PM Modi: "বহু মানুষের পথপ্রদর্শক ছিলেন এম এস স্বামীনাথন"! প্রখ্যাত কৃষিবিজ্ঞানীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এমএস স্বামীনাথন।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেশে দুর্ভিক্ষ রোখার জন্য এবং কৃষিক্ষেত্রে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে ছয়ের দশকের শেষ দিক থেকে ভারত সরকার যে ‘সবুজ বিপ্লব’-এর সূচনা করে, তার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন এম এস স্বামীনাথন। ষাটের দশকে ভারতে উদ্ভূত খাদ্য সঙ্কট এবং খাদ্যশস্যের জন্য বিদেশি রাষ্ট্রনির্ভরতা যে অনেকাংশে কমানো গিয়েছিল, তার পিছনে বড় অবদান ছিল প্রখ্যাত কৃষিবিজ্ঞানী এম এস স্বামীনাথনের। বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ের বাড়িতে জীবনাবসান হয় তাঁর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর।
স্বামীনাথনের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোশ্যাল সাইটে শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী লেখেন, “কৃষিতে বৈপ্লবিক অবদানের বাইরেও ডক্টর স্বামীনাথন ছিলেন উদ্ভাবনী ক্ষমতার ভরকেন্দ্র। বহু মানুষের পথপ্রদর্শক ছিলেন তিনি। গবেষণার প্রতি তাঁর সঙ্কল্প বহু বিজ্ঞানী এবং গবেষককে অনুপ্রাণিত করেছিল।”
Deeply saddened by the demise of Dr. MS Swaminathan Ji. At a very critical period in our nation’s history, his groundbreaking work in agriculture transformed the lives of millions and ensured food security for our nation. pic.twitter.com/BjLxHtAjC4
— Narendra Modi (@narendramodi) September 28, 2023
স্বামীনাথনের জন্ম ১৯২৫ সালের ৭ অগস্ট, তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর জেলায়। ১১ বছর বয়সে হারিয়েছেন বাবাকে। জেনারেল সার্জেন এমকে সাম্বসিবনের ছেলে স্বামীনাথন ১৫ বছর বয়সে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। তাঁর উচ্চশিক্ষা শুরু হয় জুলজির হাত ধরে কেরলে। পরবর্তীতে তিনি মাদ্রাজ, দিল্লি ও আরও পরে নেদারল্যান্ডস, ইউকে, আমেরিকা থেকে একের পর এক ডিগ্রি সঞ্চয় করেন ও উচ্চশিক্ষা এগিয়ে নিয়ে যান।
বিদেশে পড়াশোনায় একটা বড় সময় কাটালেও স্বামী বিবেকানন্দের ভক্ত স্বামীনাথনকে নাড়িয়ে দিয়েছিল ১৯৪৩ সালের বাংলার দুর্ভিক্ষ। দেশের মানুষের মুখে খাবার যোগাতে তিনি কৃষি গবেষণায় মন দেন। উন্নত বীজ, জলসেচের মাধ্যমে দেশের পশ্চিম অংশ, মূলত পাঞ্জাবে তিনি আমূল পরিবর্তন আনেন। কৃষিবিজ্ঞানী হিসাবে উচ্চফলনশীল ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।
দীর্ঘদিন কৃষি গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এম এস স্বামীনাথন। মূলত মিশ্র চাষ, চাষে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার, ফসলে শংকর প্রজাতির ব্যবহার নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা করেছেন তিনি। ধানের নতুন নতুন প্রজাতি আবিষ্কারের জন্য গোটা বিশ্বে স্বীকৃত স্বামীনাথন। তিনি আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা সংস্থার ডিরেক্টর হিসাবেও দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন যোজনা কমিশনের সঙ্গেও। প্ল্যান্ট জেনেটিক্সের ক্ষেত্রে তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজই ভারতের কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছিল। টেকসই কৃষি ব্যবস্থার মাধ্যমে খাদ্য সুরক্ষা বাস্তবায়িত হয়েছিল দেশে। এই সাফল্য তাঁকে এনে দিয়েছিল বিশ্বব্যাপী পরিচিতি। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের প্রধান পদে ছিলেন। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি গবেষণা এবং শিক্ষা দফতরের সচিবের দায়িত্বও সামলান।
আরও পড়ুন: কম বয়সেও হার্ট অ্যাটাক! বিশ্ব হার্ট দিবসে জানুন হৃদযন্ত্র ভাল রাখার সহজ কিছু উপায়
কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ১৯৭১ সালে রমন ম্যাগসাইসাই পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় স্বামীনাথনকে। পদ্মশী, পদ্মভূষণ এবং পদ্মবিভূষণ পুরস্কারেও ভূষিত হন তিনি। ২০০৭ এবং ২০১৩ সালে পর পর দু’বার রাজ্যসভায় মনোনয়ন দেওয়া হয় তাঁকে। ১৯৮৬ সালে পেয়েছেন অ্যালবার্ট আইস্টাইন অ্যাওয়ার্ড। কর্মজীবন থেকে অবসরগ্রহণের পরেও দেশ-বিদেশের একাধিক পরিবেশগত এবং কৃষি সংক্রান্ত সংস্থায় পরামর্শদাতা কিংবা সদস্য হিসাবে কাজ করেছেন তিনি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।