Ram Manohar Lohia Hospital: দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের ঘটনা
রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গোটা হাসপাতালই যেন দুর্নীতির আখড়া। চিকিৎসক, ল্যাব বিভাগ, হাসপাতালের কর্মচারি থেকে চিকিৎসা সরঞ্জাম সররাহকারী সংস্থার কর্মী। সকলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির (Hospital scam) অভিযোগ। এমনই দুর্নীতির মাকড়জাল সামনে এল। দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল থেকে দুই চিকিৎসক সহ মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করল সেন্ট্রাল বিউরো অফ ইনভেস্টিগেশন। বুধবার হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের আদালতে তোলা হলে ১৪ই মে পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
জানা গিয়েছে গ্রেফতার হওয়া ৯ জনের মধ্যে দুজন কার্ডিওলজি বিভাগের নাম করা চিকিৎসক। তাদের নাম অজয় রাজ এবং পার্বতাগৌড়া চেনাপ্পাগৌড়া। এছাড়াও ভুবল জয়সওয়াল (ক্লার্ক), সঞ্জয় কুমার (ক্লার্ক), রজনীশ কুমার (ক্যাথ ল্যাব ইঞ্চার্জ), বিকাশ কুমার(দালাল), নরেশ নাগপাল (চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহকারী), ভরত সিং ((চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহকারী), আবরার আহমদকে (চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহকারী) গ্রেফতার করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর মোট ১১ জন ব্যক্তি ও চারটি সংস্থার নামে এফআইআর হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন ৬ জন হাসপাতালে কর্মী, একজন মধ্যস্থতাকারী ও চারজন চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহকারী। এরা সকলের হাসপাতালে তোলাবাজির (Hospital scam) রাজত্ব কায়েম করেছিলেন বলে অভিযোগ। চিকিৎসকরা ও হাসপাতালের ল্যাব বিভাগের কর্মীরা ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহকারীদয়ের কাছ থেকে অনৈতিক উপায়ে টাকা আদায় করছিলেন বলে অভিযোগ। অন্যদিকে হাসপাতালের কর্মীরা রোগীদের কাছ থেকে বিভিন্ন সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তোলা আদায় থেকে শুরু করে অনেকক্ষেত্রে ভয় দেখিয়ে টাকা তুলছিলেন বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রে নার্সদেরও যুক্ত থাকার অভিযোগ পেয়েছে সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা।
অজয় রাজ এবং পার্বতাগৌড়া বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তিনি স্টেন্ট সরবরাহ সংস্থার কাছ থেকে টাকা নিয়ে নির্দিষ্ট কোম্পানির স্টেন্ট কেনার জন্য রোগীদের পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করতেন। হৃদরোগে অস্ত্রোপচারে স্টেন্টের প্রয়োজন হয়। প্রসঙ্গত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় হৃদরোগে আক্রন্ত হলে তাঁর হৃদযন্ত্রে স্টেন্ট বসানো হয়েছিল। অভিযুক্ত দুই হৃদরোগ বিষেষজ্ঞ চিকিৎসক ঘুষ নিয়ে নির্দিষ্ট কোম্পানির সরঞ্জাম ব্যবহার করার জন্য রোগীর পরিবারের উপর চাপ দিতেন। সিবিআই সূত্রে খবর পার্বতাগৌড়া আহমেদ নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল ঘুষ বাবদ ২লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা প্রদেয় অর্থ গরমের ছুটিতে ইউরোপ টুরে যাওয়ার আগে দিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এর আগে আহমেদ নামে ঐ ব্যক্তি ওই চিকিৎসকের পিতা বসন্ত গৌড়ার কাছে ১ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা নগদ দিয়েছিল। এফআইআরে কথা উল্লেখ আছে যে কার্ডিয়োলজিস্ট অজয় রাজকে ভারতী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এর তরফ থেকে ভরত সিং দালাল বেশ কয়েক দফায় লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। এমনকি হাসপাতালের কেরানি সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে সে ভুয়ো মেডিকেল সার্টিফিকেট বিক্রি করত। বিভিন্ন সংস্থায় ছুটির আবেদন কিংবা অফিসিয়াল দরকারে যাদের মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রয়োজন হত তাঁদের কাছ টাকা থেকে ভুয়ো মেডিকেল সার্টিফিকেট দেওয়া হত। প্রয়োজন বুঝে মোতা টাকাও আদায় হত বলে অভিযোগ। এভাবে বাজার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা সঞ্জয় তুলেছিল।
রোগীদের কাছ থেকে চলত তোলা আদায় (Hospital scam)
শুধু তাই নয় রোগীদেরকে ভয় দেখিয়েও রীতিমত চলত তোলা আদায়(Hospital scam) । জানা গিয়েছে ভুবল জয়সওয়াল নামে এক কেরানি এবং শালু নামে এক নার্সও তোলাবাজির ঘটনায় (Hospital scam) জড়িত বলে অভিযোগ। তাঁরা এক অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও তাঁর স্বামীকে ভয় দেখিয়ে ২০ হাজার টাকা আদায় করেছিল অভিযোগ ওঠে ওই ব্যক্তিকে ভয় দেখানো হয় যদি কুড়ি হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। ওই ব্যক্তিকে বলা হয় টাকা না দিলে তাঁর স্ত্রীকে হাসপাতাল থেকে ছুঁড়ে ফেলা হবে। ভয় পেয়ে ওই ব্যক্তি অনলাইনের মাধ্যমে ভুবলকে কুড়ি হাজার টাকায় ইউপিআই পেমেন্ট করেন। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে চিকিৎসকদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট এবং অতিরিক্ত সুবিধায় পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তোলা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালে দুর্নীতি এখানেই সীমিত ছিল না হাসপাতালে ল্যাবরেটরি বিভাগের রজনিশ কুমার এবং আব্রার আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা বেশ কয়েকটি কোম্পানির সরঞ্জাম রোগীদের সুপারিশ করার নাম করে ঘুষ নিত।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।