Rampage Missile: সাম্প্রতিককালে, ইরানের মাটিতে যে মিসাইল ব্যবহার করেছে ইজরায়েল, সেই ক্ষেপণাস্ত্রই এবার চলে এল ভারতের হাতে...
‘র্যাম্পেজ’ মিসাইল। ছবি— সংগৃহীত।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ক্ষেপণাস্ত্রের সম্ভারে আরও শক্তিবৃদ্ধি হল ভারতীয় বায়ুসেনা (Indian Air Force) ও নৌসেনার। ভারতের হাতে চলে এল দূরপাল্লার আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য সুপারসনিক ‘র্যাম্পেজ’ মিসাইল (Rampage Missile)। সদ্য এই মিসাইল ব্যবহারের উদাহরণ রেখেছে ইজরায়েলি বায়ুসেনা। ইরানের টার্গেটে তাক করার সময় এই ব়্যাম্পেজ মিসাইলকে তারা ব্যবহার করেছে। এবার সেই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের হাতেও।
র্যাম্পেজ মিসাইলটি তৈরি করেছে ইজরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ইজরায়েলি মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। মার্ক-২ প্রজন্মের ২৫০ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রটি একদিকে যেমন উচ্চগতি সম্পন্ন, ঠিক তেমনভাবে কাজেও অত্যন্ত পারদর্শী (Rampage Missile)। সামরিক পরিভাষায় একে বলা হয়— ‘হাই-স্পিড লো ড্র্যাগ’। এই মিসাইলের বিশেষত্ব হল— এটি জিপিএস/আইএনএস নেভিগেশন সিস্টেম অনুসরণ করতে সক্ষম। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি থাকায় শত্রুর জ্যামারেও এর কোনও ক্ষতি হয় না। ক্ষেপণাস্ত্রটি নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকে। সর্বোপরি, যে কোনও প্রতিকূল আবহাওয়ায় এটি সমান কার্যকর।
বায়ুসেনা (Indian Air Force) সূত্রে খবর, বাহিনীর প্রধান রুশ-নির্মিত সুখোই-৩০এমকেআই যুদ্ধবিমানে এই অত্যাধুনিক মিসাইলকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, বায়ুসেনার মিগ-২৯ ও জাগুয়ার যুদ্ধবিমানেও এই ক্ষেপণাস্ত্রের অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। একইভাবে, নৌসেনায় ব্যবহৃত মিগ-২৯কে যুদ্ধবিমানেও এই মিসাইল (Rampage Missile) ফিট করে দেওয়া হয়ে গিয়েছে। এর ফলে, এখন থেকে কমিউনিকেশন সেন্টার (সামরিক তথ্যের আদানপ্রদান কেন্দ্র), রেডার স্টেশন, বায়ুসেনা ঘাঁটি সহ শত্রুর গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিকে অতি সহজেই টার্গেট করতে পারবে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলি।
২০২০ সালে চিনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘাতের পর— অত্যাবশ্যকীয়, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল অস্ত্র-সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীকে জরুরি ক্ষমতা প্রদান করেছিল প্রতিরক্ষামন্ত্রক। তার ওপর ভিত্তি করেই এই র্যাম্পেজ মিসাইলগুলি কিনেছে বায়ুসেনা (Indian Air Force) ও নৌসেনার এভিয়েশন বিভাগ। সূত্রের খবর, বর্তমানে ব্যবহৃত ‘স্পাইস-২০০০’ ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় অধিক দূরের লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করতে সক্ষম র্যাম্পেজ (Rampage Missile)। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, ২০১৯ সালে বালাকোট এয়ার স্ট্রাইকের সময় স্পাইস-২০০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল ভারতীয় বায়ুসেনা।
সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমানগুলির আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়া বেশ কিছুদিন ধরেই শুরু করেছে বায়ুসেনা (Indian Air Force)। এই প্রক্রিয়ার অন্তর্গত রুশ-নির্মিত এই যুদ্ধবিমানগুলির অস্ত্রসম্ভার ও বহন করার ক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ এই যুদ্ধবিমানে মোতায়েন করে এর জীবনকাল ও ক্ষিপ্রতা এবং মারণক্ষমতা — সব উন্নত করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার অন্তর্গত সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বিশ্বের সেরা ৪০০ কিমি পাল্লার ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও। এটিও আকাশ থেকে ভূমি ক্ষেপণাস্ত্র। এবার তার জুড়ি হিসেবে যোগ দিল র্যাম্পেজ (Rampage Missile)। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে ভারতেও যাতে এই ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন করা যায়, তার সম্ভাবনাও রয়েছে।
অন্যদিকে, র্যাম্পেজ মিসাইল (Rampage Missile) কেনার পাশাপাশি ভারত নিজস্ব সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিককালে, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ‘রক্স’ (ক্রিস্টাল মেজ-২) নামের এমনই একটি নতুন-প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় বায়ুসেনা (Indian Air Force)।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।