Yogi Administration: কুম্ভমেলায় আপনজনের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া ব্যক্তিকে খুঁজতে বিশেষ পদক্ষেপ যোগী সরকারের, কী ব্যবহার করা হবে জানেন?…
মহাকুম্ভের সহায়তা কেন্দ্র ১৯২০। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বলিউড-টলিউডের সিনেমার গল্পে মেলায় গিয়ে পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং পরে আবার মিলিত হওয়ার অনেক দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। এবার এই কুম্ভে “মেলায় হারিয়ে যাওয়া”-এই প্রাচীন উক্তিকে ভুল প্রমাণিত করতে উদ্যোগী হয়েছে যোগী প্রশাসন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা চালিত উচ্চ-প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেলায় হারানো এবং খুঁজে পাওয়ার পঞ্জিকরণ করার বিশেষ ব্যবস্থা রাখার কথা জানানো হয়েছে। ফলে মেলায় প্রিয়জন বা আপনজনদের বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রবাদকে নস্যাৎ করবে এই নয়া প্রযুক্তি (Yogi Administration)। ২০২৫ সালের কুম্ভমেলায় (Mahakumbh Mela 2025) কোটি কোটি হিন্দুদের সর্ববৃহৎ মহাসঙ্গম হবে। তাই বাচ্চা থেকে বয়স্ক নাগরিকরা যাতে হারিয়ে না যান বা হারিয়ে গেলে যাত্র দ্রুত সন্ধান করা যায়, সেই জন্য অভিনব প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। ফলে ‘যোগী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়’ এই কথাও কার্যকর হবে বলে মনে করছেন আদিত্যনাথের ভক্তরা।
ভারতবর্ষ একটি বহু মিলনমেলার দেশ। এখানে প্রত্যেক রাজ্য, প্রত্যেক জেলা এমনকি প্রত্যেক গ্রামে এক এক সময়ে মেলা হয়ে থাকে। মেলায় অংশ গ্রহণ করে থাকেন দুরদূরান্তের লোকজন। মেলার মহালোকারণ্য, সাজসজ্জা এবং গোলোক ধাঁধায় অনেক মানুষের, বিশেষ করে শিশুদের হারিয়ে যাওয়ার একটা ঘটনা সব জায়গায় ঘটে থাকে। তার মধ্যে তীর্থ ক্ষেত্রের মহামেলায় মানুষ হারিয়ে যাওয়া একটি বড় সমস্যা ছিল দেশবসীর কাছে। এবার প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভমেলায় (Mahakumbh Mela 2025) তীর্থযাত্রীদের ডিজিটাল নিবন্ধীকরণের প্রচেষ্টা করা হয়েছে। মেলা কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে হারানো এবং প্রাপ্তির কম্পিউটারাইজড রেজিস্ট্রেশন করা হবে। এই সহায়তা কেন্দ্রের নাম দেওয়া হয়েছে ১৯২০। হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তির পরিবার এবং আত্মীয়ের সঙ্গে দ্রুত সম্পর্ক স্থাপন করে ফেরত পাঠানোর কথা বলা হয়।
সেক্টর ম্যাজিস্ট্রেট জ্ঞান প্রকাশ বলেন, “আমাদের ইচ্ছে কুম্ভকে ঐশ্বরিক ও মহৎ ভাবনাকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটানো। কম্পিউটারাইজড প্রযুক্তির ব্যবহার করে হারানো এবং প্রাপ্তির বিশেষ সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। এই প্রয্যুক্তি বিভিন্ন উপায়ে খোঁজ বা অনুসন্ধান করে থাকে। যেমন-১০ বছর আগেকার তুলায় এখন কেমন হয়েছে ছবি, সামাজিক মাধ্যমের সঙ্গে ছবির মিল বা অমিল ইত্যাদি বিষয়ে তথ্যের অনুসন্ধান দেবে। মহাকুম্ভে (Mahakumbh Mela 2025) দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসবেন, বিভিন্ন উপভাষায় কথা বলবেন। এই অনুষ্ঠান চলাকালীন, কম্পিউটারাইজড সিস্টেমের মাধ্যমে তাঁদের ভাষা হিন্দি বা ইংরেজিতে অনুবাদ করা হবে। হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের থাকার জন্য একটি নির্ধারিত জায়গায় পাওয়া যাবে। যেখানে প্রায় ১০০টি শয্যা বিশিষ্ট একটি কক্ষ থাকবে। যদি শিশুরা তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তবে তাদের সাময়িক কষ্ট নিবারনের জন্য একটি বিনোদনের কেন্দ্রও স্থাপন করা হয়েছে।”
আরও পড়ুনঃ ছত্তিশগড়ে এনকাউন্টারে খতম ৪ মাওবাদী, শহিদ এক ডিআরজি হেড কনস্টেবল
সেক্টর ম্যাজিস্ট্রেট জ্ঞান প্রকাশ আরও বলেন, “একটি কেন্দ্রে চিকিৎসকদের একটি দল মানসিক ভাবে সান্ত্বনা দেওয়ার কাজ করবেন। প্রয়োজনে কাউন্সেলিং পরিষেবারও ব্যবস্থা করা হবে।” অপর দিকে, এই কেন্দ্রে নথিভুক্তিকরণ বা রেজিশট্রেশনের (Yogi Administration) জন্য সব সময় ১০ জন করে ব্যক্তি উপস্থিত থাকবেন। আরও সহায়তার জন্য একটি পুলিশ ডেস্ক এবং পুনরায় ফিরে পাওয়ার আলাদা ডেস্ক থাকবে। কেউ যদি মেলায় হারিয়ে যায় তাহলে স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করলে এই কেন্দ্র থেকে সহযোগিতা পাওয়া যাবে। পুলিশ দায়িত্ব নিয়ে প্রথমে পরিচয় যাচাই করবে এবং তাকে নিরাপদে যথা স্থানে পৌঁছে দেবে।
উল্লেখ্য, মহাকুম্ভ প্রতি ১২ বছরে একবার আসে, আর পূর্ণ কুম্ভ আসে ১৪৪ বছরে। এবার মহাকুম্ভের (Mahakumbh Mela 2025) সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে পূর্ণ কুম্ভও। এই বছর আগামী মকর সংক্রান্তি ১৩ জানুয়ারী থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি মহাশিবরাত্রি পর্যন্ত প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত হবে। এই মেলায় প্রচুর ভক্তদের উপস্থিতির আশা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনা রোধ করতে জেলা প্রশাসন ভক্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ করে ভিড় ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে। মেলায় আগুনের ঘটনা এড়ানোর জন্য সতর্কীকরণ করা হয়েছে।
পুরাণে কথিত রয়েছে, সমুদ্র মন্থনের ফলে যে অমৃত উঠেছিল তার এক ফোঁটা অমৃত ত্রিবেণী সঙ্গমে পড়েছিল। তাই ধরাধাম থেকে মুক্তি পেতে তীর্থযাত্রীরা কুম্ভের (Mahakumbh Mela 2025) ত্রিবেণী সঙ্গম-গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতী নদীর (পৌরাণিক) সঙ্গমস্থলে ছুটে আসেন। পাপমুক্তি এবং মোক্ষ (মুক্তি) লাভের বাসনা বিশ্বাস করে পবিত্র স্নান করে থাকেন। মহাকুম্ভ মেলা ভারতের জন্য একটি ঐতিহাসিক উপলক্ষ হিসাবে চিহ্নিত। এবার ৪৫ কোটিরও বেশি তীর্থযাত্রীদের মহাগমন ঘটবে বলে জানা গিয়েছে। মেলার সব রকম প্রস্তুতি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে বলে জানিয়েছে যোগী প্রশাসন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।