Padma Shri: তাঁর জন্ম হয়েছিল পাকিস্তানে। ৭১-এর যুদ্ধের সময় এক বছর সেনাবাহিনীতেও ছিলেন।
পদ্মশ্রী প্রাপক ডা. এম সি দাওয়ার
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বর্তমানে প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায় চিকিৎসকদের দায়িত্ব জ্ঞানহীনতা, অর্থ লোভের কাহিনী। এরই মধ্যে ব্যতিক্রমও রয়েছেন কেউ কেউ। এক চিকিৎসক রয়েছেন, তাঁকে এককথায় ঈশ্বরই বলা চলে। যেখানে কিছু চিকিৎসক এমন রয়েছেন, টাকা ছাড়া চিকিৎসাই করেন না, সেখানে এমন একজনও রয়েছেন, যিনি দিনের পর দিন মাত্র ২০ টাকাতেই চিকিৎসা করে চলেছেন। কেউ কেউ আবার সামান্য ২০ টাকা দিতেও পারেন না। কিন্তু তাতেও কোনও আপত্তি নেই এই ডাক্তারবাবুর। তাঁদেরকে বিনামূল্যেই চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তাঁকেই আজ পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করল কেন্দ্রীয় সরকার। তিনি হলেন ডা. এম সি দাওয়ার।
এখন বয়স ৭৭। রোগী দেখা শুরু করেছিলেন মাত্র দুই টাকা দিয়ে। পরিস্থিতির চাপে তা সামান্য বাড়াতে হয়েছিল। তাও সেটা সামান্য। দুই টাকার পরিবর্তে সেটা বাড়িয়ে করেন ২০ টাকা। চেম্বার খোলার আগেই রোগীগের লম্বা লাইন পড়ে যায়। এবারের পদ্ম সম্মান প্রাপকদের তালিকায় তাঁরও নাম রয়েছে। আসন্ন স্বাধীনতা দিবসে বাকিদের সঙ্গে তিনিও গ্রহণ করবেন পদ্ম সম্মান।
আরও পড়ুন: জীবন কাটছে জেলখানায় বন্দিদের মতো! চিনের শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের কী অবস্থা জানেন?
ডাক্তার আদতে পাক পাঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন। অবিভক্ত স্বাধীন ভারতে ১৯৪৬-য়ের ১৬ জানুয়ারি তাঁর জন্ম। দেশ ভাগের পরে পরিবার নিয়ে চলে আসেন। বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে বাড়ি ডা. এম সি দাওয়ারের। তাঁকে চেনেন না এমন কোনও লোক নেই সেই জেলায়। পাড়ার লোকজন বলেন, ‘ক্যাপ্টেন ডাক্তার’। কারণ একসময় ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে ভারত-পাক যুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর হয়ে লড়াই করেছিলেন। সেনা ক্যাম্পের ডাক্তারও ছিলেন। ১৯৭২ সাল থেকে নিজের চেম্বার খোলেন সাধারণ মানুষের জন্য। সেই সময় তাঁর ফি ছিল ২ টাকা। এখন হয়েছে ২০ টাকা। দিতে না পারলেও আপত্তি নেই। ডাক্তারবাবুর সাফ কথা, “মানুষটা তো আগে বাঁচুক।”
পদ্মশ্রীতে ভূষিত হওয়ার পরে, ডা. দাওয়ার সংবাদমাধ্যমে বলেন, “কঠোর পরিশ্রম ফল দেয়, এমনকি দেরি হলেও। এটি তারই ফল এবং এটি মানুষের আশীর্বাদ যে আমি এই পুরস্কার পেয়েছি।” নিজের জীবনের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “এত কম পারিশ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে অবশ্যই বাড়িতে আলোচনা হয়েছিল, তবে এটি নিয়ে কোনও বিতর্ক ছিল না। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল জনগণের সেবা করা, তাই ফি বাড়ানো হয়নি। সাফল্যের মূল মন্ত্র হল আপনি যদি ধৈর্য ধরে কাজ করেন তবে আপনি অবশ্যই সাফল্য পাবেন এবং সাফল্যও সম্মানিত হবে।”