নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত নথি জমা দিতে বলে সুপ্রিম কোর্ট।
শীর্ষ আদালত
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরবিআই ও কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটবন্দির (Demonitisation) সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত যাবতীয় নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে এই মামলায় রায়দান স্থগিত রেখেছে বিচারপতি সৈয়দ আবদুল নাজিরের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। এরপরেই অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, যাবতীয় নথি মুখবন্ধ খামে আদালতকে দিতে হবে। এর আগে আরবিআইয়ের উদ্দেশ্যে সুপ্রিম কোর্টের তরফে প্রশ্ন করা হয়েছিল, নোটবন্দির প্রভাব সম্পর্কে সরকারকে অবগত করা হয়েছিল কিনা। আরবিআই কি সরকারকে জানিয়েছিল যে নোটবন্দির ফলে দেশের ৮৬ শতাংশ নোটই বাতিল হবে। এই আবহে এবার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত নথি জমা দিতে বলে সুপ্রিম কোর্ট। নোটবন্দি সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় ৫৮টি মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলাগুলির শুনানি চলছে।
আরও পড়ুন: এনজেএসি বাতিল করে শীর্ষ আদালত জনসাধারণের রায়কে উপেক্ষা করেছে, রাজ্যসভায় বললেন ধনখড়
এস আব্দুল নজিরের সাংবিধানিক বেঞ্চকে জবাবে আরবিআই এর পক্ষ থেকে আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত বলেন, "আড়ম্বরপূর্ণ শব্দ মনে হলেও, নোটবন্দি রাষ্ট্র গঠনের একটি বড় অংশ ছিল। অনেকের মতামত নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর বিরূপ প্রভাব সম্পর্কেও অবগত ছিলেন আধিকারিকরা। কেউ কেউ এক মত নাও হতে পারেন। সেটাই স্বাভাবিক।"
শুনানির সময় এক পর্যায়ে বিচারপতি বি.ভি. নাগারথনা, আইনজীবী গুপ্তকে ব্যাংক এবং এটিএম-এর বাইরে দীর্ঘ লাইনের কথা মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, "গোটা দেশ অর্থাভাবে ভুগেছিল।"
আবেদনকারীদের পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট পি চিদাম্বরম বলেন, "প্রতিটি ব্যাংকের (Demonitisation) কেবল সীমিত নগদ টাকা ছিল, যা তাদের শাখাগুলির মধ্যে বিতরণ করতে হয়েছিল। এমন কিছু ঘটনা ঘটেছিল, ১০০ জন লোক তাদের নোট পরিবর্তন করতে পেরেছিলেন। কিন্তু ১০১তম ব্যক্তিকে ফিরে আসতে হয়েছিল ব্যাংক থেকে।"
এর উত্তরে গুপ্ত বলেন, "কিছু কষ্ট হয়তো হয়েছে। তা প্রত্যাশিত ছিল না। কিন্তু প্রথম দিন থেকেই আমাদের সবকিছু ঠিক করা ছিল। একদিন টাকা বের করে পরের দিন রিমানিটাইজ করা সম্ভব নয়। অযথা কারও টাকা যাতে নষ্ট না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা হয়েছিল।"
তিনি আরও বলেন, "সকলকে একটি যুক্তিসঙ্গত সুযোগ এবং পুরোনো টাকা বদলে নেওয়ার যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছিল। যখনই সমস্যা দেখা দিয়েছে, নীতি পরিবর্তন করা হয়েছে। একটি কন্ট্রোল রুমও চালু ছিল।"
বিচারপতি নাগারথনা প্রত্যুত্তরে বলেন "নোট বদল (Demonitisation) করার শেষ দিন, ২০১৬ সালের ৩১শে ডিসেম্বরও বহু লোক ৫০০-১০০০ টাকার নোট বদল করতে না পেরে ফিরে এসেছেন। কারণ ব্যাংকের বাইরে দীর্ঘ লাইন ছিল।"
গুপ্ত জবাবে বলেন, "সেই সময়ে ব্যাংকগুলি ২৪ ঘণ্টা কাজ করত। ব্যাংক অফিসাররা সিস্টেমটিকে সমর্থন করেছিলেন।" বিচারপতি নাগারথনা বলেন, "ব্যাংকের লাইনে দাঁড়ানো অনেক লোকই হয়তো গৃহ সহায়ক এবং দিনমজুর ছিলেন, যারা পুরোনো মুদ্রায় বেতন পেয়েছিলেন এবং দিনের পর দিন তা বদল করার অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়েছেন।"
গুপ্ত যুক্তি দিয়ে বলেন, "পুরোনো নোটে বেতন দেওয়া অবৈধ ছিল (Demonitisation)। ৯ নভেম্বর থেকে, নতুন নোটগুলিই একমাত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
Tags: