Central Fund: ঘোষণা হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাজেটে, এবার কৃষক-মহিলাদের উন্নয়নে বিপুল অর্থ বরাদ্দ করল মোদি সরকার...
প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে দেশের অঙ্গ রাজ্যগুলির বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার নজর দিয়েছে। চলতি বছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ঘোষণা করেছিলেন চার শ্রেণির উন্নয়নে জোর দেওয়া হবে। এগুলি হল— কৃষক, তরুণ, মহিলা ও গরিব। মোদি সরকারের বাজেটে দেখা যাচ্ছে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এই চার শ্রেণিকেই। এর আগে, আগামী ৫ বছরের জন্য বিনামূল্যে ৮০ হাজার মানুষকে রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে মোদি সরকার।
এবার, কেন্দ্রীয় সরকার জোর দিয়েছে, ভূমি সংস্কারে। পাশাপাশি, দেশের ৬ কোটি কৃষকের বিভিন্ন তথ্য নথিভুক্তকরণ এবং কর্মরত মহিলাদের হস্টেল নির্মাণেও বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এই তিনটি বিষয়ে রাজ্যগুলির জন্য বিপুল অর্থ বরাদ্দ করেছে মোদি সরকার। ভারতবর্ষের জিডিপির সবচেয়ে বড় অংশ আসে কৃষি ক্ষেত্র থেকে। তাই স্বাভাবিকভাবেই বাজেটে (Budget 2024) এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার জোর দিয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। অন্যদিকে, কর্মরত মহিলাদের হস্টেল নির্মাণের সিদ্ধান্তও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার ১০,০০০ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করেছে শহর ও গ্রামীণ ভারতে ভূমি সংস্কারের জন্য। ইতিমধ্যে কীভাবে চলবে ভূমি সংস্কারের এই কাজ, তার জন্য নয়া নির্দেশিকাও জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই নির্দেশিকা সামনে এসেছে গত ৯ অগাস্ট। আর এ বিষয়ে দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বক্তব্য রাখেন সংসদে তাঁর বাজেট অধিবেশনের দিন অর্থাৎ গত জুলাই মাসের ২৩ তারিখে। গ্রামীণ ক্ষেত্রে ভূমি সংস্কারের (Land Reform) জন্য কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিটি রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে, 'ইউনিক ল্যান্ড পার্সেল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর' (ULPIN) বা 'ভূ-আধার' নম্বর চালু করার বিষয়ে। এর পাশাপাশি, মহকুমা ভিত্তিক বিভিন্ন জমির মালিকানা নিয়েও সার্ভে ম্যাপ তৈরি করতে বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। শহর অঞ্চলে জিআইএস ম্যাপিং ব্যবস্থার মাধ্যমে ল্যান্ড রেকর্ড (Land Reform) করতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি রাজ্যগুলিকে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক ব্যবস্থাও গড়ে তুলতে বলা হয়েছে সম্পত্তির রেকর্ড করার জন্য।
অন্যদিকে, দেশের সমস্ত কৃষকদের নামসহ অন্যান্য তথ্য নথিভুক্তকরণের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে চলতি বছরের বাজেটে। এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে যাতে দেশের ৬ কোটি কৃষকের তথ্য সবসময় কেন্দ্রীয় সরকার রাখতে পারে। এর পাশাপাশি, তাঁরা যে জমিগুলিতে চাষ করেন তার নথিও সরকারের কাছে থাকবে এই ব্যবস্থার মাধ্যমে। এর ফলে, দেশের কৃষি ক্ষেত্রে গতি আসবে বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। একই সঙ্গে, এই ব্যবস্থা চালু হলে দেশের আসল ও নকল কৃষক বাছাই করা সহজেই সম্ভব হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় শুধুমাত্র অনুদান পেতেই অনেকে কৃষক সাজেন, কিন্তু কেন্দ্রীয় ভাবে দেশের চাষীদের সমস্ত তথ্য একজায়গায় থাকলে, দুর্নীতিও রোধ করা সম্ভব বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকার নজর দিয়েছে দেশের কর্মরত মহিলাদের অসুবিধাগুলিকে দূর করার জন্য। এই উদ্দেশ্যে পাঁচ হাজার কোটি টাকা মোদি সরকার বরাদ্দ করেছে কর্মরত মহিলাদের হস্টেল নির্মাণের জন্য। এনিয়ে চলতি বছরের বাজেট অধিবেশনেই বক্তব্য রেখেছেন দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই কর্মসূচির বাস্তবায়নের ফলে মহিলাদের কাজের প্রতি বা কর্মক্ষেত্রের প্রতি আগ্রহ আরও বাড়বে। কেন্দ্রীয় সরকারে এই পরিকল্পনা অনুযায়ী বলা হয়েছে, রাজ্য সরকার কর্মরত মহিলাদের হস্টেল বানানোর জন্য জমি দেবে অথবা জমি না থাকলে তা কেনার জন্য যে পরিমাণ অর্থ দরকার সেটা দেবে। এর পাশাপাশি, রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলকে অনুসরণ করার জন্য। এই ভাবেই হস্টেলগুলিকে চালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারে নির্দেশে এই হস্টেলগুলির মালিকানা রাজ্য সরকারের হাতে রাখার কথাই বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, রাজ্যগুলির মধ্যে কর্মরত মহিলাদের হস্টেল নির্মাণের জন্য সবথেকে বেশি অর্থ পেতে চলেছে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ। কারণ বিভিন্ন তথ্য থেকে উঠে এসেছে সব থেকে বেশি মহিলা উত্তরপ্রদেশেই কর্মরত রয়েছেন। এখানে কেন্দ্রীয় সরকার বরাদ্দ করেছে ৩৮২ কোটি টাকা। অন্যদিকে, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তরপ্রদেশের ঠিক পার্শ্ববর্তী রাজ্য মধ্যপ্রদেশ। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার বরাদ্দ করেছে ২৮৪ কোটি টাকা। তৃতীয় স্থানে রয়েছে অসম, এখানে কেন্দ্র বরাদ্দ করেছে ২২৬ কোটি টাকা।
এগুলি ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকার আরও নানারকমের আর্থিক সহায়তা করছে রাজ্যগুলিকে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন—
রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থানগুলিকে উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য ২,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র।
পুরনো ট্র্যাক্টর বাতিল করে (নতুন কেনার ক্ষেত্রে), আর্থিক সহায়তা দানের জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ ৩ হাজার কোটি টাকা।
শিল্পায়নের জোয়ার আনতে রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ করেছে ১৫ হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে দিল্লি এনসিআর অঞ্চলে কেন্দ্রীয় সরকার ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থানের উন্নয়নের জন্য।
বিভিন্ন গ্রামীণ ও শহুরে পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বরাদ্দ করেছে ১৫ হাজার কোটি টাকা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।