Triveni Sangam: কুম্ভমেলায় একটি বড় অঙ্গ হল গঙ্গা আরতি, প্রতিদিন সকালে অনুষ্ঠিত হয়…
কুম্ভমেলায় সকালের আরতি। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২০২৫ সালের মহাকুম্ভমেলা (Maha Kumbh 2025) মকর সংক্রান্তি থেকে শুরু হবে। ইতিমধ্যে এই বিরাট সনাতনী হিন্দু মেলায় ভক্ত, সাধু, সন্ত, সন্ন্যাসী, সাধু, নাগা, ব্রহ্মচারীরা আসতে শুরু করেছেন। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকম প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। মেলায় প্রত্যেকদিন ভোরে সূর্যোদয়ের সময়ে গঙ্গা আরতি করা শুরু হয়েছে। তবে প্রদীপ প্রজ্বলন করে আরতি প্রয়াগরাজের বিখ্যাত ঘাটের কিনারাতেই হয়ে থাকে এমন নয়, ত্রিবেণী সঙ্গমের নদী সমতলের নানা জায়গায় চলে আরতি। এরপর করা হয় মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা। দূরদূরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীরাও তা দর্শন করে থাকেন।
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের মহিলারা মহাকুম্ভের (Maha Kumbh 2025) আগে একবার গঙ্গাতীরে আরতি অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন। তবে সেই সময় ছিল সম্পূর্ণ ভাবে একটি মহড়া কেন্দ্রিক। প্রয়াগরাজ তীর্থ ক্ষেত্রের এক পুরোহিত প্রদীপ পাণ্ডে বলেন, “আজ সকালে একটি বিশেষ আরতি অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। এখানে ছেলেরা ত্রিবেণী আরতি করেন এবং মায়েরা গঙ্গা আরতি করেছেন। আমরা আশা করি এই আরতি সমাজের পরবর্তী সমাজকে উৎসাহিত করবে। আমরা স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, এই আরতি হল হিন্দু সনাতন ধর্মের একটি বড় উৎসব। একে কোনও ভাবেই সীমাবদ্ধ করে রাখা যায় না। ভগবানের কাছে সকলের মঙ্গলকামনায় করা হয় আরতি।”
প্রয়াগরাজ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেলায় (Maha Kumbh 2025) আগত ভক্ত-সাধু এবং সন্ন্যাসীদের জন্য সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। অগ্নিনির্বাপকযন্ত্র এবং ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধন করা হয়েছে। আগুন লাগা থেকে দ্রুত নিস্তার পেতে কমপক্ষে ৩৬৫টি গাড়ি মোতায়েন করা হয়েছে। একই ভাবে সব রকম প্রচার এবং মানুষকে অযথা আতঙ্কিত হওয়া থেকে মুক্ত থাকার কথাও বলা হয়েছে। অগ্নি নির্বাপণ শাখার এডিজি পদ্মজা চৌহান বলেন, “সচেতনতার বার্তা সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই ভাবে সাধারণ কিছু মানুষকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছোট খাটো আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের অফিসাররা দাঁড়িয়ে থেকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।”
এইবার কুম্ভমেলার (Maha Kumbh 2025) নিরাপত্তার বিষয়ে নজর দিয়ে একদিকে যেমন কর্মীনিয়োগ করা হয়েছে ঠিক তেমনি ভাবে প্রযুক্তিগত সরঞ্জামের ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন-দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অল-টেরেন যান মোতায়েন করা হয়েছে। এই যান জল-স্থল বা মরু অঞ্চলেও চলতে পারে। একই ভাবে অগ্নিনির্বাপক রোবট এবং মিস্ট বাইকের ব্যবহার করা হয়েছে। একই ভাবে বেশ কিছু অগ্নিনির্বাপক নৌকাও আনা হচ্ছে। নদীর জলকে ব্যবহার করে এই কাজ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
মহাকুম্ভের (Maha Kumbh 2025) আগত ভক্তদের সুবিধা দিতে রেল নিজেদের কর্মীদের প্রয়াগরাজ জংশনে মোতায়েন করবে। ফলে এই কর্মীরা সবুজ পোশাকে থাকবেন। তাঁদের জামার পিছনে কিউআর কোড থাকবে। খুব সহজেই তাঁদের শনাক্ত করা যাবে। তীর্থ যাত্রীরা ইউটিএস মোবাইল অ্যাপে ডাউনলোড করে তাঁদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে দীর্ঘ সময়ে লাইনে না দাঁড়িয়ে অসংরক্ষিত টিকিট বুক করতে পারবেন বলে জানা গিয়েছে। স্টেশনে ভিড় কমাতে এই ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। একইভাবে ডিজিটাল লেনদেনের বিষয়টিও সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে সময় এবং ভিড় থেকে বাঁচতে এই ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ মোদি জমানায় ১৭.৯ কোটি নতুন চাকরি, ইউপিএ আমলে ছিল ২.৯, বিরোধীদের তোপ মান্ডব্যর
এই মহাকুম্ভ (Maha Kumbh 2025) ১২ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী ১৩ জানুয়ারী থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রয়াগরাজে প্রচুর ভক্তদের উপস্থিতি আশা করা হচ্ছে। প্রধান শাহী স্নানের দিনগুলি হল ১৩ জানুয়ারি-পৌষ পূর্ণিমা, ১৪ জানুয়ারি-মকর সংক্রান্তি, ২৯ জানুয়ারি-মৌনি অমাবস্যা, ৩ ফেব্রুয়ারি-বসন্ত পঞ্চমী এবং ১২ ফেব্রুয়ারি-মাঘী পূর্ণিমা। আবার যোগী প্রশাসন জানিয়েছে, এই বৃহৎ ধর্মীয় মেলায় আনুমানিক ৪০ থেকে ৪৫ কোটি তীর্থ যাত্রীদের সমাগম হবে। বিশেষ বিশেষ স্নানে দৈনিক ১ কোটি ভক্তদের স্নান করার উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। একইভাবে স্নান শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও স্বচ্ছ করতে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, উদ্বোধনের দিনে আকাশ পথে পুষ্পবর্ষণ, দশহাজার বৈদিক পণ্ডিতের দ্বারা বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে মেলার আধ্যত্মিক পরিবেশকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।