Mahakumbh 2025: মহাকুম্ভ ব্র্যান্ডেড পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি! লোকের মধ্যে ব্যাগ, টি-শার্ট, ডায়েরি কেনার হিড়িক
মহাকুম্ভ লেখা পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। সংগৃহীত চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আগামী বছরের ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে ২০২৫ সালের মহাকুম্ভ মেলা (Mahakumbh Mela)। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা ত্রিবেণী তীরে শুধুই আধ্যাত্মিক জাগরণের সন্ধানে আসে এমনটা নয়। আধ্যাত্মিক চেতনা বৃদ্ধি, পুণ্য স্নান ছাড়াও মহাকুম্ভ (Mahakumbh 2025) এক সাংস্কৃতিক তীর্থ ও বাণিজ্য ক্ষেত্র। ত্রিবেণী তীরের কোলাহল আধ্যাত্মিক জাগরণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক উত্থানও নিয়ে আসে। বর্তমান বাজারে যে কোনও জায়গার লোগো সম্বলিত পণ্যের এক বিশেষ জনপ্রিয়তা থাকে। পুরীর জগন্নাথ ধামে ভ্রমণে গিয়ে সেখানকার টি-শার্ট, চাদর, ওড়না কেনার হিড়িক বরাবর চোখে পড়ে। আসন্ন মহাকুম্ভের বাজারেও দেখা যাচ্ছে মহাকুম্ভের লোগো এবং প্রতীক সম্বলিত পণ্যের চাহিদা রয়েছে।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে, রাজ্য সরকার মহাকুম্ভ ২০২৫-কে (Mahakumbh 2025) সফল করতে কোনও খামতি রাখতে চাইছে না। রাজ্য সরকারের ব্র্যান্ডিং এবং প্রচারমূলক প্রচেষ্টার ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ট্রেডারদের মধ্যে উৎসাহের ঝড় বইছে। সামনেই ইংরেজি নববর্ষ, এবার, নিউ ইয়ার-এর উপহারেও রয়েছে মহাকুম্ভের ছোঁয়া। প্রয়াগরাজে ঐতিহ্যবাহী নববর্ষের উপহার বিনিময়ে এই বিষয়টি চোখে পড়েছে। বেশ কয়েকজন স্থানীয় ব্যবসায়ী মহাকুম্ভ-থিমযুক্ত পণ্য নিয়ে এসেছেন। যা দ্রুত স্থানীয় বাসিন্দা ও দর্শনার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
প্রয়াগরাজের শূন্য রোড এলাকার ভাগবতী পেপার্স ট্রেডিং-এর মালিক অর্জুন কুমার আগরওয়াল একজন এমন উদ্যোক্তা যিনি এই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন। আগরওয়াল মহাকুম্ভের (Mahakumbh Mela) লোগোযুক্ত ১৪টি স্টেশনারি পণ্য বাজারে এনেছেন। এর মধ্যে ডায়েরি, ফাইল বক্স, ক্যালেন্ডার, কলম, কলমের স্ট্যান্ড, এবং কি-রিং রয়েছে। তাঁর এই জিনিসের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। শুধুমাত্র প্রয়াগরাজে নয়, বরং বাইরের শহর থেকেও অর্ডার আসছে। আগরওয়াল বলেন, "মহাকুম্ভ-থিমযুক্ত স্টেশনারি পণ্যের চাহিদা আমাদের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই মহাযজ্ঞকে ঘিরে মানুষের মধ্যে প্রবল উৎসাহ ও উদ্দীপনা রয়েছে।"
মহাকুম্ভ ২০২৫ (Mahakumbh Mela) কেবল আধ্যাত্মিক একটি ঘটনা নয়, বরং একটি পরিবেশবান্ধব উদ্যোগও। রাজ্য সরকার মহাকুম্ভের সময় প্লাস্টিকমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার জন্যও বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের কারণে, জুট এবং কটন ব্যাগের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। শিবা ইন্টারন্যাশনালের মালিক গোপাল পাণ্ডে, যিনি জুট এবং কটন ব্যাগের ব্যবসা করেন, জানান যে তিনি ইতোমধ্যেই ২৫,০০০টি ব্যাগের অর্ডার পেয়েছেন, এবং চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। পাণ্ডে বলেন, "রাজ্য সরকারের প্লাস্টিকমুক্ত মহাকুম্ভ উদ্যোগই এই বৃদ্ধির মূল কারণ। মহাকুম্ভের লোগো সহ আমাদের জুট এবং কটন ব্যাগগুলি উৎসবের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে।"
উত্তর প্রদেশের কনফেডারেশন অফ অল ট্রেডার্স-এর সভাপতি মহেন্দ্র গোয়াল মহাকুম্ভের (Mahakumbh Mela) বাণিজ্যিক সাফল্যকে আয়োধ্যায় রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠার সময় বাণিজ্যিক বৃদ্ধির সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, "মহাকুম্ভের আধ্যাত্মিক গুরুত্ব এবং কৌশলগত ব্র্যান্ডিংয়ের মিশ্রণ ব্যবসায়িক উন্নতি নিয়ে এসেছে। মহাকুম্ভ শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক নয়, অর্থনৈতিক দিক দিয়েও একটি মাইলফলক।" অর্থনীতির এই উত্থানকে ব্যবহার করতে ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মহাকুম্ভ ২০২৫-এর সময় এই ধরনের পণ্যের চাহিদা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। সাংস্কৃতিক অনুভূতি এবং কৌশলগত বিপণনের এই মিশ্রণ মহাকুম্ভ ২০২৫-কে একটি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির উৎসে পরিণত করেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মহাকুম্ভের মহিমা এবং ঐশ্বরিক অনুভূতি ধারণ করা পণ্য সরবরাহ করছেন, স্টেশনারি থেকে শুরু করে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ পর্যন্ত, সবকিছু।
আরও পড়ুন: ১৪০০ বছর আগেও কুম্ভমেলায় এসেছিলেন চিনা পর্যটক!
মেলায় (Mahakumbh Mela) আগত দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে প্রয়াগরাজ মেলা কর্তৃপক্ষর অনুরোধে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যেই নিজেদের ডিজিটাল নীতিতে বড় পরিবর্তন এনেছে গুগল। প্রয়াগরাজ মেলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি চুক্তিতেও আবদ্ধ হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ডিজিটাল জায়ান্ট। আগামী বছর প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ কোটি মানুষ কুম্ভ মেলায় আসতে পারেন বলে মনে করছে মেলা কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে এতদিন নির্দিষ্ট গন্তব্য খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যার মধ্যে পড়তে হত পুণ্যার্থীদের। অনেকে হারিয়েও যান। এবার এ সব সমস্যার অনেকখানি সমাধান হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। গুগলের তরফে জানানো হয়েছে, এতদিন শুধুমাত্র স্থায়ী জায়গাগুলির নাম গুগল তার ম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করে রাখত। সেদিক থেকে কুম্ভ মেলা বছরে মাত্র কয়েকটি দিনের জন্য হয়। তাই গুগলের পরিভাষায়, এটি অস্থায়ীভাবে গড়়ে ওঠা বসতি। অর্থাৎ গুগলের নীতি অনুযায়ী এই ধরনের কোনও স্থানের পুঙ্খানপুঙ্খ তথ্য ম্যাপে থাকার কথা নয়। তবে মহাকুম্ভ (Mahakumbh 2025) মেলার ভিড়ের কথা মাথায় রেখে মেলার প্রতিটি মঠ, প্রতিটি স্থানের পুঙ্খানপুঙ্খ তথ্য গুগল ম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে, সহজেই কুম্ভমেলায় নিজের পছন্দের জায়গায় পৌঁছে যেতে পারবেন পুণ্যার্থীরা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।