Nilkanth Mahadev Mandir: উত্তরপ্রদেশের শামসি শাহী মসজিদ আদতে হিন্দু শৈব মন্দির, ইতিহাস জানেন?
বিতর্কিত শামস শাহী মসজিদ হল শৈব মন্দির। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁর শামসি শাহী মসজিদ (Shamsi Shahi Masjid) হল হিন্দু নীলকণ্ঠ মহাদেবের মন্দির (Nilkanth Mahadev Mandir)। ঐতিহাসিক তথ্য এবং প্রমাণ তুলে ধরে হিন্দুরা মসজিদ থেকে মন্দির উদ্ধারের জন্য দাবি তুলেছেন। ইতিমধ্যে মামলা আদালতে গড়ালে আইনি লড়াইকে দ্রুত নিস্পত্তি করতে ফাস্ট-ট্র্যাক কোর্ট গঠন করা হয়। ৩ ডিসেম্বর মামলার শুনানি ছিল আদালতে কিন্তু মুসলিম পক্ষ উপস্থিত না থাকায় আগামী ১০ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়। সম্ভলের মসজিদ যেমন হরিহর মন্দির ঠিক, একই ভাবে শামসিও শৈব মন্দির। আসুন জেনে নিই এই মন্দিরের ইতিহাস।
হিন্দু পক্ষ থেকে মুকেশ প্যাটেল দাবি তুলে বলেন, “বদায়ুঁর শামসি শাহী মসজিদের (Shamsi Shahi Masjid) বিতর্কিত কাঠামোটি আদতে শিবের মন্দির। প্রথমে সিভিল জজ সিনিয়র ডিভিশন ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে বাদী-বিবাদী পক্ষ নিজেদের বিষয় রাখবেন। মুসলিম পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখার কথা ছিল। কিন্তু তাঁরা উপস্থিত ছিলেন না। মন্দিরের (Nilkanth Mahadev Mandir) সম্পূর্ণ এলাকা প্রত্নতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের তরফ থেকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। মামলার বিষয় যেহেতু ধর্মীয় সংবেদনশীলতায় পূর্ণ তাই নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।” আবার হিন্দুপক্ষের আইনজীবী বেদ প্রকাশ সাহু বলেন, “মুসলিমপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশ্য মামলাটি দীর্ঘায়িত করা। একই ভাবে তাঁরা মামলায় যুক্তির নামে আমাদের সময় এবং আদালতের সময় নষ্ট করতে চাইছে।”
আরও পড়ুনঃ স্বর্ণমন্দিরে অকালি প্রধান সুখবীর সিং বাদলকে লক্ষ্য করে চলল গুলি, ধৃত হামলাকারী
প্রসঙ্গত স্থানীয় হিন্দু পরম্পররা ইতিহাস সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জামে মসজিদ শামসি (Shamsi Shahi Masjid) তৈরি হয়েছে হিন্দু দেবতা নীলকণ্ঠ মহাদেবের মন্দিরটিকে (Nilkanth Mahadev Mandir) ভেঙে ফেলার মাধ্যমে। এক সময় এই মসজিদ কাঠামোর উপর শৈব মন্দির দাঁড়িয়ে ছিল। আবার পাল্টা মুসলিম পক্ষের দাবি, মসজিদ যে মন্দির ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছে তার কোনও উল্লেখ নেই। এই শামসি মসজিদটি সুফি সাধক বাদশা শামসুদ্দিন আলতামাশ নির্মাণ করেছিলেন। এই এলাকায় আল্লার ইবাদত করতে এই মসজিদ স্থাপন হয়েছিল।
উত্তরপ্রদেশে বদায়ুঁ জেলার গেজেটিয়ারের মতো ঐতিহাসিক নথি এই মন্দির বিতর্কটিকে ব্যাপকভাবে চাঞ্চাল্য তৈরি করেছে। গেজেটিয়ার থেকে জানা গিয়েছে, শামসি শাহী মসজিদটি (Shamsi Shahi Masjid) মন্দিরের (Nilkanth Mahadev Mandir) ভাঙা পাথরের উপর নির্ভর করে গড়া হয়েছে। শহরের মৌলভি টোলা এলাকার উচু জায়গায় রয়েছে। আগে এই এলাকায় প্রচুর হিন্দু বসবাস করত। এখানেই উঁচু স্থানে মন্দির প্রথমে ছিল, যা পরে মসজিদের জন্য জায়গা নির্ধারিত করা হয়। এখানকার প্রথম গভর্নর শামস-উদ্দিন ইলতুৎমিশ ১২০২ থেকে ১২১০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তাঁর শাসনামলে মসজিদের নির্মাণ হয়। মসজিদের মিহরাবের পাশে ছোট খোদাই করা স্তম্ভ, যা পুরানো হিন্দু মন্দিরের অংশ। উত্তর থেকে দক্ষিণে মোট বিস্তৃতি হল আনুমানিক ৮৫.৩ মিটার।
ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, প্রাচীন মন্দিরের বেলে পাথরের ব্লকগুলি মসজিদ (Shamsi Shahi Masjid) নির্মাণের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। একই ভাবে দুই পাশে দণ্ডায়মান স্তম্ভগুলি হিন্দু ভবন থেকে নেওয়া হয়েছে। তবে মসজিদের জন্য কিছুটা ছোট করা হয়েছে। একইভাবে গাঙ্গেয় প্রদেশ ভ্রমণের রিপোর্ট (১৮৫৭-৭৬ এবং ১৮৭৭-৭৮) সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মসজিদ হল আদতে পালরাজা মহিপাল দ্বারা নির্মিত হরমান্দর নামে একটি মন্দির। খুব পরিকল্পনার সঙ্গে ইসলামি আক্রমণের সময় মন্দিরটিকে ভেঙে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। একই ভাবে মসজিদের গাত্রে হিন্দু শৈলী, শিল্পকলা, নকশা এবং নানাবিধ উপকরণ লক্ষ্য করা গিয়েছে। এত সব প্রমাণের উপর নির্ভর করে হিন্দু পক্ষের দাবি এই মসজিদ আগে হিন্দু মন্দিরই (Nilkanth Mahadev Mandir) ছিল।
উল্লেখ্য এই মামলায় ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক মন্ত্রককে পক্ষ করা হয়েছে। এই মসজিদ (Shamsi Shahi Masjid) কাঠামো বিতর্কে ২০২২ সালে প্রথম মামলা দায়ের করা হয়েছিল। একই ভাবে গত ২৪ নভেম্বর সম্ভলে মসজিদ জরিপ করতে গেলে সরকারি কাজে বাধা দিয়ে উস্কানি ছড়ায় উন্মত্ত মুসলমানরা। তদন্তে দুষ্কৃতীরা যে অস্ত্র ব্যবহার করেছেন তাতে পাকিস্তান-আমেরিকার নাম এসেছে। ফলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন মসজিদের কবল থেকে মন্দিরকে (Nilkanth Mahadev Mandir) পুনঃপ্রতিষ্ঠা যথার্থ ভাবে হিন্দু সংস্কৃতির পুনঃজাগরণ বটে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।