RSS: এসসি পড়ুয়াদের মহাকুম্ভ দর্শনে আধ্যাত্মিক জাগরণের পাঠ দেবে আরএসএস...
কুম্ভমেলায় পড়ুয়াদের আধ্যাত্মিক যাত্রা করাবে আরএসএস। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (RSS) ৮০০০ তপশীলি ও সুবিধাবঞ্চিত ছাত্র-ছাত্রীদের ভারতীয় ঐতিহ্য এবং পরম্পরার সঙ্গে সংযুক্ত করতে আধ্যাত্মিক যাত্রা ‘পূর্ণ মহাকুম্ভ দর্শন' করানোর বিশেষ কর্মকাণ্ড গ্রহণ করেছে। তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তপশীলি জাতি এবং অন্যান্য দিক থেকে সামজিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পড়ুয়ারাই থাকবে। সঙ্ঘের শিক্ষা বিষয়ক সংগঠন বিদ্যাভারতী এই পড়ুয়াদের ভারতের আবহমান কালের সংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের মহাসঙ্গমকে (Mahakumbh Mela 2025) হাতে কলমে দেখার সৌভাগ্য প্রদান করবে। তবে সঙ্ঘের এই ভাবনার মূলে রয়েছে কেবলমাত্র বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশে যাওয়া নয়, দারিদ্রতার কারণে আধ্যাত্মিক পরিসর থেকে দূরে থাকা ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ধর্মভাব, আস্থা এবং বিশ্বাস যুক্ত ভারতীয়ত্ববোধ জাগরণের প্রচেষ্টা।
আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে এই 'কুম্ভদর্শন যাত্রা' শুরু হবে। উত্তর প্রদেশের অবধ থেকে ২১০০ পড়ুয়াদের প্রাথমিকভাবে এই আধ্যাত্মিক যাত্রায় প্রয়াগরাজে পাঠানো হবে। এই পড়ুয়াদের মধ্যে সকলের বয়স প্রায় ১০ বছরের ঊর্ধে। সকলেই বিদ্যাভারতীর (RSS) স্কুলের পড়াশুনা করে। উল্লেখ্য সকল ছাত্র-ছাত্রীরা সামাজিক ভাবে আর্থিক দৃষ্টিকোণে দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। এই মহাকুম্ভ দর্শনের (Mahakumbh Mela 2025) প্রধান উদ্দেশ্য হল, ভারতের পিছিয়ে পড়া সমাজের ভাবী প্রজন্মরা যাতে ধর্মান্তরকরণের শিকার না হয় এবং সেই দিকে নজর দিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। হিন্দু ঐতিহ্য এবং সংস্কারের রূপ সম্পর্কে বিশেষ ধারণা নিয়ে মূল্যবোধের জায়গাকে শক্তিশালী করাই প্রধান উদ্দেশ্য।
এই মহাকুম্ভে (Mahakumbh Mela 2025) দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর সাধু, সন্ত, সন্ন্যাসী, মুনি, যোগী, ঋষি-সহ প্রচুর পরিমাণে ভক্তের সমাগম হয়েছে। সাধুরা আবার মেলায় নিজের নিজের আখাড়া বা শিবির নির্মাণ করেছেন। এই শিবিরগুলিকে খুব কাছ থেকে দর্শন করানোর ব্যবস্থা করবে সঙ্ঘের বিদ্যাভারতী শাখা। আখড়াগুলিতে কীভাবে আধ্যাত্মিক সাধনা করা হয়, তাঁদের বেঁচে থাকার অভিপ্রায় কেমন? ঈশ্বরের স্বরূপ কীভাবে দেখা হয়, তাঁদের রীতিনীতি, পুজাচার এবং মূল দর্শন কেমন, তা পরিদর্শনের মধ্যে থাকবে। মেলায় পুণ্য স্নান, অমৃত স্নান কেন করা হয়? ইতিহাস কী? পুরাণে কী গল্প কথা রয়েছে? ত্রিবেণী সঙ্গমের অর্থ কী, জীবন কেমন, জগত কেমন, জন্মান্তরবাদ কী, ইত্যাদি বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হবে এই আধ্যাত্মিক যাত্রায়। লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পাপ কী? পুণ্য কী, স্নানে মোক্ষ কীভাবে মিলবে এই সব কিছুর সঙ্গে আধ্যাত্মিক যোগ কেমন, এই সব কিছুকে পড়ুয়াদের কাছে তুলে ধরা হবে।
অবধের সঙ্ঘের (RSS) সেবা ভারতী স্কুলের এক শিক্ষক রামজি সিং বলেন, “আমাদের কাছে এই আধ্যাত্মিক যাত্রার আসল বিষয় হল পড়ুয়াদের ভারতীয় সংস্কৃতির মূল শিকড়ের কাছে নিয়ে যাওয়া। কেবল কুম্ভের জাগতিক বাস্তবতা নয়, কুম্ভ (Mahakumbh Mela 2025) যে একই সঙ্গে আধ্যাত্মিক ভাবে ধর্মের সারকথা তুলে ধরে, সেই বার্তাকে ওদের মনে গেঁথে দেওয়া আমাদের প্রধান কাজের মধ্যে পড়বে। পড়ুয়ারা কীভবে মন দিয়ে জ্ঞান অর্জন করবে এবং সচেতন হবে, সেই বিষয়ে পাঠ দেওয়া হবে। ফলে আগামীদিনে যে কোনও রকম ধর্মান্তকরণ গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখা এই ছাত্র সমাজের একটা বড় কাজ হবে। এই পড়ুয়ারা নিজেদের কঠিন পরিস্থিতি এবং সমস্ত রকম প্রতিবন্ধকতাকে সরিয়ে ধীরে ধীরে মূল স্রোতের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে।”
বিদ্যাভারতী (RSS) মূলত বুনিয়াদি শিক্ষার পরিকাঠামোতে ভারতীয়ত্ববোধ বিষয়ে বিশেষ পাঠ্যক্রমে শিক্ষা প্রদান করে থাকে। একই ভাবে পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ভাবে 'ভারত মাতা কি জয়' স্লোগান, দেশাত্মবোধ, ধর্মীয় আস্থা এবং সংস্কার বিষয়ে শিক্ষা প্রদানের কাজ করে থাকে। তবে কুম্ভমেলা শুধুমাত্র একটি ভ্রমণ নয়। জানা গিয়েছে, পড়ুয়া এবং অভিভাবকেদের যাত্রা যাতে চিত্তাকর্ষক, আরামদায়ক এবং শিক্ষামূলক হয় তার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা করেছে বিদ্যাভারতী। মেলার (Mahakumbh Mela 2025) ৯ নম্বর সেক্টরে এই পড়ুয়াদের জন্য একটি বিশেষ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই ভাবে তাদের জন্য পানীয় জল, খাবার এবং নানা বিনোদনের উপকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী ২৪ থেকে ২৬ জানুয়ারি ছাত্রছাত্রীদের আরেকটি দল গোরক্ষপুর, কানপুর এবং কাশী থেকে নিয়ে আসা হবে। একই ভাবে পূর্বাঞ্চলের পাশাপাশি পশ্চিমাঞ্চলের পড়ুয়াদেরও এরকম আধ্যাত্মিক যাত্রায় যোগদান করানো হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।