ইউ ইউ ললিতের সভাপতিত্বে একটি বেঞ্চ ১৫ আগস্ট, ১৯৪৭-এ প্রচলিত উপসনাস্থল আইন সম্পর্কে তুষার মেহতাকে এই প্রশ্নটি করেন।
সুপ্রিম কোর্ট
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২০১৯ সালেই মিটে গিয়েছে বহু বিতর্কিত অযোধ্যা মামলা। কিন্তু সেই রায়ে কি ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল আইনে বৈধতা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব মিলেছে? প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত এমনই প্রশ্ন রেখেছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার কাছে। তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টকে জানাল, উপাসনাস্থল আইনে বৈধতা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব কভার করা হয়নি অযোধ্যা মামলার রায়ে। প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের সভাপতিত্বে একটি বেঞ্চ ১৫ আগস্ট, ১৯৪৭-এ প্রচলিত উপসনাস্থল আইন সম্পর্কে তুষার মেহতাকে এই প্রশ্নটি করে।
বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাট এবং অজয় রাস্তোগির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাঁকে প্রশ্ন করে, "অযোধ্যা রায় কি ১৯৯১ সালের উপাসনা আইন কভার করে? আপনার ব্যক্তিগত মতামত কী?" মেহতা জবাব দেন, "না কভার করে না।"
আরও পড়ুন: ফের আইনি গেরোয় প্রাথমিকে নিয়োগ, বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা
প্রসঙ্গত, উপাসনাস্থল আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টে মামলাকারী উপাধ্যায়ের যুক্তি, উপাসনাস্থল আইন বৈষম্যমূলক। এর ফলে হিন্দু, জৈন, বৌদ্ধরা বঞ্চিত হচ্ছেন। আবেদনকারী অশ্বিনী উপাধ্যায়ের পক্ষে সওয়াল করা প্রবীণ আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী বলেছেন অযোধ্যা রায়ে করা মন্তব্যগুলি নিছক 'নির্দেশ' এবং এতে আইনের বল নেই। এদিকে আবেদনকারী বিশ্ব ভদ্র পূজারি পুরোহিত মহাসঙ্ঘের পক্ষে উপস্থিত হওয়া অ্যাডভোকেট পিবি সুরেশ, বিপিন নায়ার এবং বিষ্ণু শঙ্কর জৈন বলেছেন, "অযোধ্যা মামলায় সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে ১৯৯১ সালের আইনের বৈধতার বিষয়টি উত্থাপিত হয়নি।"
দ্বিবেদী বলেন, "১৯৯১ সালের আইনটি কোনও আলোচনা ছাড়াই পাশ করা হয়েছিল। জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে আদালতের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ।"
আদালত মেহতাকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে, পিটিশনগুলির প্রতিক্রিয়া জানাতে কেন্দ্র কত সময় নেবে? এ বিষয়ে তিনি বলেন, "বিষয়টির সংবেদনশীলতা বিচার করে সরকারের আরও দু সপ্তাহ সময় লাগবে।" তাঁর আবেদন মঞ্জুর করে বেঞ্চ ১৪ নভেম্বর বিষয়টি বিবেচনার জন্য ধার্য করেছে।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের অযোধ্যা রায়ে বলা হয়, "১৯৯১ সালের আইনটি আমাদের ইতিহাস এবং জাতির ভবিষ্যতের কথা বলে। জনসাধারণের উপাসনার স্থানগুলির চরিত্র সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে আইনে। তবে অতীতে কোথায় কী ছিল, তা ভেবে ফের মন্দির বা মসজিদের চরিত্র বদল না করাটা ধর্মনিরপেক্ষতার মূলমন্ত্র। সে কারণে এই আইন তৈরি হয়েছে।" উল্লেখ্য, রামমন্দির-বাবরি মসজিদ নিয়ে আইনি বিবাদের চলাকালীন ১৯৯১ সালে উপাসনাস্থল আইন অনুমোদন করেছিল সংসদ। উপাসনাস্থলের চরিত্র বদলে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি আইনে এও বলা হয়েছিল, এ নিয়ে কোনও মামলা করা যাবে না। অযোধ্যার বিবাদই একমাত্র ব্যতিক্রম থাকবে এই ক্ষেত্রে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।