কবে থেকে চালু হবে কলকাতা-আগরতলা ভায়া ঢাকা রেলপথ?
ভারতীয় রেল (ছবি-প্রতীকী)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মাতৃভাষা বাংলা এমন দুটি অঙ্গরাজ্য রয়েছে আমাদের দেশে। একটি পশ্চিমবঙ্গ, অপরটি ত্রিপুরা। অথচ কলকাতা থেকে আগরতলা ট্রেনপথে যেতে সময় লাগে ৩১ ঘণ্টা অর্থাৎ ১ দিনেরও বেশি। কারণ, বর্তমান ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বগামী সব ট্রেনকে উত্তরবঙ্গ হয়ে, অসম হয়ে যেতে হয়। তবে, অদূর ভবিষ্যতে এই চিত্র পাল্টাতে চলেছে। ভারতীয় রেলের উদ্যোগে, শীঘ্রই কলকাতা ও আগরতলার রেলযাত্রার সময় ১০ ঘণ্টায় নেমে আসতে চলেছে। হ্যাঁ, মাত্র ১০-ঘণ্টায় কলকাতা থেকে সরাসরি আগরতলা যাওয়া সম্ভব। কারণ, এবার নতুন উদ্যোগ অনুযায়ী, ভারতীয় রেলপথ সোজা বাংলাদেশ হয়ে সোজা পৌঁছে যাবে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে।
কোন রুটে এই ট্রেন চলাচল করবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে, রেল সূত্রে জানা যাচ্ছে, বর্তমান কলকাতা-ঢাকা রুটকেই বাড়িয়ে আখাউড়া করিডর হয়ে ত্রিপুরায় ট্রেন প্রবেশ করবে। বর্তমানে কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস রয়েছে। সূত্রের খবর, কলকাতা-আগরতলা রুটও ভায়া ঢাকা হবে। অর্থাৎ, কলকাতা থেকে শুরু হয়ে ঢাকা। সেখান থেকে সীমান্তের আখাউড়া হয়ে আগরতলা। জানা গিয়েছে, চলতি বছরেই বা আগামী বছরের শুরুতে ত্রিপুরার নিশ্চিন্তপুরের ইন্টারন্যাশনাল ইমিগ্রেশন স্টেশন থেকে বাংলাদেশের আখাউড়া জংশন পর্যন্ত ট্রেন চালাতে চাইছে রেল। এই কারণে ত্রিপুরা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত রেল লাইনের কাজ দ্রুত শেষ করতে আরও টাকা বরাদ্দ করল রেল (Indian Railway)। রেলসূত্রে খবর, এই প্রকল্পে ১৫৩.৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, দুই দেশের মধ্য রেলপথ নির্মাণের এই প্রকল্প অনুমোদন পায় ২০০৩ সালে। ১৫ কিমি এই রেল প্রকল্পে দুই দেশ স্বাক্ষর করে ২০১৩ সালে। প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হয় ২০১৬ সালে। এই বিশেষ প্রকল্পের ১৫ কিমি সংযোগের মধ্যে ৫.০৫ কিমি ভারতে ও বাকি ১০.০১৪ কিমি বাংলাদেশে রয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, প্রকল্পটি ২০২০ সালের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু করোনার কারণে কাজ পিছিয়ে যায়। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে যে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে ভারতীয় অংশের ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। অপরদিকে, বাংলাদেশের দিকে প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পটি ভারতের "অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি" এর অংশ বলে জানা গিয়েছে। এই অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির লক্ষ্য হল অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলা। উত্তর-পূর্ব ভারত এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেন, ‘‘এই কাজ শেষ হলে এবং ওই রুটে ট্রেন (Indian Railway) চলাচল শুরু হলে বাণিজ্য ক্ষেত্রে উন্নয়ন হবে। ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ আরও দৃঢ় হবে। একই সঙ্গে উত্তরপূর্ব ভারতের পর্যটন ক্ষেত্রে আরও গতি আসবে।’’ এই আন্তর্জাতিক স্টেশনটি যাত্রী ও পণ্য বিনিময় উভয়ের জন্য একটি ডুয়েল গেজ স্টেশন হিসাবে কাজ করবে।
রেলের আধিকারিকরা বলেন, ‘‘এই রেলপথের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে জিনিসপত্র আমদানি এবং রফতানি আরও সহজ হবে। ফলে সেখানের এবং বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন। রেল মন্ত্রক জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী উত্তর পূর্ব ভারতের উন্নয়নের দিকে জোর দিয়েছেন।’’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।