চিকিৎসকদের একাংশের অনুমান, সঠিক সময় এই রোগের চিকিৎসা না হলে তা করোনার মতো মহামারীর আকার ধারণ করতে পারে।
প্রতীকী ছবি
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি, তারপর আবার টম্যাটো ফ্লু, মাঙ্কি পক্স। নয়া সংযোজন 'ওয়েস্ট নাইল ফিভার’ (West Nile Fever)।
রবিবার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেরলে ৪৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ১৭ মে থেকে তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। এক সপ্তাহের উপর জ্বর না কমায় তাঁকে ত্রিশূরের সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। জ্বর ছাড়াও অন্যান্য উপসর্গও তাঁর শরীরে দেখা দিয়েছিল। হাসপাতালে পরীক্ষার পর তাঁর শরীরে ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসের (West Nile Virus) দেখা মেলে। হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। ২০১৯ সালেও এই ভাইরাসের হানায় কেরলের কোকিঝোরে একটি শিশুর মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় কেরলবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মশাবাহিত এই ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসের (WNV) মোকাবিলায় বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে কেরল প্রশাসন। কেরলের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এই ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস মূলত RNA ভাইরাস। ফ্লাভিভিরিদে গোষ্ঠীর ভাইরাস এই ওয়েস্ট নাইল। কিউলেক্স মশা এই ভাইরাস বহন করে।
আরও পড়ুন: আতঙ্কের নয়া নাম ওয়েস্ট নাইল! কীভাবে মানবদেহে ছড়ায় এই ভাইরাস?
চিকিৎসকদের একাংশের অনুমান, সঠিক সময় এই রোগের চিকিৎসা না হলে তা করোনার মতো মহামারীর আকার ধারণ করতে পারে। তাই এই বিষয়ে সতর্কতা গ্রহণের জন্য আক্রান্ত ব্যক্তি যেখানে থাকতেন সেখানে একটা মেডিক্যাল টিমও পাঠিয়েছে কেরলের স্বাস্থ্য দফতর।
জেলা ভেক্টর কন্ট্রোল বোর্ড পরীক্ষার জন্য জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নমুনা নিয়েছে। স্থানীয় মশার প্রজনন স্থানগুলি ধ্বংস করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ বলেন, "সব জায়গায় মশার প্রজনন স্থানগুলি ধ্বংস করতে সচেষ্ট সরকার। সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। বাড়ির আশেপাশে ও আবাসিক এলাকাগুলি পরিষ্কার করা উচিত। কোথাও জল জমতে দেওয়া যাবে না।"
সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোলের (Centre For Disease Control) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আমেরিকাতেই প্রথম এই ভাইরাস মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ে। মশার কামড়ে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লেও তা প্রথম বহন করে আনে পাখিরা। চক্রাকারে ছড়িয়ে দেয় এই ভাইরাস।
এছাড়াও কেবলমাত্র মানুষ নয়, অন্য স্তন্যপায়ীরাও এই ভয়ংকর ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। মশার কামড়ের পাশাপাশি রক্ত এবং টিস্যু থেকেও ছড়িয়ে পড়ছে ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস। এর অন্যতম কারণ, অঙ্গ প্রতিস্থাপন, রক্তদান, স্তন্যপানের দ্বারাও দেহে প্রবেশ করছে এই ভাইরাস।
তবে একজন মানুষ থেকে অপরজনে সেটি সংক্রমিত হচ্ছে কিনা, তার কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি। যদিও মশাবাহিত রোগের চিকিৎসায় জড়িত অধিকাংশ ল্যাব টেকনিশিয়ানদের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে বলে খবর।