শ্রদ্ধাকে খুন করার পরে জোমাটো থেকে চিকেন রোল অর্ডার করেছিল আফতাব। তার আগে অবশ্য শ্রদ্ধার দেহ নিয়ে গিয়ে রেখেছিল বাথরুমে
শ্রদ্ধা ওয়ালকর ও আফতাব পুনাওয়ালা।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: স্টোন গ্রাইন্ডার ব্যবহার করে বান্ধবীর হাড় গুঁড়ো করেছিল আফতাব। দিল্লিতে শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে খুনের সেই নৃশংস বিবরণ উঠে এসেছে পুলিশের চার্জশিটে। শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত আফতাব পুণেওয়ালার বিরুদ্ধে ৬ হাজার ৬০ পাতার চার্জশিট পেশ করেছে দিল্লি পুলিশ। আর সেই চার্জশিটের ছত্রে ছত্রে উঠে এসেছে হাড়হিম করা নানান তথ্য।
চার্জশিট থেকে জানা গিয়েছে, শ্রদ্ধাকে খুনের পর চিকেন রোল খেয়েছিল আফতাব। প্রেমিকার রক্ত সাফ করেছিল হারপিক দিয়ে। একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে মহারাষ্ট্রের পালঘরের তরুণী শ্রদ্ধার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল আফতাবের। সেই আলাপ পরে প্রেমে গড়ায়। বাড়ির অমতেই আফতাবকে জীবনসঙ্গী হিসাবে বেছে নেন শ্রদ্ধা। যার জন্য আপনজনদের ছেড়েছেন, সেই আফতাবের হাতেই খুন হতে হয় শ্রদ্ধাকে। ২০২২ সালের ১৮ মে শ্রদ্ধাকে খুন করে তাঁর প্রেমিক। তবে এই হত্যাকাণ্ডের খবর প্রকাশ্যে আসে গত বছরের নভেম্বর মাসে। তিন মাস ধরে প্রেমিকার শরীরের ৩৫ টুকরো করে দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় ফেলে এসেছিল আফতাব। খুনের তিনমাস পরে সবশেষে ফেলেছিল শ্রদ্ধার মাথা।
আরও পড়ুন: শেষ হল পলিগ্রাফ পরীক্ষা, ডিসেম্বরের শুরুতেই আফতাবের নারকো টেস্ট?
১৮ মে শ্রদ্ধাকে খুন করার পরে জোমাটো থেকে চিকেন রোল অর্ডার করেছিল আফতাব। তার আগে অবশ্য শ্রদ্ধার দেহ নিয়ে গিয়ে রেখেছিল বাথরুমে। ঘটনার দিন সন্ধে পৌনে ৮টার সময় ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ করে সামনের হার্ডওয়ার শপ থেকে একটি করাত, তিনটি ধারাল ছুরি এবং একটা হাতুড়ি কেনে সে। তারপর ঘরে ফিরে সেই সব ধারাল অস্ত্র দিয়েই একে একে শ্রদ্ধার দেহের ৩৫ টুকরো করে পলিথিনে ভরে রাখে। খুনের পরের দিন ১৯ মে একটা দামী রেফ্রিজিরেটর কিনে সেখানে ভরে রাখে সেই সমস্ত পলিথিন। তারপর পরের চার-পাঁচ দিনে দিল্লির ছাত্তারপুর পাহারি এলাকার জঙ্গলে এক এক করে সেই দেহাংশ ছড়িয়ে আসতে থাকে আফতাব।
আরও পড়ুন: খোশমেজাজে জেলবন্দি আফতাব! দিন কাটছে দাবা খেলে, বই পড়ে
শ্রদ্ধাকে খুনের পর একটি ডেটিং সাইটে অন্য এক মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আফতাব। ওই মহিলা আফতাবের ফ্ল্যাটে এসে বেশ কয়েক বার রাতও কাটান। যখনই ওই মহিলা ফ্ল্যাটে যেতেন, সেই সময় ফ্রিজ পরিষ্কার করে রাখত আফতাব। সেই সঙ্গে শ্রদ্ধার দেহাংশ রান্নাঘরে লুকিয়ে রাখত। খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য শ্রদ্ধার হাড়গোড় গ্রাইন্ডারে গুঁড়ো গুঁড়োও করেছিল আফতাব। তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, পলিগ্রাফ পরীক্ষা এবং নার্কো পরীক্ষার সময় এই বয়ান দিয়েছে আফতাব। সেই বয়ানই চার্জশিটে তুলে ধরা হয়েছে। আফতাবের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন শ্রদ্ধার বাবা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।