Modi Government: গত বছর প্রধানমন্ত্রী মোদির সফর, তারপরেই মলদ্বীপের বদলে পর্যটকরা ছুটছিলেন লাক্ষাদ্বীপে, এবার এই দ্বীপকে ঢেলে সাজাতে পদক্ষেপ করল মোদি সরকার
লাক্ষাদ্বীপে মোদি (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গত বছর প্রধানমন্ত্রী মোদির (Modi Government) সফর, তারপরেই মলদ্বীপের বদলে পর্যটকরা ছুটছিলেন লাক্ষাদ্বীপে (Lakshadweep)। নিজের সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণের যে আর্জি জানিয়েছিলেন, তা আরও জোরদার করতে এবার বড় পদক্ষেপ শুরু করল কেন্দ্র। জানা গিয়েছে, লাক্ষাদ্বীপকে দেশের অন্যতম সেরা পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে সাজিয়ে তুলতে একাধিক বড় প্রকল্প আনছে মোদি সরকার।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন (Lakshadweep) অনুযায়ী, কারাভাতি, আগাতি, মিনিকয় দ্বীপে বড় ভেসেল রাখার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে কালপেনি, কাদমঠ, আন্দ্রোথ দ্বীপের মতো দ্বীপগুলিকে অত্যাধুনিকভাবে সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, শীঘ্রই প্রথম প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এর জন্য খরচ হবে ৩০৩ কোটি টাকা। লাক্ষাদ্বীপে তৈরি হবে মাল্টি-মডেল জেটি। একইসঙ্গে প্যাসেঞ্জার ওয়েটিং হলও তৈরি করা হবে বলে জানি গিয়েছে। কালপেনি, কাদমাঠ, কারাভেতি, আগাতি, মিনিকয় দ্বীপে আধুনিক প্রযুক্তির পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। জানা গিয়েছে, প্রকল্পগুলি রূপায়ণের যাবতীয় খরচ লাক্ষাদ্বীপ ও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেই বহন করা হবে। কোচি পোর্ট অথারিটি প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব নিয়েছে। প্রসঙ্গত, গত বছরই লাক্ষাদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখান থেকে ছবি পোস্ট করার পরই কটাক্ষ করেন মলদ্বীপের মন্ত্রীরা। প্রধানমন্ত্রীর এই অপমানের পরই বয়কট মলদ্বীপের ডাক দেওয়া হয়। এর জেরে ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় মলদ্বীপের পর্যটন।
জানা গিয়েছে, প্রথম প্রকল্পটি শুরু হতে চলেছে কোচি থেকে প্রায় ৪০৭ কিলোমিটার দূরে লাক্ষাদ্বীপের কাদমঠ দ্বীপে। এখানেই তৈরি করা হবে, একটি জেটি। অত্যাধুনিক মানের ব্যবস্থা থাকবে সেখানে। প্রসঙ্গত কাদমঠ হল আমিনদিভি গোষ্ঠীর একটি দীর্ঘতম দ্বীপ, লাক্ষাদ্বীপের কেন্দ্রে অবস্থিত এটি। এর আয়তন হল ৩.৩৪ বর্গ কিলোমিটার। দৈর্ঘ্য হল ৯.৩ কিলোমিটার। প্রস্থ হল ০.৫৭ কিলোমিটার। এই দ্বীপেই একটি জেটি খোলার প্রস্তুতি নিয়েছে মোদি সরকার। দ্বীপটি ঢেলে সাজাতে বরাদ্দ করা হচ্ছে ৩০৩ কোটি টাকা। এখানে যাত্রীদের আসা-যাওয়ার একটি পৃথক টার্মিনালও তৈরি করছে মোদি সরকার। বিশ্বমানের সুযোগ সুবিধা সমেত এখানে যাত্রীদের একটি বিশ্রামাগারও তৈরি হবে। জানা গিয়েছে, লাক্ষাদ্বীপের পূর্ব ও পশ্চিম উভয়দিকেই আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সহ যাত্রীদের নানা সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে। পর্যটকদের সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে কাল্পনি আন্দ্রোতো গুদাম ইত্যাদি দ্বীপে।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সহ ঢেলে সাজানো হবে কালপেনি, কদমাথ এবং আন্দ্রোতে গুদাম ইত্যাদি দ্বীপকে
বড় ভেসেল যাতায়াতের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে কাভারত্তি, আগাট্টি এবং মিনিকয় দ্বীপপুঞ্জে।
কালপেনি এবং কদমাঠে দ্বীপে ক্রুজ জাহাজ পরিচালনার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে।
কালপেনি ও কদমথ দ্বীপে থাকা বর্তমান জেটিগুলিকে ঢেলে সাজানো হবে।
জানা গিয়েছে, এই সমস্ত প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন করা হবে সাগরমালা কর্মসূচির অধীনে এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাক্ষাদ্বীপের অভ্যন্তরীণ যে তহবিল, সেটাও এক্ষেত্রে ব্যবহার করবে মোদি সরকার। প্রসঙ্গত, এই প্রকল্পের কাজ করছে কোচিং পোর্ট অথরিটি। যাবতীয় প্রযুক্তির কাজগুলি দেখভাল করছে তারা। অন্যদিকে চেন্নাইয়ের অ্যাসি সিস্টেম ইন্ডিয়া লিমিটেড একটি বিশদ প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করেছে এবিষয়ে।
ভারতের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হল লাক্ষাদ্বীপ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভরা এই দ্বীপগুলি মোট ৩২ বর্গমিটার এলাকা নিয়ে বিস্তৃত। এর আশেপাশে সমুদ্রসীমার ক্ষেত্রফল হল ৪,২০০ বর্গ কিলোমিটার। ভারতের অঙ্গরাজ্য কেরলের পশ্চিম উপকূল থেকে ২২০ থেকে ৪৪০ কিলোমিটার দূরত্বে এই দ্বীপগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
লাক্ষা, আমিনদিভি, মনিকয় দ্বীপপুঞ্জ ইত্যাদি নিয়ে গড়ে উঠেছে এই লাক্ষাদ্বীপ। এখানে ছোট বড় মিলিয়ে মত ৩৬টি দ্বীপ রয়েছে। লাক্ষা পর্যটন বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে এই দ্বীপে বেড়াতে যেতে হয়। বছরের অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সময় হল ভ্রমণ করার আদর্শ সময়। এই দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং মনোরম পরিবেশ ভীষণ ভাবে পর্যটকদের মনকে মুগ্ধ করবে। এখানে ঘুরে দেখার সুন্দর জায়গাগুলি হল -
আগাত্তি দ্বীপ
লাক্ষাদ্বীপের (Lakshadweep Tourism) প্রবেশদ্বার হল এই আগাত্তি দ্বীপ। বিশ্বের অন্যতম সুন্দর লেগুন (নোনা জলের উপহ্রদ) রয়েছে এখানে। এখানে সুইমিং, স্বরকেলিং, কায়াকিংয়ের মতো ওয়াটার স্পোর্টস করার সুযোগ রয়েছে।
বাঙ্গারাম দ্বীপ
আগাত্তি দ্বীপের খুব কাছেই হল বাঙ্গারাম দ্বীপ। এখানে মানুষ বসবাস করে না। এখানকার সৈকত রাতে নীলাভ হয়। ডলফিন, অক্টোপাস, ফ্রগফিস দেখা যায়।
মিনিকয় দ্বীপ
উত্তর দ্বীপপুঞ্জের ২০০ কিমি দক্ষিণে অবস্থিত এই দ্বীপ। এই দ্বীপ অন্যতম বড় লেগুন। এখানে ১১ গ্রামের ক্লাস্টার রয়েছে। এইগুলিকে আভাহ নামে পরিচিত।
কালপেনি দ্বীপ
স্বচ্ছ এবং নীল জলের জন্য বিখ্যাত এই দ্বীপ। এখানে সুইমিং, স্নরকেরিং করার ব্যবস্থা রয়েছে।
কাভারাত্তি দ্বীপ
এই দ্বীপ পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় জায়গা। স্থানীয় বাজার বেশ দর্শনীয় স্থান।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।