১৫ বছর বয়স পার করলে কোনও মুসলমান মেয়ে তাঁর পছন্দের মানুষকে বিয়ে করতে পারেন। সোমবার একটি মামলার প্রেক্ষিতে এমনই রায় দিল পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্ট
প্রতীকী ছবি
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মেয়ের বয়স সদ্য ১৫ পেরিয়েছে। বিয়ে দিতে চাইছেন? অথচ,নাবালিকা আইনে বিয়ে (Minor Marriage) আটকে যাচ্ছে? চিন্তা নেই, ১৫ পেরোলেই এবার মেয়ের বিয়ে দিতে পারবেন। রইল না কোনও আইনি বাধা। কারণ, সম্প্রতি, এমনই রায় দিয়েছে দেশের একটি হাইকোর্ট। তবে, কেবলমাত্র মুসলিম মেয়েরা এই ছাড় পাবেন। ১৫ বছর বয়স পার করলে কোনও মুসলমান মেয়ে তাঁর পছন্দের মানুষকে বিয়ে করতে পারেন। সোমবার একটি মামলার প্রেক্ষিতে এমনই রায় দিল পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্ট ( Punjab and Haryana High Court)।
সম্প্রতি, পাঠানকোটে ২১ বছরের এক মুসলিম যুবক এবং ১৬ বছরের একটি মুসলিম মেয়েকে পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। কিন্তু পরিবার তাঁদের আলাদা করতে চাইছে, এই অভিযোগ এনে নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ওই দম্পতি। সোমবার মামলার শুনানি হয় পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাই কোর্টে। বিচারপতি যশজিৎ সিং বেদী বলেন, ‘‘আবেদনকারীরা (দম্পতি) শুধু মাত্র তাঁদের পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করেছেন বলে ভারতীয় সংবিধান বর্ণিত মৌলিক অধিকার থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা যায় না।’’
আরও পড়ুন: ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত দিল্লি হাইকোর্ট, মামলা যেতে পারে শীর্ষ আদালতে
আদালতে আবেদনপত্রে ওই যুগল জানায়, তারা কিছুদিন আগে প্রেমে পড়ে। তারপর বিয়ে করতে চায়। গত ৮ জুন, মুসলিম আচার ও অনুষ্ঠান মেনে তাঁদের বিয়েও হয়ে যায়। কারণ, মুসলিম আইন অনুযায়ী ১৫ বছর বয়স হলেই সে বিবাহযোগ্য। আর, বিবাহযোগ্য মুসলিম ছেলে বা মেয়ে যে কোনও পছন্দের কাউকে বিয়ে করতে পারে। সেই স্বাধীনতায় কারও হস্তক্ষেপেরও অধিকার নেই। আদালতে ওই দম্পতির আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, নিরাপত্তার জন্য তাঁর মক্কেলরা পাঠানকোটের পুলিশ সুপারেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু, কোনও নিরাপত্তা পাননি। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই আদালত এই রায় দেয়।
বিচারপতি বেদী শরিয়ত আইন উল্লেখ করে বলেন, এক জন মুসলমান মেয়ের বিয়ে ‘মুসলমান ব্যক্তিগত আইন’ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। বিচারপতি জানান, স্যর দিনশাহ ফারদুনজি মোল্লার ‘প্রিন্সিপলস্ অব মহামেডান ল’ বইয়ের ১৯৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে, ১৬ বছরের বেশি বয়সি মেয়ে তাঁর পছন্দের ব্যক্তিকে বিয়ে করতে পারে। আর পাত্রের বয়সও যেহেতু ২১ বছরের বেশি, তাই এই বিয়েতে কোনও বাধা থাকতে পারে না। এই বিয়ে বৈধ। একইসঙ্গে আদালত পাঠানকোটের পুলিশ সুপারকে ওই দম্পতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দিয়েছে। আবেদনকারীদের পরিবার যেন ওই দম্পতির সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করতে না-পারে, তা দেখতে বলেছেন বিচারপতি।