৭১% অভিযোগ বুকিং প্রত্যাখান নিয়ে। ৪৫% অভিযোগ বাড়তি ভাড়া নিয়ে। ৩৮% অভিযোগ রাইড ক্যানসেল নিয়ে।
ওলা উবারকে কড়া হুঁশিয়ারি দিল্লির (ফাইল ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অ্যাপ ক্যাব বুক করেছেন। দেখাচ্ছে দশ মিনিটের অপেক্ষা কিন্তু সময় গড়াচ্ছে ঘড়িতে। বিশ-পঁচিশ মিনিট কেটে গেলেও গাড়ির টিকি নেই। এমন অভিজ্ঞতা আমাদের অনেকেরই আছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি বার যে ঘটনা ঘটেছে তা হল, অ্যাপ ক্যাব ড্রাইভার ফোন করে জানতে চাইলেন কোথায় যাবেন? গন্তব্য শোনার পর ফোনটা স্রেফ কেটে দিলেন। সঙ্গে কেটে দিলেন বুকিং লিঙ্কটাও। সেই পুরানো ট্যাক্সি রিফিউজালের মত। আপনি স্তম্ভিত। কিন্তু পালাবার পথ নেই। কারণ ততক্ষণে আপনি অ্যাপ ক্যাব জালে বন্দি। কারণ অ্যাপ তখন ফের গাড়ি খুঁজছে। আপনার ডেস্টিনেশনে। আবার সেই দীর্ঘতর অপেক্ষা এবং রিফিউজাল (Refusal) অথবা দেরি করে গাড়ি আসা। অ্যাপের ঘড়ি তখন আপনার ঘড়ির থেকে বহু ধীরে ঘুরছে।
অপেক্ষা আর প্রত্যাখ্যান তো আছেই। এমন আরও অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে নিত্য অ্যাপ ক্যাব ব্যবহারকারীদের। যেমন, যখন তখন বাড়তি ভাড়া বা সার্জ-প্রাইসিং (surge pricing)। যাত্রী হতবাক। পিক আওয়ার নয় তবু অ্যাপ ক্যাবের চার্জ পিকে কেন? প্রশ্ন করলে উত্তর নেই! কিন্তু গন্তব্যে যাওয়ার বাধ্যতা আছে। এরই মধ্যে আবদার আছে, "একটু বাড়তি (Extra Fare) দিয়ে দেবেন। বোঝেনই তো তেলের দাম..." এমন হাবভাব যেন আপনি নিজেই তেলের দাম বাড়িয়েছেন! সে কারণেই বুঝি খয়রাতির দায়ও আপনার!
অনেকের আবদার 'তেল কম এসি চলবে না'। আপনিও মেনে নেন। আগে তো সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাই। ঠান্ডা হাওয়া পরে খেলেও চলবে। এসির তাড়নায় তেল আরও কমে গেলে মাঝরাস্তায় বিপদ! এমন আবদারও শুনেছেন নিশ্চিত, ড্রাইভার যাত্রীকে বলছে, আপনি বুকিং ক্যানসেল (ride cancel) করে দিন। আমি করব না। আপনি ক্যানসেলও করলেন না আবার গাড়িও এল না। অন্য গাড়ি বুকিং-ও হল না।
এমন হাজারো অভিযোগ আসছিলই। এবার নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় কনজিউমার প্রোটেকশন অ্যাক্ট অথরিটি জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা দফতর (CCPA)। ওলা (Ola), উবার (Uber) সহ সব অ্যাপ ক্যাবের প্রত্যাখান (refusal) বাড়তি ভাড়া নেওয়া (surge pricing) ঘোষিত পরিষেবা না দেওয়া নিয়ে এবার কড়া পদক্ষেপ করতে চলছে কেন্দ্রীয় কনজিউমার প্রোটেকশন অ্যাক্ট অথরিটি (The Central Consumer Protection Authority) বা সিসিপিএ (CCPA)।
মঙ্গলবার চিফ কমিশনার নিধি খারে বিভিন্ন অ্যাপ ক্যাব কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠান। পরিষেবা নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের ব্যাখ্যা চায়। জানা গেছে প্রায় অভিযোগের ৭১% বুকিং প্রত্যাখান নিয়ে। আর ৪৫% শতাংশের অভিযোগ প্রায় দেড় থেকে দুগুণ বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন ড্রাইভাররা। ৩৮%-এর অভিযোগ যাত্রীকে ক্যানসেল করতে বাধ্য করা হচ্ছে। জানা গেছে, অ্যাপ-ক্যাব কর্তৃপক্ষকে সার্জ প্রাইসিং ও রাইড বাতিল করা নিয়ে নতুন নির্দেশিকাও দিচ্ছে জাতীয় উপভোক্তা নিগম, যা মেনে চলতে হবে সব পক্ষকেই। অন্যথায় কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে উবার-ওলাকে।
সিসিপিএ (CCPA) ওলা-উবার পরিচালকদের কাছে ৩০ দিন সময় দিয়েছে। তারমধ্যেই রাইড বাতিল, বাড়তি ভাড়া সংক্রান্ত বিষয়ে সতর্ক হতে বলেছে। নিজেদের ডেটাবেস থেকে কত রাইড বাতিল হয়েছে কি কারণে বাতিল সব তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী তিরিশ দিনের মধ্যে যাত্রী হেনস্থার সমস্যার সমাধান না হলে উবার-ওলার ভারতীয় নিয়ন্ত্রকদের বড়সড় জরিমানার মুখে পড়তে হবে বলে সতর্ক করেছে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা নিগম।