Bal Gangadhar Tilak: বাল গঙ্গাধর তিলকের জন্মদিনে তাঁর জীবনী জানুন...
বাল গঙ্গাধর তিলক (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রতিবছর ২৩ জুলাই পালিত হয় বিখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী বাল গঙ্গাধর তিলকের জন্মদিন (Lokmanya Tilak Jayanti)। জাতীয়তাবাদী নেতা তথা সমাজ সংস্কারক বাল গঙ্গাধর তিলক জনপ্রিয় ছিলেন লোকমান্য তিলক (Bal Gangadhar Tilak) নামেও। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। দেশের চরমপন্থী জাতীয়তাবাদের তিনিই ছিলেন অন্যতম প্রবক্তা। ব্রিটিশরা তাঁকে ‘ফাদার অফ ইন্ডিয়ান আনরেস্ট’ বা ‘অস্থিরতার জনক’ বলতেন। আজকে আমরা বাল গঙ্গাধর তিলকের (Bal Gangadhar Tilak) জীবনের বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা সম্পর্কে জানব।
বাল গঙ্গাধর তিলকের (Lokmanya Tilak Jayanti) জন্ম ১৮৫৬ সালের ২৩ জুলাই মহারাষ্ট্রের রত্নগিরিতে হয়। ছাত্র জীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। মহারাষ্ট্রের ডেকান কলেজ থেকে গণিতে স্নাতক হন তিনি। বাল গঙ্গাধর তিলক পরবর্তীকালে আইনের ডিগ্রিও নিয়েছিলেন। দেশের জনগণই তাঁকে উপাধি দিয়েছিলেন ‘লোকমান্য’, যার অর্থ সমস্ত জনগণের গ্রহণযোগ্য নেতা। তাঁর এই উপাধি দেখেই বোঝা যায় ঠিক কতটা জনপ্রিয় ছিলেন তিনি এবং ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামে মানুষের কতটা আস্থা ও বিশ্বাস তিনি অর্জন করতে পেরেছিলেন।
তিলক মহারাজকে (Lokmanya Tilak Jayanti) ব্রিটিশরা ‘ফাদার অফ ইন্ডিয়ান আনরেস্ট’ বলতেন। কারণ চরমপন্থী ভাবধারায় যুব সমাজকে দীক্ষিত করে ব্রিটিশ বিরোধী যে সংঘর্ষ তিনি গড়ে তুলেছিলেন, তাতেই বিদেশী শাসনের ভীত কেঁপে উঠেছিল। এমন উপাধি তাই ব্রিটিশরা দিয়েছিলেন তাঁকে। তিলক মহারাজের জনপ্রিয় উক্তি ছিল, ‘‘স্বরাজ আমার জন্মগত অধিকার আমি তা অর্জন করবই।’’ দেশের জনগণের কাছে খুবই জনপ্রিয় হয় তিলক মহারাজের এই বাণী।
সমাজ সংস্কার, স্বাধীনতা সংগ্রামের পাশাপাশি শিক্ষার বিস্তারেও উদ্যোগী হয়েছিলেন তিলক মহারাজ (Lokmanya Tilak Jayanti)। তিনি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই গড়ে তুলেছিলেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘ডেকান এডুকেশন সোসাইটি’- যা স্থাপিত হয়েছিল ১৮৮৪ সালে। এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ছিল উন্নতমানের শিক্ষা ভারতীয় যুবকদের মধ্যে ছড়ানো এবং জাতীয় গর্ব ও সামাজিক কর্তব্যবোধের শিক্ষা পড়ুয়াদের দেওয়া। তিলক মহারাজ সাংবাদিকতাতেও খুব আগ্রহ রাখতেন। তিনি ছিলেন একজন সুলেখকও। তিনি দুটি সংবাদপত্র চালাতেন ‘কেশরী’ ও ‘মারাঠা’। এর মধ্যে ‘মারাঠা’ সংবাদপত্র ইংরেজিতে চলত। তাঁর এই সংবাদপত্রগুলির মাধ্যমেই তিলক মহারাজ জাতীয়তাবাদী ভাবধারার প্রসার ঘটাতেন ও ব্রিটিশ সরকারের সমালোচনা করতেন।
বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ক উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন তিলক মহারাজ। সমাজ সংস্কারেও তিনি ব্রতী হয়েছিলেন। বিধবা বিবাহকে তিনি প্রকাশ্যেই সমর্থন করেন। অন্যদিকে বাল্যবিবাহ প্রথার বিরুদ্ধেও তিনি আওয়াজ তোলেন। নারী শিক্ষার প্রসারেও তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে জানা যায়। রাজনীতিতেও অসামান্য জনপ্রিয়তা অর্জন করেন বালগঙ্গাধর তিলক। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন তিনি। জাতীয় কংগ্রেসের মধ্যে নরমপন্থী ভাবধারার বিরোধিতা করে ব্রিটিশ বিরোধী চরমপন্থী আন্দোলনের সুর তিনিই বেঁধেছিলেন।
বাল গঙ্গাধর তিলক মহারাষ্ট্রে গণেশ চতুর্থী ও শিবাজী উৎসবের প্রচলন শুরু করেন। এর মাধ্যমে দেশের জনগণের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটান তিনি। বাল গঙ্গাধর তিলককে একাধিকবার জেলে পাঠানো হয়। দেশদ্রোহিতা আইনে তাঁকে বারবার গ্রেফতার হতে হয়েছে। ছ'বছরের জন্য তাঁকে মান্দালয় জেলে পাঠায় ব্রিটিশ সরকার। কিন্তু এতেও বালগঙ্গাধর তিলকের চরমপন্থী জাতীয়তাবাদকে রোধ করা যায়নি। বাল গঙ্গাধর তিলক বেশ কতগুলি বইও লিখেছিলেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘গীতা রহস্য’, এটা ছিল ভগবত গীতার ব্যাখ্যা। মান্দালয়ের জেলে বসে এই গ্রন্থখানি রচনা করেছিলেন তিনি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।