BNP: বিএনপি নেতার বিতর্কিত বক্তব্যের মোক্ষম জবাব দিলেন ভারতীয় চিকিৎসকরা, কী বললেন?
বিএনপি নেতাকে তুলোধনা করলেন ভারতীয় চিকিৎসকরা (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চিকিৎসার ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের বড় ভরসার জায়গা ভারত। তাই, জটিল কোনও ব্যাধি বা পয়সাওয়ালারা সাধারণ চেকআপ করার জন্য নিজের দেশের ডাক্তারের ওপর ভরসা করেন না। সোজা চলে আসেন এপার বাংলায়। তবে বর্তমানের পরিস্থিতি আলাদা। অশান্ত বাংলাদেশ (Bangladesh) দিয়েছে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক। এদিকে ভারতীয় ভিসাও বন্ধ। নিয়মের কড়াকড়িতে বহু বাংলাদেশিই ভারতে আসতে পারছেন না। এরই মধ্যে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা। মূলত, ভারতীয় ডাক্তারদের হকারি করার কথা বলেছেন তিনি। পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতীয় চিকিৎসকরাও।
বিএনপির (BNP) স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “বাংলাদেশে যত অবৈধ ভারতীয় বাসিন্দা আছে, তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে (Bangladesh)।” ভিসা সমস্যা ও ভারতে চিকিৎসার জন্য যেতে না পারার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা ভারতে না গেলে দেশের কয়েকশো কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। অনন্তকাল ধরে ভিসা বন্ধ করে রাখলে ভারতীয় ডাক্তাররা রোগী পাবেন না। ভারতীয় ডাক্তারদের হকারি করতে হবে। ফুটপাথে হকারি করে খেতে হবে। তাই ভিসা বন্ধ করায় ভারতকে স্বাগত।”
আরও পড়ুন: সর্বকনিষ্ঠ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন! দাবায় সেরা ডি গুকেশ, কুর্নিশ সচিন-মোদি-মুর্মুদের
বিএনপি নেতার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, “বাংলাদেশি (Bangladesh) রোগীরা না এলে, ভারতীয় চিকিৎসকরা পথে বসবেন, এই ভুল ধারণা রাখবেন না। আপনি যেই হন না কেন, আপনার ভারত সম্পর্কে ধ্যানধারণা নেই। এই বাংলাতেই ১০ কোটি মানুষের বাস। ১৪০ কোটির দেশে কোনও ডাক্তার পথে বসবেন না। আপনার মতো ভিক্ষার দশা আমাদের হবে না। ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘুরতে হবে না।” আরেক চিকিৎসক, রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “পরিসংখ্যানগতভাবে বলি, বাংলাদেশে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে ৪৫টি। আর সেখানেই পশ্চিমবঙ্গে মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে ৩৫টি। আমাদের দেশে ৭৩১টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল রয়েছে। আপনাদের ওপর নির্ভর করে আমাদের সংসার চলে না। কিন্তু ভারতে চিকিৎসা না পেলে আপনাদের অবস্থা কী হবে সেটা ভেবে দেখবেন। কারণ বাংলাদেশের মানুষের নিজের দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপরেই ভরসা নেই। বিপদে, দুর্দিনে তাঁরা আমাদের কাছেই আসেন।”
বাংলাদেশে (Bangladesh) অশান্তির কারণে মহা সঙ্কটে পড়েছেন চিকিৎসার জন্য নিয়মিত কলকাতায় আসা-যাওয়া করা হাজার হাজার বাংলাদেশি। তাঁদের এ-পারে আসায় এখন কার্যত দাঁড়ি পড়েছে। নিয়মের এই 'ফাঁস' আলগা হয়ে কলকাতা-সহ দক্ষিণ ভারতে যাওয়ার পথ কবে আবার সুগম হবে, সেই চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন পদ্মাপারের রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়েরা। ঢাকার বাসিন্দা মহম্মদ মুর্তাফিজ বলেন, “সাত বছর আগে চেন্নাইয়ের হাসপাতালে স্ত্রীর চিকিৎসা হয়েছিল। সেই চিকিৎসকই কলকাতার মল্লিকবাজারে কয়েক মাস অন্তর রোগী দেখতে আসেন। সপ্তাহ দুয়েক আগে ওই চিকিৎসক কলকাতায় এসে ঘুরে গিয়েছেন। কিন্তু স্ত্রীকে নিয়ে যেতে পারিনি। আপাতত যে ওষুধ চলছে, সেটাই ভরসা। কিন্তু চিকিৎসককে না দেখি এ ভাবে কত দিন চলবে?”উদ্বেগের একই সুর শোনা গেল সিলেটের বাসিন্দা নূর আহমেদের গলাতেও। নুরের কথায়, “হঠাৎ করেই দু'দেশের সম্পর্ক খারাপ হয়ে গেল। এখন তো কলকাতার চিকিৎসকদের একাংশ বাংলাদেশিদের চিকিৎসা করবেন না বলে জানিয়েছেন। আমাদের মতো রোগীদের কী হবে, জানি না।” বিভিন্ন দফতর ঘুরেও সীমান্ত পেরোনোর অনুমতি পাননি পাবনার বাসিন্দা মহম্মদ আলি ও জান্নাতুর ফিরদৌস। তিনি বলেন, “স্বামীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় যেতে না পেরে ঢাকাতেই এক জন চিকিৎসককে দেখিয়েছি। কিন্তু আশানুরূপ ফল মিলছে না। ফুসফুসে জল জমছে। দু'দেশের সম্পর্ক মুষ্টিমেয় কয়েক জন নিজেদের স্বার্থে বিষিয়ে দিচ্ছেন। এর ফল আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের ভুগতে হচ্ছে!”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।