Indian students: অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ থেকে নিরাপদে দেশে ফিরল ৪৫০০ জন ভারতীয় পড়ুয়া
ঢাকার পরিস্থিতির দিকে নজর ভারতের, সংগৃহীত চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশে এখনও স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনে (Bangladesh Protest) এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ১১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন বহু মানুষ। জারি হয়েছে কার্ফু। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে সেনা। এমত পরিস্থিতিতে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, নয়াদিল্লি বিষয়টি নিয়ে কী ভাবছে। এ প্রশ্নে তিনি এক লাইনে জবাব দিয়েছিলেন, ‘‘এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’’
রণধীর জয়সওয়ালের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কূটনৈতিক মহল বলছে, ভারতের সঙ্গে দীর্ঘতম সীমান্ত ভাগ করে নেওয়া দেশে প্রবল রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার ঘটনায় (Bangladesh Protest) সাউথ ব্লকের গভীর অস্বস্তি এবং উদ্বেগকেই আড়াল করতে চেয়েছেন রণধীর। কারণ এখন এ নিয়ে রা কাড়াও ভারতের পক্ষে বুমেরাংয়ের সমান। গত ছমাসেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ জুড়ে ভারত-বিরোধিতার যে ঢেউ দেখা গিয়েছে, তা-ই নতুন মোড়কে ফিরে এসেছে এখন। ঢাকার রাজপথে গর্জন শোনা গিয়েছে, ‘ভারত যাদের মামাবাড়ি, বাংলা ছাড়ো তাড়াতাড়ি।’ ফিরে এসেছে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক, ‘ভারতীয় আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে, ‘ভারতের তাঁবেদার সরকার’ আওয়ামী লীগকে হটানোর ডাক। আর এ সবই ঘটেছে নয়াদিল্লির নাকের ডগায়।
সব মিলিয়ে শীর্ষ নেতৃত্ব স্তরে ‘সোনালি অধ্যায়ের’ একটি ছবি দক্ষিণ এশিয়া দেখতে পেলেও, দুদেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বিভিন্ন স্তরে আরও বাড়ানোর কথাই যে এ বার ভাবতে হবে, তা ঘরোয়া ভাবে স্বীকার করছে নয়াদিল্লি। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশি ছাত্রদের জন্য আরও বেশি স্কলারশিপ বাড়ানো, নজরদারি বহাল রেখে ভিসা আরও শিথিল করা, ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সহজ করার মতো বিষয়গুলিতে কত দূর এগোনো যায়, সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন (Bangladesh Protest) ঘিরে উত্তাল বাংলাদেশে আটকে পড়েছিলেন কয়েক হাজার ভারতীয় পড়ুয়া। জানা গিয়েছে, বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রক, অভিবাসন দপ্তর, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (BSF)-এর সঙ্গে সমন্বয় রেখে ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফেরাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক। হিসেব বলছে ৪৫০০ জন ভারতীয় শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে নিরাপদে দেশে ফিরেছে। তবে শুধু ভারতীয় পড়ুয়াই নয়, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপের বহু পড়ুয়ারাও বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে এসেছেন। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফেরত এক ভারতীয় পড়ুয়া বলেছেন, ''অনেক শিক্ষার্থী বিমানের টিকিট বুক করেছিলেন। কিন্তু যেহেতু সেখানে কার্ফু রয়েছে, তাই তাঁরা বিমানবন্দরে যেতে পারেননি। বেশ কয়েকটি ফ্লাইটও বাতিল করা হয়েছে। এখনও অনেক ভারতীয় ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলির হস্টেলে রয়েছেন।''
আরও পড়ুন: নাশকতার ছক বানচাল! রাজৌরিতে সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াইয়ে আহত ১ জওয়ান
প্রসঙ্গত, রবিবার বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট আন্দোলনের (Bangladesh Protest) পক্ষে রায় দিয়েছে। সেই রায় অনুযায়ী সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে যে ৫৬ শতাংশ সংরক্ষণ ছিল, তা কমিয়ে ৭ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে। যেখানে এতদিন ‘মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের’ জন্য ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ ছিল, তা কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। বাকি ২ শতাংশ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য এবং বিশেষ ভাবে সক্ষম ও তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। সুপ্রিম রায়ে আন্দোলনের জয়জয়কার হলেও বাংলাদেশ এখনও অশান্ত। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সে দেশে পড়তে যাওয়া বিদেশি পড়ুয়ারা। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ভারতীয় (Indian students)। বিষয়টি সামনে আসতেই ভারতের তরফে শুরু হয় তৎপরতা। এরপর ধাপে ধাপে তাঁদের ভারতে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।