Human Spaceflight Centre: লাদাখে চালু হল ইসরোর হিউম্যান স্পেসফ্লাইট সেন্টার, মহাকাশে ভারতের মানবাভিযানের জন্য কতটা তাৎপর্যপূর্ণ?
লাদাখে ইসরোর প্রথম অ্যানালগ স্পেস মিশন। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শুক্রবার লাদাখে প্রথম অ্যানালগ স্পেস মিশন চালু করার কথা ঘোষণা করেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো (ISRO)। ইসরোর এই হিউম্যান স্পেসফ্লাইট সেন্টার (Human Spaceflight Centre) মিশনের পেছনে এএকেএ স্পেস স্টুডিও, লাদাখ বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি বম্বে এবং লাদাখের স্বশাসিত পার্বত্য উন্নয়ন কাউন্সিলের যৌথ উদ্যোগ রয়েছে। তবে বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা এই মিশন নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী বলে জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে, ইসরোর চন্দ্রযান ৩, গগনযান, আদিত্য এল-১, মঙ্গলযান অভিযানের মাধ্যমে বিশ্বের নজর কেড়ে নিয়েছে ভারত। বিশেষ করে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ল্যান্ডিং নাসাকেও চমক দিয়েছে। মহাকাশ গবেষণায় কেন্দ্রের মোদি সরকার যে সজাগ নজর রেখে চলেছে তাতেও অনেক বিজ্ঞানীরা উৎসাহী বলে জানিয়েছেন। নাসাও একাধিক গবেষণায় ইসরোকে পাশে চায় বলে অভিজ্ঞতার কথা বিনিময় করেছে। ফলে ভারত মহাকাশ গবেষণায় বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে।
ইসরোর (ISRO) পক্ষ থেকে এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে বলা হয়েছে, “লাদাখে এই হিউম্যান স্পেসফ্লাইট সেন্টারের (Human Spaceflight Centre) মিশনের মূল লক্ষ্য হল ভিন্গ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের খোঁজ করা। একই ভাবে পৃথিবীর বাইরে একটি স্পেস স্টেশন নির্মাণের জন্য সমস্যাগুলিকে চিহ্নিত করার ভাবনা রয়েছে। এই মিশন ভারতের প্রথম অ্যানালগ স্পেস মিশন, যা লে-তে শুরু হয়েছে। একই কাজে এএকেএ স্পেস স্টুডিও, লাদাখ বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি বম্বে এবং লাদাখের স্বশাসিত পার্বত্য উন্নয়ন কাউন্সিল বিশেষ ভাবে সহযোগিতা করবে।”
ইসরো (ISRO) সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মিশন হল মঙ্গল এবং চাঁদে অভিযানের মতো একটি বড় পদক্ষেপ। লাদাখের জলবায়ু, আবহাওয়া, ভূ-প্রকৃতি এবং আনুসঙ্গিক নানা উপকরণের প্রতিবন্ধকতা মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণ এবং গবেষণার জন্য অত্যন্ত সহায়ক হবে। এই জায়গার সমস্যাকে সামনে রেখে মহাকাশের নানাবিধ প্রতিরোধ সম্পর্কে গবেষণা করতে অনেক সহজ হবে। যে কোনও গবেষণায় ভীষণ উপযোগী এই লাদাখের উচ্চ ভূ-মণ্ডল। এই মিশন ভারতের গগনযান এবং ভবিষ্যতের মহাকাশ গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করবে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। লাদাখের শুষ্ক জলবায়ু, ভৌগলিক উচ্চতা এবং অনুর্বর জমির সঙ্গে অনেকটাই মিল রয়েছে মঙ্গল এবং চাঁদের ভৌগলিক ও ভূতত্ত্বের। তাই এই ধরনের অ্যানালগ গবেষণা, ভারতে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানী ডক্টর আলোক কুমার প্রথম এই ধরনের গবেষণার জন্য বিশেষ প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ঠিক তারপর থেকেই একই ভাবনাকে প্রসারিত করা হয়।
নাসার মতে অ্যানালগ মিশন (Human Spaceflight Centre) হল, পৃথিবীর মধ্যেই পরিবেশের উপর পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ সংগ্রহ করা। অর্থাৎ মহাকাশের অনুরূপ পরিবেশ এবং পরিস্থিতিকে অনুসরণ করে বিস্তর গবেষণা করা যায় মিশনে। এই মিশন ভূ-মণ্ডলের মধ্যে উপযুক্ত পরিবেশ নির্মাণ করে। যার মাধ্যমে মানুষ বা রোবট অথবা যন্ত্রাংশকে কীভাবে মহাকাশের মতো উপযুক্ত অনুকুল পরিবেশে রাখা যায় তা নির্ণয় করা যায়। এতে যে কোনও রকম মহাকাশ অভিযানের আগে থেকেই সমস্যা এবং সমস্যা থেকে মুক্তির পথকে অনুসন্ধান করা যায়। প্রযুক্তিবিদ এবং প্রকৌশলীরা নিজেদের অভিজ্ঞতাকে অনেকটাই আগে থেকে ভালো-মন্দ বা সাফল্যকে আন্দাজ করতে পারেন। নাসাও এই ধরনের একাধিক মিশনে কাজ করে থাকে। আগে থেকে উপযুক্ত পরিবেশ এবং জায়গা ঠিক করে একাধিক সংস্থা, প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি সংস্থার সঙ্গে কাজ করে থাকে। এবার ভারতের লাদাখেও এমন একটি পরিকল্পনা করেছে ইসরো (ISRO)। সেই সঙ্গে বিজ্ঞনীরাও এনিয়ে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ আজ দেশজুড়ে ভক্তরা মেতে উঠেছেন গোবর্ধন পুজোয়, জানুন এর মাহাত্ম্য
এই অ্যানালগ মিশনের (Human Spaceflight Centre) মধ্যে পরীক্ষা করতে যে সব উপকরণ লাগে তার মধ্যে রয়েছে, নতুন প্রযুক্তি, রবোটিক সরঞ্জাম, যানবাহন, পরিবহণ, বাসস্থান, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ পরিষেবা, উৎপাদন, গতিশীলতা, পরিকাঠামো, মানবশ্রম এবং স্টোরেজ। এই মিশনের কাজ এবং প্রশিক্ষণ মূল গবেষণার কাজের গতিকে পর্যবেক্ষণ করতে পারে। একই ভাবে উদ্ভূত সমস্যার কথা তুলে ধরে দ্রুত সমাধানের বিষয়েও প্রস্তুতি নিতে সহায়ক হয়। গভীর মহাকাশে গিয়ে কী ধরনের মুহূর্ত হবে, সেই দিকগুলির উপর পুঙ্খানুপুঙ্খ নজর রাখা হয় মিশনে। এই রকম মিশনের আরও পরীক্ষালব্ধ এলাকা হতে পারে, যেমন-মহাসাগর, মরুভূমি, আগ্নেয়গিরি ইত্যাদি। তবে ইসরো (ISRO) গবেষণার জন্য লাদাখকেই বেছে নিয়ে কাজ শুরু করছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।