Swami Vivekananda: স্বামীজির জন্মদিনই জাতীয় যুব দিবস, জানেন তার গুরুত্ব?
স্বামীজির জন্মদিনই জাতীয় যুব দিবস। সংগৃহীত চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পরাধীন ভারতের বীর সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ (National Youth Day 2025) উন্নত স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন দেখতেন। পরাধীনতার অন্ধকারে নিমজ্জিত গোটা জাতির বিবেক চেতনা জাগ্রত হবে, এই আকাঙ্খা ছিল স্বামী বিবেকানন্দের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। তাঁর লক্ষ্য ছিল দেশবাসীর মধ্যে জাত্যাভিমান বাড়ানো, দেশপ্রেম জাগানো। নিদ্রিত দেশের চেতনার উদয় না হলে দেশের উন্নতি সম্ভব নয় বলে জানিয়েছিলেন স্বামীজি। দেশের যুবশক্তির প্রতি স্বামীজির অমর বাণী, “উত্তিষ্ঠত জাগ্রত প্রাপ্য বরান্ নিবোধত।” অর্থাৎ “ওঠো! জাগো! এবং লক্ষ্য অর্জন না করা পর্যন্ত থেমো না।” তাঁর বাণী এখনও দেশের যুব সম্প্রদায়ের কাছে সমান প্রাসঙ্গিক। তাই সারা দেশে প্রতি বছর স্বামীজির জন্মদিন ১২ জানুয়ারি জাতীয় যুব দিবস পালিত হয়। রাষ্ট্রসংঘ ১৯৮৪ সালে 'আন্তর্জাতিক যুব বর্ষ' ঘোষণা করে। তারপর থেকেই ভারত সরকার প্রতি বছর স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকীকে জাতীয় যুব দিবস হিসাবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিখ্যাত দার্শনিক ও আধ্যাত্মিক নেতা স্বামী বিবেকানন্দের (National Youth Day 2025) জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় যুব দিবস পালিত হয়। ১৯৮৫ সালে প্রথমবার জাতীয় যুব দিবস উদযাপিত হয়। স্বামী বিবেকানন্দ বলতেন যে, তরুণরা হল জাতির মেরুদণ্ড। দেশের যুব সম্প্রদায় সামাজিক, রাজনৈতিক এবং আধ্যাত্মিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। সমাজ সংস্কারক, আধ্যাত্মিক নেতা, দার্শনিক এবং প্রেরণাদায়ক বক্তা স্বামী বিবেকানন্দের চিন্তাধারা আজও তরুণদের অনুপ্রাণিত করে চলেছে। এই দিন সারা দেশে যুবকদের উদ্দেশে বিবেকানন্দের (Swami Vivekananda) জীবন, কাজ এবং তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির স্মৃতিচারণ করা হয়।
১২ জানুয়ারি সারা দেশে জাতীয় যুব দিবস (National Youth Day 2025) পালিত হয়। এ উপলক্ষে তরুণদের কেন্দ্র করে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জাতীয় যুব দিবস উদযাপনের উদ্দেশ্য হল ভারতের যুব সমাজকে স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শ ও মহান চিন্তা সম্পর্কে সচেতন করা। প্রতি বছর একটি বিশেষ প্রতিপাদ্য নিয়ে যুব দিবস পালিত হয়।
জাতীয় যুব দিবস ২০২৫ এর থিম (National Youth Day 2025) হল "জাতি গঠনের জন্য যুব ক্ষমতায়ন"। এবার যুব দিবসে যে কর্মসূচিই থাকুক না কেন, জাতি গঠনে তরুণদের তাদের সামর্থ্য ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করা হবে। যুব দিবস পালনের জন্য স্থানীয়ভাবে কোনও ইভেন্টে অংশগ্রহণ করুন। যেখানে দক্ষতা উন্নয়ন, পরিবেশ সচেতনতা এবং সামাজিক কল্যাণের উপর জোর দেওয়া হবে। এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুপ্রেরণামূলক উদ্ধৃতি, গল্প এবং বার্তা শেয়ার করুন। স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষার উপর কিছু সময় চিন্তা করুন এবং কীভাবে সেগুলো আপনার দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করা যায়, তা নির্ধারণ করুন। জাতীয় যুব দিবস যুবসমাজকে দেশের উন্নতি ও সমাজের কল্যাণে আরও অনেক বড় ভূমিকা নিতে উৎসাহিত করে।
এবছর নয়াদিল্লির ভারত মণ্ডপে বিকশিত ভারত ইয়ং লিডার্স ডায়ালগ ২০২৫ (Viksit Bharat Young Leaders Dialogue 2025)-এ অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অনুষ্ঠানে সারা দেশের তিন হাজার গতিশীল তরুণ নেতার সঙ্গে মিলিত হবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী দশটি বিষয়ের উপর অংশগ্রহণকারীদের লেখা সেরা প্রবন্ধের একটি সংকলনও প্রকাশ করবেন। প্রবন্ধের অন্তর্গত মূল থিমগুলি হল প্রযুক্তি, স্থায়িত্ব, নারীর ক্ষমতায়ন, উৎপাদন এবং কৃষির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্র। দেশের যুব সমাজকে বারবার দেশ গঠনের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। স্বামীজির আদর্শে দেশের তরুণ সম্প্রদায়কে উদ্বুদ্ধ হওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
On the occasion of National Youth Day, PM @narendramodi to participate in the Viksit Bharat Young Leaders Dialogue 2025 on 12th January.
— DD India (@DDIndialive) January 11, 2025
PM Modi to interact with 3000 young leaders selected through a merit-based, multi-level selection process from over 30 lakh participants.… pic.twitter.com/tGbpqhk5Rd
যুব সমাজের প্রতি স্বামীজির বার্তা (Swami Vivekananda) ছিল “ওঠো , জাগো এবং লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না।” কাজ সম্পর্কে বিবেকানন্দের বার্তা, “সারাদিন চলার পথে যদি কোনও সমস্যার সম্মুখীন না হও, তাহলে বুঝবে তুমি ভুল পথে চলেছ।” শিকাগোর বক্তৃতা রাখতে গিয়ে বিবেকানন্দ শুরু করেছিলেন, 'ভাই ও বোন' বলে সম্বোধন করে। তাঁরই বক্তব্য, “জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।” চরিত্র গঠন সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য ছিল, “নিজের উপর বিশ্বাস না এলে, ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস আসে না।' তাঁর কথায়, “যে রকম বীজ আমরা বুনি, সে রকমই ফসল আমরা পাই। আমরাই আমাদের ভাগ্য তৈরি করি, তার জন্য কাউকে দোষারোপ করার কিছু নেই, কাউকে প্রশংসা করারও কিছু নেই।” সঙ্গে ভয়ডরহীন হয়ে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়ে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, “ভয়ই মৃত্যু, ভয়ই পাপ, ভয়ই নরক, ভয়ই অসাধুতা, ভয়ই ভুল জীবন। এই বিশ্বের সমস্ত নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনা ও ধারণা এই ভয়ের অসৎ শক্তি থেকেই সৃষ্টি হয়েছে।” স্বামী বিবেকানন্দের প্রতিটি বাণী এখনও সমান প্রাসঙ্গিক। তাঁর আদর্শ দেশের যুব সমাজকে তৈরি করতে পারে। তাঁর আদর্শে চলে উন্নত-আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলাই যুব-দিবস ২০২৫ এর লক্ষ্য।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।