Jake Sullivan: ভারতের সঙ্গে পরমাণু সহযোগিতা সহজতর করাই লক্ষ্য, বিধি প্রত্যাহারের কথা বলল আমেরিকা...
আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: ট্যুইটার
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পোখরানে পরমাণু পরীক্ষার জেরে যে ভারতীয় পারমাণবিক সংস্থাগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল তা প্রত্যাহার করতে চলেছে আমেরিকা। ভারত সফরে এসে মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান জানান, ভারতের প্রধান পরমাণু সংগঠন ও মার্কিন কোম্পানিগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাধাগ্রস্ত করে এমন বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করবে যুক্তরাষ্ট্র। ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের পর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (আইআইটি) সভায় দেওয়া ভাষণে জো বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা এই ঘোষণা করেছেন। সুলিভানের মতে, এই পদক্ষেপ ‘অতীতের সংঘাত’ থেকে সরে আসার একটি সুযোগ।
হোয়াইট হাউসে নেতৃত্ব বদলের প্রস্তুতির মাঝেই শেষবারের মতো ভারত সফরে এসেছেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা। সোমবার নয়াদিল্লিতে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এর পরই ভারতের জন্য পরমাণু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘শীর্ষ পারমাণবিক প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে মার্কিন সংস্থাগুলির সহযোগিতা বন্ধের যে বিধিনিষেধ ছিল তা তুলে নেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। আমার মনে হয় এই পদক্ষেপের জেরে অতীতের সমস্যা কাটিয়ে এক নয়া অধ্যায় শুরু করতে চলেছে দুই দেশ। এর ফলে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি, দুই দেশের বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদরা শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক সহযোগিতা মাধ্যমে কাজ করতে পারবেন।’’
#WATCH | Delhi: US National Security Advisor Jake Sullivan says, "...Although former President Bush and former Prime Minister Dr Manmohan Singh laid out a vision of civil nuclear cooperation nearly 20 years ago, we have yet to fully realize it. But as we work to build clean… pic.twitter.com/4hxR9WV7d9
— ANI (@ANI) January 6, 2025
১৯৯৮ সালে পোখরানের মাটির নিচে পরমাণু পরীক্ষা করেছিল ভারত। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সেই সাফল্যের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করার পর ভারতের উপর অর্থনৈতিক তো বটেই পরমাণু বিষয়ক ২০০টির বেশি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পরে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও, সংস্থাগুলির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেনি তারা। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ছিল, ‘ভাভা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার’-এর ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যাটমিক এনার্জি, ‘ইন্দিরা গান্ধী সেন্টার ফর অ্যাটমিক রিসার্চ’, ‘ইন্ডিয়ান রেয়ার আর্থ’, ‘নিউক্লিয়ার রিয়েক্টর্স’-এর মতো সংস্থাগুলি।
অবশেষে পরমাণু পরীক্ষার ২৬ বছর পর এবার জেদ ছেড়ে পিছু হঠল আমেরিকা। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে পরমাণু শক্তি উৎপন্নের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিল ওয়াশিংটন। আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত ভারতের জন্য ভালো খবর তো বটেই, পাশাপাশি পরমাণু ক্ষেত্রে দুই দেশ ভবিষ্যতে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের সুবিধা পাবেন ভারতের অসামরিক একাধিক পারমাণবিক পরীক্ষা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান। ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত: অভিন্ন ভবিষ্যৎ নির্মাণ’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুলিভান এই বিধিমালা অপসারণের পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ বলে বর্ণনা করেছেন।
The US is set to remove long standing regulations that have hindered civil nuclear co-operation between Indian nuclear entities & US cos. National Security Advisor Jake Sullivan made the announcement on his visit to India, describing it as a significant step in advancing the… pic.twitter.com/5z9AJA9Sx8
— CNBC-TV18 (@CNBCTV18News) January 6, 2025
২০০৫ সালের জুলাই মাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লু বুশের মধ্যে বৈঠকের সময় ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অসামরিক পারমাণবিক সহযোগিতার জন্য একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা উন্মোচন করেছিল। ২০০৮ সালে ভারত-মার্কিন অসামরিক পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, কিন্তু নিয়ন্ত্রক বাধার কারণে ভারতকে মার্কিন পরমাণু চুল্লি সরবরাহের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। সুলিভান জানান, ভারত ও আমেরিকার মধ্য শীঘ্রই এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কাগজপত্র স্বাক্ষর করা হবে।
National Security Advisor of India Shri Ajit Doval met with U.S. National Security Advisor Mr Jake Sullivan in New Delhi on 6 January 2025... NSA Jake Sullivan briefed the Indian side on the updates brought out by the Biden administration to U.S. missile export control policies… pic.twitter.com/uqhQF7FZhQ
— ANI (@ANI) January 7, 2025
সুলিভান বলেন, বাইডেন প্রশাসন ‘সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে মার্কিন-ভারত অংশীদারিত্বকে দৃঢ় করার পরবর্তী বড় পদক্ষেপ করার সময় এসেছে। কৌশলগত অংশীদার হিসেবে এবং শান্তিপূর্ণ পরমাণু সহযোগিতার অঙ্গীকারবদ্ধ দেশ হিসেবে আমরা যে অগ্রগতি অর্জন করেছি এবং যে অগ্রগতি অব্যাহত রাখব তার প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ এটি। এটি চার বছর ধরে আমাদের প্রশাসনের সঙ্গে ভারতের উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ সম্পর্কের ফলাফল, যা আমাদের একসঙ্গে এই নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে সক্ষম করেছে।’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।