সোনার কাজ করতে গুজরাটে গিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর হাবিবুল শেখ।
চলছে উদ্ধারকাজ।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গুজরাটের মোরবিতে সেতু (Morbi Bridge Collapse) বিপর্যয়কাণ্ডে রাজকোটের বিজেপি সাংসদের পরিবারের ১২ জন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জন শিশু। রবিবার সন্ধ্যায় মোরবির ওই ঝুলন্ত সেতু দেখতে যান রাজকোটের সাংসদ মোহনভাই কল্যাণজী কুন্দারিয়ার বোনের পরিবারের সদস্যরা। সেতু ছিঁড়ে পড়ায় সকলেই মাছু নদীতে পড়ে গিয়েছিলেন। রাতভর তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার কথা বলতে গিয়ে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন পদ্ম-শিবিরের ওই সাংসদ। তিনি বলেন, “কী ভাবে কী হয়ে গেল, কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার বোনের পরিবারটাই শেষ হয়ে গেল। ওই অভিশপ্ত সেতু সব কেড়ে নিয়েছে আমার।”
আরও পড়ুন: আমি মর্মাহত, মন পড়ে রয়েছে আক্রান্তদের সঙ্গে! আজ মোরবি যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী
প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত সেতু বিপর্যয়কাণ্ডে ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে আরও ১৭৭ জনকে। এদের মধ্যে অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন। মোরবিতে ব্রিজ বিপর্যয়ে মৃতদের মধ্যে রয়েছেন বাংলার এক যুবকও। সোনার কাজ করতে গুজরাটে গিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর ওই যুবক। রবিবার রাতে অন্যদের সঙ্গে ওই যুবকও মোরবির ঝুলন্ত ব্রিজে ঘুরতে গিয়েছিলেন। ব্রিজ ভেঙে অন্য অনেকের সঙ্গে নদীতে পড়ে যান হাবিবুল শেখ নামে ওই যুবক। রাতেই তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: গুজরাটে সেতু ভেঙে মৃত অন্তত ১৩২, ঘটনাস্থলে তদন্তকারী দল
গুজরাট প্রশাসন সূত্রে খবর, গত ১৫ বছর ধরে মোরবির এই ঝুলন্ত সেতুর রক্ষণা-বেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে ‘ওরেভা কোম্পানি’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। গত ৭ মাস ধরে সংস্কারের জন্য সেতু বন্ধ রাখা হয়েছিল। মোরবি পুরসভার দাবি, প্রায় ২ কোটি টাকা খরচ করে সেতু সংস্কার করে ওই সংস্থা। চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর জনসাধারণের জন্য়ে খুলে দেওয়া হয় সেতুটি। সংস্কারের ৫ দিনের মাথাতেই বিপর্যয় ঘটায় এই নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে রক্ষণা-বেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ওই সংস্থা। কিন্তু পুরসভার অভিযোগ, ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই খুলে দেওয়া হয়েছিল সেতুটি। কেন ফিটনেস সার্টিফিকেট না দিয়েই সেতু খুলে দেওয়া হল, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এই সেতুতে উঠতে গেলে টিকিট কাটতে হয়। বেশি লাভের জন্য অতিরিক্ত লোক সেখানে তোলা হয়েছিল বলেও অভিযোগ তুলেছে মোরবি পুর কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে গুজরাট সরকার।