মণিপুর হিংসার জেরেই কি শরণার্থীদের কাছ থেকে এবার ‘বায়োমেট্রিক’ তথ্য সংগ্রহ করবে সরকার?
ভারত-মায়ানমার সীমান্ত।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মায়ানমার থেকে ভারতে প্রবেশ করা শরণার্থীদের কাছ থেকে এবার ‘বায়োমেট্রিক’ তথ্য সংগ্রহ করবে সরকার। বায়োমেট্রিক হল মানুষের শারীরিক বা আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে শনাক্তকরণ পদ্ধতি। মূলত আঙুলের ছাপ, মুখ, আইরিস, কন্ঠস্বর, ডিএনএ, হাতের ছাপ এবং স্বাক্ষর দিয়ে বায়োমেট্রিক করা হয়। মেইতেই-কুকি সংঘর্ষে আগুন জ্বলছে মণিপুর জুড়ে। এরই মধ্যে, ভারত-মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে অন্তত ৭১৮ জন শরণার্থী মায়ানমার থেকে মণিপুরে প্রবেশ করেছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছিল অসম রাইফেলস। সেই আবহেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়ানমার থেকে আগত শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক তথ্য থেকে বিশেষ একটি তালিকা তৈরি করা হবে। সেই তালিকা ঠিক করা দেবে, কাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে এবং কাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। পাশাপাশি ভারত-মায়ানমার সীমান্তে বেড়া দেওয়ার কাজও জোর কদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত, মণিপুর-মিজোরাম সীমানার প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা বেড়া দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। সীমানায় বেড়া তৈরির দায়িত্ব যে সংস্থাগুলিকে দেওয়া হয়েছে, তাদের যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে।
আরও পড়ুুন: “কৃষ্ণ-রুক্মিণীর বিয়ে লাভ জিহাদ”! কংগ্রেস নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের কী জবাব দিলেন হিমন্ত?
মেইতেই সম্প্রদায়ভুক্তেরা বহু দিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে যে, কুকিরা মায়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে অবৈধভাবে সে রাজ্যে অনুপ্রবেশ করছে এবং মণিপুরের বনাঞ্চলে বসতি তৈরি করছে। আর তাই জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বাস্তবায়নের দাবিতেও তাদের বেশ কয়েকটি সংগঠন চলতি বছরের মার্চ মাসে দিল্লির যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছিল। সম্প্রতি, মণিপুরের চান্দেল জেলার ডেপুটি কমিশনারকে অসম রাইফেলস জানিয়েছে, ২২ এবং ২৩ জুলাই – এই দুই দিনের মধ্যেই বিপুল পরিমাণ শরণার্থী প্রবেশ করেছে মণিপুরে। মণিপুরের মতো, বর্তমানে সংঘর্ষ চলছে সীমান্তের ওই পাড়ের মায়ানমারেও। বর্তমানে, সীমান্তবর্তী খাম্পাতে সেনার সঙ্গে মায়ানমারের বিদ্রোহী যোদ্ধাদের তীব্র লড়াই চলছে। সেই সংঘর্ষ এড়াতেই, মায়ানমার থেকে দলে দলে মানুষ চান্দেল জেলার মধ্য দিয়ে মণিপুরে অনুপ্রবেশ করছে। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং এর সরকারও জানিয়েছিল, জুলাই মাসে মায়ানমার থেকে ৭০০-রও বেশি মানুষ অবৈধ ভাবে সে রাজ্যে অনুপ্রবেশ করেছেন। মণিপুরের সরকার আরও জানিয়েছিল, রাজ্যের বর্তমান আইনশৃঙ্খলার কথা মাথা রেখে অনুপ্রবেশের ঘটনাগুলিতে অত্যন্ত সংবেদনশীল ভাবে পদক্ষেপ করা হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।