Anti Conversion Law: ধর্মান্তকরণ রোখার দাওয়াই ভিএইচপি কর্তার, বাংলায় দিব্যিই চলছে ‘ব্যবসা’...
ভিএইচপির অর্গানাইজিং জেনারেল সেক্রেটারি মিলিন্দ পারান্দে।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ধর্মান্তকরণ রুখতে বিধানসভায় নয়া বিল (Anti Conversion Law) পাশ করেছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার। সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি করতে গিয়ে এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ তৃণমূল পরিচালিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। তারা না এনেছে এ সংক্রান্ত কোনও বিল, না করেছে ধর্মান্তকরণ রুখতে কখনও কোনও কড়া পদক্ষেপ। তাই এ রাজ্যে দিব্যি চলছে ধর্মান্তকরণ।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এই চিত্র যাতে বদলায়, সেই ব্যবস্থা করা উচিত বলে বলল বিশ্বহিন্দু পরিষদ (VHP)। ভিএইচপির অর্গানাইজিং জেনারেল সেক্রেটারি মিলিন্দ পারান্দে যোগী আদিত্যনাথের এহেন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। ধর্মান্তকরণ রুখতে দেশের অন্য রাজ্য সরকারগুলোকেও অনুরূপ আইন করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ধর্মান্তকরণের মেরুদণ্ড ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতেই এটা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন পারান্দে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এই নেতা বলেন, “ধর্মান্তকরণ বিরোধী আইন থাকা সত্ত্বেও লাভ জিহাদ এবং অবৈধভাবে ধর্মান্তকরণের কাজ চলছে। তাই উত্তরপ্রদেশ সরকার বিধানসভায় যে প্রোহিবিশন অফ আনলফুল কনভারসান অফ রিলিজিয়ান (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২৪ এনেছে, তাতে যে কেবল সংগঠিত অপরাধ দমন করা যাবে তা-ই নয়, অপকর্মের জন্য ভয় পাবে লাভ জিহাদি এবং মিশনারিরাও।”
৩০ জুলাই, মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় পাশ হয়েছে বিলটি। এই বিলে কঠোর করা হয়েছে শাস্তির বিধান। দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। সংশোধিত বিল অনুযায়ী, যদি কোনও ব্যক্তি (Anti Conversion Law) হুমকি দিয়ে, আক্রমণ করে, বিয়ে করে বা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিয়ে না করে কিংবা এজন্য ষড়যন্ত্র করে, অথবা পাচার করে, কোনও মহিলা, নাবালক বা অন্য কাউকে ধর্মান্তরিত করে, তাহলে তাকে এই আইনের অধীনে সব থেকে গুরুতর অপরাধী বলে ধরা হবে। সংশোধিত বিল অনুযায়ী, এই ধরনের মামলায় ২০ বছরের কারাদণ্ড থেকে শুরু করে আজীবন কারাদণ্ড দেওয়া হবে। এর আগে এই অপরাধে সর্বোচ্চ দশ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার পর্যন্ত জরিমানার বিধান ছিল।
আরও পড়ুন: আগাম সতর্ক করা সত্ত্বেও ব্যবস্থা নেয়নি কেরল, ওয়েনাড় নিয়ে বিস্ফোরক অমিত শাহ
সংশোধিত বিলে বদলানো হয়েছে এফআইআরের নিয়মও। আগে এই ধরনের অভিযোগ নথিভুক্ত করাতে প্রয়োজন হত নির্যাতিতা কিংবা তার পরিবারের কোনও সদস্যের উপস্থিতি। সংশোধিত বিলে আর প্রয়োজন হবে এঁদের উপস্থিতি। এই বিষয়ে এফআইআর দায়ের করতে পারবেন যে কেউই। তিনি নির্যাতিতার নিকট আত্মীয় না হলেও পারবেন। ধর্মান্তকরণের অভিযোগের ক্ষেত্রেও যে কোনও ব্যক্তি এফআইআর দায়ের করতে পারবেন। পুলিশকে তথ্য দিয়েও সাহায্য করতে পারবেন। দায়রা আদালতের নীচে কোনও আদালতে এই ধরনের মামলার শুনানি করা যাবে না। এই আইনের অধীনে সব অপরাধকেই জামিন অযোগ্য বলা হয়েছে। বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলটিতে এত সুযোগ থাকায় বিলটির প্রশংসা করেছেন ভিএইচপি (VHP) কর্তা।
তিনি বলেন, “এই বিলটি আইনে পরিণত হলে ভারত থেকে যাবে ভগবান রাম, শ্রীকৃষ্ণ এবং ভোলে বাবার।” ধর্মান্তকরণের যে স্বপ্ন দেখছেন বিধর্মীরা, তাঁদের সে স্বপ্ন পূরণ হবে না বলেই মনে করেন তিনি। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের সময়ও দেশের এতগুলো রাজ্যের মধ্যে মাত্র ১০-১১টিতে ধর্মান্তকরণ বিরোধী আইন কার্যকর রয়েছে। এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (VHP) কর্তা। তিনি বলেন, “অবৈধভাবে ধর্মান্তকরণ রুখতে অন্য রাজ্যগুলিরও দ্রুত পদক্ষেপ করা উচিত।” অপরাধীরা যাতে ঠিকঠাক সাজা পায়, সেজন্য প্রশাসনকে সাহায্য করতে সাধারণ মানুষকে আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার পারলেও, বাংলার মমতা সরকার পারে না বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এ রাজ্যে এখনও এমন কোনও আইন হয়নি বলেই অভিযোগ। উল্টে ধর্মান্তকরণ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বিজেপির দাবি, সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে ইসলাম সম্পর্কে বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেছিলেন, “অন্য ধর্মে জন্মানোটা দুর্ভাগ্যের।” ভাইরাল হওয়া ভিডিওয় মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, আমরা নিজেরা মুসলিম। মুসলিম ঘরে জন্মেছি, বড় হয়েছি। আমাদের নমাজ, আদব-কায়দা বেশিরভাগ মানুষেরই জানা। কিন্তু তারা দুর্ভাগ্য নিয়ে জন্মেছে, যারা ইসলাম নিয়ে জন্মায়নি।”
মুসলমান অধ্যুষিত মালদা এবং মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় মাঝে মধ্যেই ধর্মান্তকরণ হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ধীরে হলেও খ্রিস্টান মিশনারিরাও থাবা বসাচ্ছে এ রাজ্যে। ধর্মান্তকরণ রুখতে কড়া আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন এ রাজ্যেও (VHP)। কিন্তু আইন করবে কে? কেনই বা করবে? সংখ্যালঘুদের আঁতে ঘা লেগে যাবে না! ভোটব্যাঙ্কে ধস নেমে যাবে যে! অতএব, বেঁচেবর্তেই থাকুক (Anti Conversion Law) তুষ্টিকরণের রাজনীতি!
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।