কী জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা...?
প্রতীকী ছবি
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মাত্র ৬ বছর বয়সেই চলে গেল কুনো জাতীয় উদ্যানের চিতা উদয়। চিকিৎসকরা বলছেন, এক মারাত্মক অসুখ বাসা বেঁধেছিল আফ্রিকার নামিবিয়া (African Cheetah) থেকে ভারতে নিয়ে আসা চিতাটির শরীরে। গত এক মাসে পরপর দুই চিতার মৃত্যু ভাবিয়ে তুলেছে বন দফতরকে। ইতিমধ্যে চিতা উদয়ের ময়নাতদন্ত ও নেক্রোপসির রিপোর্ট সামনে এসেছে যা রীতিমতো চিন্তা বাড়িয়েছে বনকর্মীদের।
উদয়ের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করতে তৈরি করা হয়েছিল ৫ সদস্যের চিকিৎসকের দল। তাঁরা জানাচ্ছেন, কুনোর এই দ্বিতীয় চিতার মৃত্যুর কারণ, কার্ডিয়ো পালমোনারি ফেলিওর। প্রধান বন্যপ্রাণ সংরক্ষক জেএস চৌহান বলেছেন, ‘পশু চিকিৎসকেরা চিতাটির (African Cheetah) মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করে দেখেছেন। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, মৃত্যুর কারণ কার্ডিয়ো পালমোনারি ফেলিওর। কিন্তু এই কার্ডিয়াক ফেলিওরের কারণ কী? সেই রিপোর্টও হাতে পেয়েছেন বন আধিকারিকরা।
পশু চিকিৎসকরা বলছেন, চিতা (African Cheetah) উদয় মারাত্মক বটুলিজম অসুখে ভুগছিল। একধরনের স্নায়ুর রোগ যা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে হয়। শরীরে টক্সিন ঢোকে এবং তার থেকেই ধীরে ধীরে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র বিকল হতে শুরু করে। রোগটি লক্ষণ দুর্বলতা, ঝাপসা দৃষ্টি, ক্লান্তি এবং কথায় জড়তা দিয়ে শুরু হয়। এরপরে হাত, বুকের পেশী এবং পা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। বমি বমি ভাব, পেট ফুলে যাওয়া এবং ডায়রিয়াও হতে পারে।
চিতা উদয়ের মধ্যেও একই উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। হাঁটাচলা করতে কষ্ট হচ্ছিল তার। প্রায় পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল। ঝাপসা হয়েছিল দৃষ্টি। খেতেও পারছিল না উদয়। তাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অন্য এনক্লোজারে। সেখানেই মৃত্যু হয় তার।
Madhya Pradesh | Another Cheetah, Uday, who was brought from South Africa, has died during treatment after falling ill at Kuno National Park. Reason for death is yet to be ascertained: MP Chief Conservator of Forest JS Chauhan pic.twitter.com/2IHPMCji2L
— ANI (@ANI) April 23, 2023
দক্ষিণ আফ্রিকার পশু চিকিৎসক আদ্রিয়ান টরডিফে বলছেন, বটুলিজম এমন এক রোগ যা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে হয়। এটির কারণ এন্ডোস্পোর। মাটি, জল ও খাবার থেকে শরীরে ঢুকতে পারে। অক্সিজেনের মাত্রা কম হলে বা নির্দিষ্ট কোনও তাপমাত্রায় এলে এরা বোটুলিনাম টক্সিন তৈরি করে। টক্সিনযুক্ত খাবার খেলে শরীরে ক্লোসট্রিডিয়াম বটুলিনাম ব্যাকটেরিয়ার বাড়বৃদ্ধি হয়। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। পক্ষাঘাত দেখা দেয়, দুর্বল হয়ে পড়তে পারে শরীর। কার্ডিয়াক ফেলিওর হতে পারে। চিতা (African Cheetah) উদয়েরও তাই হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। কৃষিক্ষেত্রে অত্যধিক সার, কীটনাশক থেকে অথবা বিষাক্ত জল, খাবার থেকে পশুদের শরীরে এই রোগ হয়। জল থেকেও রোগ ছড়াতে পারে। চিতার শরীরে কীভাবে ব্যাকটেরিয়া ঢুকল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
Tags: