বেছে বেছে কেবল খুন করা হচ্ছে হিন্দুদের...
কাশ্মীরে হিন্দু-হত্যার প্রতিবাদে মোমবাতি মিছিল পণ্ডিত সম্প্রদায়ের।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: উপত্যকায় গত কয়েক দশকে খুন হয়েছেন হাজার ছয়েক হিন্দু (hindu)। এর মধ্যে পণ্ডিত সম্প্রদায়ের পাশাপাশি অমুসলিম লোকজনও রয়েছেন। একের পর এক হিন্দু নিধনের পরে প্রশ্ন উঠছে, এবার কে? সন্ত্রাসবাদের (terrorism) রক্তলোলুপ হাত থেকে বাঁচতে কাশ্মীর (kashmir) ছাড়তে চাইছেন হিন্দু পণ্ডিত (pandit) সম্প্রদায়ের লোকজন। সরকারের কাছে তাঁরা এই দাবি জানিয়েওছিলেন। তবে তাঁদের সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছে জম্মু-কাশ্মীর (Jammu-Kashmir) সরকার। কাশ্মীরেরই জেলা সদর দফতরের মতো কোনও 'নিরাপদ' স্থানে তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে।
আরও পড়ুন : "হয় কাশ্মীর ছাড়ো, নয় মরো", পণ্ডিতদের হুমকি-চিঠি জঙ্গিদের
প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে জনৈক অশ্বিনী পণ্ডিত বলেন, সরকারের এই পরিকল্পনা অবাস্তব। সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেলামেশা না করে আমরা কীভাবে থাকব? প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্যাকেজে বেশ কয়েক বছর আগে উপত্যকার একটি স্কুলে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। পরিবার নিয়ে উপত্যকায় ফিরেও এসেছেন।
শুধু অশ্বিনী নন, পুনর্বাসন প্যাকেজ পেয়ে ভূস্বর্গে ফিরে এসেছেন আরও অনেকে। উপত্যকার বিভিন্ন ক্যাম্পে বসতি গেড়েছেন তাঁরা। তবে সম্প্রতি কাশ্মীরে ফের হিন্দু নিধনযজ্ঞ (Hindu Killings in Kashmir) শুরু হওয়ায় উপত্যকা ছাড়ার আবেদন জানিয়েছেন পণ্ডিত সম্প্রদায়ের (kashmiri pandit) এই লোকজন। বদগাম জেলার শেখপোড়ায় কলোনির গেট খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শ’চারেক পরিবার। তাঁরা বলেন, এখানে আর থাকা যায় না। চাকরি নিয়ে আমরা আর মাথা ঘামাই না!
ভেসু ক্যাম্পে থাকেন সঞ্জয় কাউল। বেছে বেছে হিন্দুরা জঙ্গিদের বন্দুকের নলের শিকার হওয়ায় উদ্বেগে রয়েছেন তিনিও। বলেন, খুন বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তার বেষ্টনীতে মুড়ে ফেলা হয়েছে আমার কলোনি। এখানে ৩০০টি পরিবার রয়েছে। আমরা সুরক্ষিতও। কিন্তু আমাদের কাজের জন্য রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে জেলা সদরে। এই জেলা সদর আমার কলোনি থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে। তিনি বলেন, কলোনি থেকে বের হলে যে কেউই জঙ্গিদের সফট টার্গেট হয়ে যেতে পারে। সঞ্জয় বলেন, সবচেয়ে ভাল বিকল্প হবে আমাদের কয়েক মাস কিংবা এক বছর অথবা কাশ্মীর শান্ত হওয়া পর্যন্ত জম্মুতে ডেপুটেশনে পাঠানো।
আরও পড়ুন : গদি রাখতে গেলে শেহবাজকে জিইয়ে রাখতেই হবে কাশ্মীর ইস্যু
গত কয়েক মাস ধরে উপত্যকায় বেছে বেছে কেবল হিন্দুদেরই খুন করা হচ্ছে। ১ মে থেকে এ পর্যন্ত উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদের বলি হয়েছেন মোট আটজন। এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন এক ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। বছর একুশের ওই ম্যানেজার চাকরি করতে রাজস্থান থেকে এসেছিলেন কাশ্মীরে। সেখানেই ঝরে গেলেন অকালে।