মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তুরস্ক ও সিরিয়ায় যখন মৃত্যুমিছিল, তারই মধ্যে ভারতীয় এক সেনা জওয়ান পেলেন এক খুশির খবর। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে গিয়েছিলেন তিনি। তুরস্কে পৌঁছে সুখবর পেলেন যে বাবা হয়েছেন তিনি। তাঁর স্ত্রী পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সেই সেনা জওয়ানের নাম রাহুল চৌধুরী ও তিনি উত্তরপ্রদেশের হাপুরের বাসিন্দা।
সাতদিন কেটে গিয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পের। দুই দেশেই মৃতের সংখ্যা হুহু করে বাড়ছে। ইতিমধ্যেই এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেই সংখ্যা আরও বাড়বে। তুরস্কের এই পরিস্থিতিতে ভারত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ৯৯ জনের ভারতীয় সেনার দল গেছে তুরস্কে। সেই দলের সদস্য রাহুল চৌধুরী তুরস্কে দুর্গতদের উদ্ধার করতে গিয়ে পেলেন এই খুশির খবর।
পরিবারের আগে দেশসেবায় গেলেন ভারতীয় সেনা জওয়ান
নিজের স্ত্রী যখন আট মাসের সন্তানসম্ভবা, তখন তিনি পরিবারের দায়বদ্ধতা দূরে সরিয়ে দেশের কথা ভেবে পাড়ি দিয়েছিলেন ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্কে। অন্যান্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তুরস্কের ধ্বংসস্তূপের তলায় প্রাণের সন্ধান করেছেন তিনি। সূত্রের খবর, ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্কে ভারত যে দল পাঠিয়েছে তাতে নাম ছিল রাহুলের। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে একা ফেলে যেতে চাইছিলেন না তিনি। তবে নিজের কর্তব্য থেকেও সরে আসতে নারাজ ছিলেন। ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রীর সিজারের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি। পরিবার না দেশের জন্য কাজ, কোনটা বেছে নেবেন, সেই নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় ছিলেন রাহুল। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেন, “এই পরিস্থিতিতে কী করবেন বুঝতে না পেরে নিজের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পুরো বিষয়টি বলেন। কর্তৃপক্ষ তাঁকে নিজের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।” রাহুলের স্ত্রী তাঁকে বলেন, “আমার নাম এই অভিযানে রাখা হয়েছে, তখন সে বলে যে আমার উচিত দেশের কাজ যেন আগে করি। দেশসেবাই প্রথম ধর্ম।”
আরও পড়ুন: দিল্লি, মুম্বইয়ে বিবিসি-র দফতরে আয়কর হানা, কর্মীদের ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
এর পরেই তিনি নির্দ্বিধায় দেশের হয়ে অন্য দেশের সাহায্যে চলে যান। এর পর তুরস্কগামী বিমানে উঠেই তিনি জানতে পারেন তাঁর স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তুরস্কে পৌঁছেই রাহুল জানতে পারেন, পুত্র সন্তান হয়েছে। সকলেই তাঁকে শুভেচ্ছা জানান। রাহুলের বন্ধু এবং সহকর্মীরা চান নবজাতকের নাম যেন ‘তুর্কি চৌধরী’ রাখা হয়।
তবে একা রাহুল নন, তুরস্কে উদ্ধারকাজে যাওয়া উত্তর প্রদেশেরই বাসিন্দা ভারতীয় সেনার সেপাই পদে কর্মরত কমলেশ কুমার চৌহানও তুরস্কে পৌঁছনোর পরই বাবা হওয়ার সুখবর পেয়েছেন৷
+ There are no comments
Add yours