেছিল, আদানির বিরুদ্ধে সংসদে প্রশ্ন তোলার জন্য মহুয়া মৈত্র নাকি ঘুষ নিয়েছিলেন।
অ্যানসন ফান্ডসের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলির (Hindenburg) মধ্যে সংগঠিত অপরাধের সঙ্গে যোগসূত্র এবং ম্যানিপুলেটেড স্টক মূল্য পতনের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি আদালতের নথি এবং তদন্তমূলক প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ওপিইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে অভিযুক্ত করেছেন যে তিনি ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানির কাছ থেকে নগদ অর্থ এবং উপহার গ্রহণ করেছিলেন। এর বিনিময়ে তিনি সংসদে এমন প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন, যা হিরানন্দানির ব্যবসায়িক স্বার্থকে সুবিধা করে দিয়েছিল। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, মহুয়া লোকসভায় পারাদীপ পোর্ট এবং আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে যে প্রশ্নগুলো তুলেছিলেন, সেগুলো হিরানন্দানির প্রকল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিশেষ উল্লেখযোগ্য প্রশ্নগুলোর মধ্যে ছিল পোর্ট চুক্তি, টেলিকম পরিষেবা এবং প্রাকৃতিক গ্যাস বিতরণ সম্পর্কিত বিষয়।
আরও পড়ুন: বাহিনীর গুলিতে খতম ১৪ মাওবাদী, ‘‘শেষ নিঃশ্বাস নিচ্ছে নকশালরা’’, মন্তব্য শাহের
এও অভিযোগ উঠেছে যে আদানি পরিচালিত পোর্ট এবং জ্বালানি নীতির বিষয়ে তাঁর প্রশ্নগুলো হিরানন্দানির প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায়িক স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। মহুয়া কোনও অন্যায় করার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তিনি তাঁর স্বাধীনতার কথা জানিয়েছিলেন। তবে, ওপিইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে সংসদীয় কার্যকলাপ এবং হিরানন্দানির ব্যবসায়িক স্বার্থের মধ্যে কিছু মিল পাওয়া গেছে, যা তার উদ্দেশ্য নিয়ে আরও প্রশ্ন তুলেছে। এই অভিযোগগুলির পাশাপাশি অ্যানসন ফান্ডসের সহ-প্রতিষ্ঠাতার স্ত্রী মারিসা সিগেল কাসামের সঙ্গে মৈত্রের সম্ভাব্য সংযোগ, আদানি গ্রুপকে ঘিরে আর্থিক এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
সম্প্রতি হিন্ডেনবার্গ রিসার্চে (Hindenburg) ঝাঁপ ফেলার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল সংস্থার তরফে। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা-প্রধান ন্যাথন অ্যান্ডারসন বলেছিলেন, “আমাদের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে”। তিনি জানিয়েছিলেন, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ তাঁর জীবনের একটা অধ্যায়, গোটা জীবন নয়। ভেবেচিন্তেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ন্যাথামের যুক্তি, কাজের চাপে ব্যক্তিগত জীবনে সময় দিতে পারছিলেন না। জীবনে ভারসাম্য আনতেই আপাতত সংস্থা বন্ধ করছেন। কিন্তু তাঁর হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কোনও প্রভাব কাজ করেছে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের গোড়ার দিকে কারচুপি করে শেয়ারের দর বাড়ানো এবং কর ফাঁকি-সহ বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এনেছিল মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। এ নিয়ে কেন্দ্রকে ধারাবাহিকভাবে নিশানা করেছিল বিরোধীরা। যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্তের দাবিও উঠেছিল। শেয়ার বাজারে আদানিকাণ্ডের প্রভাব খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। যদিও সেই তদন্তে আদানিদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
জানা গিয়েছে, কানাডার আদালতে পেশ হওয়া একটি নথির জেরে চাপে পড়ে যান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিষ্ঠাতা। অভিযোগ, ইচ্ছে করে ভুল রিপোর্ট তৈরি করে বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের দর (Mahua Moitra) কমাতো ন্যাথানের সংস্থা (Hindenburg)।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।