Spiritual Leaders: ‘‘গেরুয়া হল ভগবানের রঙ’’, আদিত্যনাথকে আক্রমণ করায় খাড়্গেকে পাঠ পড়ালেন জগৎ গুরু রামভদ্রাচার্য...
বাঁদিক থেকে মল্লিকার্জুন খাড়গে, জগৎ গুরু রামভদ্রাচার্য, আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সম্প্রতি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে (Mallikarjun Kharge) মন্তব্য করেছিলেন যে, গেরুয়া পরা লোকেদের রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া উচিত। প্রসঙ্গত, কংগ্রেস সভাপতি খাড়্গের এই কথার ইঙ্গিত ছিল উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দিকেই। কংগ্রেস নেতার এহেন মন্তব্যে দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় শুরু হয়। সাধু-সন্ত-সন্ন্যাসীরাও তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতির এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে। কংগ্রেসের সভাপতি খাড়্গের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা তথা সন্ত আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম। তিনি খাড়্গের ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অন্যদিকে, সন্ন্যাসী জগৎ গুরু রামভদ্রাচার্যের প্রশ্ন, গেরুয়াধারীরা বাদ যাবে, তবে কি গুন্ডারা রাজনীতি করবে? একইসঙ্গে রামভদ্রাচার্য জানিয়েছেন, গেরুয়া হল আসলে ভগবানের রঙ।
জগৎ গুরু রামভদ্রাচার্য (Mallikarjun Kharge) সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাড়্গের মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি (Spiritual Leaders) বলেন, ‘‘এটা কোথায় লেখা আছে যে গেরুয়াধারীরা রাজনীতি করতে পারবেন না? তবে কি গুন্ডাদের রাজনীতি করা উচিত? লোফারদের রাজনীতি করা উচিত? গেরুয়াধারীদের রাজনীতি করতে হবে কারণ গেরুয়া হল ভগবানের রঙ।’’ ইতিহাস থেকে শিবাজী মহারাজের উদাহরণ টেনে এনে তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজা শিবাজী গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করেছিলেন এবং সমগ্র জাতি ও মহারাষ্ট্রকে একত্রিত করেছিলেন। তাই গেরুয়াধারীদের রাজনীতি করাই উচিত। স্যুট-বুটের পলিটিক্স ভারত থেকে বন্ধ হোক।’’
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মন্তব্য করেছিলেন, ‘বাটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে’ অর্থাৎ বিভক্ত হলেই আমরা ধ্বংস হয়ে যাব। হিন্দু ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে এমন কথা বলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। এই স্লোগানের সমালোচনা করে মল্লিকার্জুন খাড়্গে (Mallikarjun Kharge) মুম্বইতে বলেছিলেন, ‘‘অনেক নেতাই সাধুদের ছদ্মবেশে বসবাস করে বর্তমানে রাজনীতিবিদ হয়েছেন। কেউ কেউ মুখ্যমন্ত্রীও হয়েছেন। তাঁরা গেরুয়া পোশাক পরেন, তাঁদের মাথায় চুল নেই। আমি বিজেপিকে বলব হয় সাদা পোশাক পরুন নয়ত আপনি সন্ন্যাসী হয়ে গেরুয়া পোশাক পরলে রাজনীতি ছেড়ে দিন।’’
জগৎ গুরু রামভদ্রাচার্য অবশ্য যোগী আদিত্যনাথের ‘বাটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে’ স্লোগানকে (Spiritual Leaders) সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করেছেন এবং বলেন, ‘‘সম্প্রদায় আলাদা আলাদা হলেও আমাদের সকল হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত। আমরা এক হলে কেউ আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। এক একটি আঙুল এককভাবে দুর্বল কিন্তু একটি মুষ্টি শক্তিশালী।’’
অন্যদিকে, আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম মল্লিকার্জুন খাড়্গের ধর্ম নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন এবং তিনি বলেছেন, ‘‘কোনও হিন্দুই অন্ততপক্ষে সাধু-সন্ত এবং মহাত্মাদের অপমান করতে পারেন না।’’ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রমোদ কৃষ্ণমের আরও দাবি, অবিলম্বে খাড়্গের উচিত, তাঁর নিজের ধর্ম কী? এনিয়ে সবাইকে জানানো।
আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণমের মতে, যে ধরনের বিবৃতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে দিয়েছেন, তা সন্ন্যাসীদের পক্ষে খুবই অপমানজনক। এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম বলেন, ‘‘তাঁর নাম দেখে মনে হচ্ছে তিনি হিন্দু। কিন্তু তাঁর কাজ দেখে কখনও মনে হচ্ছে না, তিনি হিন্দু। তাঁর প্রথমে উচিত যে সবার সামনে প্রকাশ করা নিজের পরিচয়। তিনি হিন্দু বটেন কিনা!’’ মল্লিকার্জুন খাড়্গের বিরুদ্ধে আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম আরও বলেন, ‘‘সনাতন ধর্মের যাঁরা বিরুদ্ধে, তাঁরা আসলে ভারত-বিরোধী।’’ তিনি আরও দাবি করেন, ‘‘ভারতবর্ষ ঋষি প্রধান দেশ এবং সেই দেশে এ ধরনের মন্তব্য মানায় না।’’
প্রমোদ কৃষ্ণমের মতে, ‘‘নিঃসন্দেহে তিনি (খাড়গে) একজন সিনিয়র নেতা কিন্তু তিনি হিন্দু সন্ন্যাসীদের অপমান করছেন। সনাতন ধর্মকে অপমান করছেন। গেরুয়া রঙকে অপমান করছেন। এ ধরনের ব্যবহার তাঁর করা উচিত নয়। কোনও হিন্দুরই উচিত নয়, হিন্দু সন্ন্যাসীদের অপমান করা। যোগী আদিত্যনাথ সম্পর্কে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা কখনও উচিত হয়নি মল্লিকার্জুন খাড়্গের।’’ প্রসঙ্গত, ‘বাটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে’ স্লোগানটি যোগী আদিত্যনাথ প্রথম ব্যবহার করেন। হিন্দু ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে এই স্লোগান দিয়ে মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডে নির্বাচনী প্রচারও করেন তিনি। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও মহারাষ্ট্রে নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে বলেন, ‘‘আমরা এক থাকলেই নিরাপদ।’’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।