ইতিহাস সংশোধন প্রয়োজন। এগিয়ে আসুন ইতিহাসবিদরা আর্জি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
আলোচনায় মগ্ন অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদি।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতের ইতিহাস কেবলমাত্র দাসত্বেরই নয়। ভারতের উজ্জ্বল ইতিহাসে বহু যোদ্ধাও রয়েছেন। তবে ইতিহাসের পাতায় সকলের নাম উল্লেখ নেই। তাঁদের নাম ইতিহাসের পাতায় তুলে ধরতে হবে বলে অভিমত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Prime Minister Narendra Modi)। অসমের সরাইঘাট যুদ্ধের হিরো কম্যান্ডার জেনারেল লাচিত বারফুকানের (Lachit Barphukan) ৪০০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে এই কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী। একই দিনে লাচিত বারফুকানকে নিয়ে আর একটি অনুষ্ঠানে ইতিহাসবিদদের নতুন করে ইতিহাস লেখার আর্জি জানানলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)।
এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত তার বিচিত্র ঐতিহ্য উদযাপন এবং বীরদের স্মরণ করার মাধ্যমে অতীতের ভুল সংশোধন করেছে। তিনি বলেন, "ঔপনিবেশিক আমলের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে রচিত ইতিহাসের পাতা থেকে বহু বীরদের কথা হারিয়ে গিয়েছে। ভারতের ইতিহাস যোদ্ধাদের ইতিহাস, বিজয়ের ইতিহাস, আত্মত্যাগ, নিঃস্বার্থতা ও বীরত্বের ইতিহাস।" মোদী বলেন, স্বাধীনতার পরও যে ইতিহাস পড়ানো হচ্ছে তা, ঔপনিবেশিক আমলের ষড়যন্ত্রের স্বীকার। তিনি বলেছেন, "স্বাধীনতার পর দাসত্বের উদ্দেশ্য পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল। তবে তা করা হয়নি।"
আরও পড়ুন: জামা মসজিদে মেয়েদের ‘একা’ ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা! ‘‘এটা ইরান নাকি?’’ তোপ মহিলা কমিশনের
প্রসঙ্গত, ১৬২২ খ্রিস্টাব্দের ২৪ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন লাচিত বারফুকন। তিনি অহম রাজ প্রতাপ সিংয়ের অধীনস্ত অহম বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন। প্রবল পরাক্রমী মুঘল সেনাবাহিনীও লাচিত এবং তাঁর বাহিনীর কাছে হার মানত। ১৬৭১ সালের সরাইঘাটের যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। লাচিত বারফুকনের বীরত্ব এবং সরাইঘাটের যুদ্ধে অহম বাহিনীর বিজয়কে স্মরণ করার জন্য ২৪ নভেম্বর অসমে লাচিত দিবস পালিত হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদির কথায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দাসত্বের বিরুদ্ধে বীর পুরুষ, নারীরা গর্জে উঠেছেন। তবে ইতিহাসের পাতায় তাদের জায়গা হয়নি। এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ কাজ করা হয়েছে। লাচিত বারফুকনের জীবন আমাদের পরিবারের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের কথা ভাবতে শেখায়। আমরা বুঝতে পারি, দেশের থেকে কোনও সম্পর্ক বড় নয়।"
দিল্লিতে অসম সরকারের একটি অনুষ্ঠানে ইতিহাসবিদদের নতুন করে দেশের ইতিহাস লেখার জন্য আহ্বান জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, "যে লিখিত ইতিহাস আমরা জানি, তা অনেক সময়ই সঠিক নয় এবং কোথাও কোথাও বিকৃতও। আমি ইতিহাসের একজন ছাত্র। বহুদিন ধরেই শুনে আসছি আমাদের ইতিহাস ঠিকভাবে পরিবেশন করা হয়নি। হয়তো সেটা সত্য়ি কথাই। কিন্তু এবার আমাদের সেটা সংশোধন করতে হবে।” দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ইতিহাসের ছাত্র ও ইতিহাসবিদদের প্রতি তাঁর আবেদন, "আমাদের ইতিহাস সঠিক নয়, এই বক্তব্যকে পেরিয়ে নতুন করে গবেষণা শুরু করুন। একবার সেই ইতিহাস লেখা হলে, মিথ্যাভাষণের এই ধারাকে মুছে দেওয়া যাবে।” তিনি বলেন, দেশের এমন ৩০ টি মহান শাসনকালকে বেছে নিয়ে ইতিহাস লেখা হোক যাঁরা ১৫০ বছরেরও বেশি রাজত্ব করেছে, বেছে নেওয়া যাক ৩০০ এমন যোদ্ধাকে যাঁদের সাহস অনুপ্রাণিত করে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।