Garment Industry: টালমাটাল বাংলাদেশে পোশাক শিল্পে ব্যাঘাত! আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলি ঝুঁকছে ভারতের দিকে...
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ধাক্কা পোশাক শিল্পে। ফাইল চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর জ্বলছে বাংলাদেশ (Bangladesh Crisis)। ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে পড়েছে প্রভাব। পদ্মাপাড়ে অশান্তির জেরে লাভবান হতে চলেছেন ভারতের বস্ত্র ব্যবসায়ীরা, এমনই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। ইতিমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে কাপড়ের কোম্পানিগুলির স্টকের গ্রাফ। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এই পরিস্থিতিতে ইউরোপ ও আমেরিকায় রফতানির জন্য বিপুল টাকার বরাত পেতে পারে ভারতের বিভিন্ন সংস্থা।
আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের (Bangladesh Crisis) কাপড়ের দারুণ চাহিদা রয়েছে। বস্ত্র রফতানিতে ভারত ও চিনকে রীতিমতো টেক্কা দিয়ে থাকে পূর্ব পাড়ের এই প্রতিবেশী। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩-এ বস্ত্র শিল্পের পরিসর বৃদ্ধি করে পদ্মা নদীর দেশ। ফলে রফতানি বাণিজ্যের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়াছিল ঢাকা। সম্প্রতি পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হওয়ায় মারাত্মকভাবে ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশের কাপড় ব্যবসা। বাংলাদেশ বর্তমানে পাকিস্তানের মতো দেউলিয়া হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর থেকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান খাত গার্মেন্ট শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঘটনা বাড়ানোর ফলে উদ্বেগ আরও বেড়েছে, এবং অনেক প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধ হওয়ার পথে।
পোশাক শিল্পে বাংলাদেশ (Bangladesh Crisis) বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম, চিনের পর। বেশ কিছু বড় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড এই দেশে পোশাক তৈরি বা সংগ্রহ করে। এসব পোশাক তারপর দেশে বড় বড় শোরুমে বিক্রি হয়। তবে দেশের চলমান অস্থিরতা এই ব্র্যান্ডগুলির ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ক্ষতি কমানোর জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান এখন ভারতীয় উৎপাদকদের দিকে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রসঙ্গত, ২০১৮ থেকে ইউরোপ ও আমেরিকায় কাপড় রফতানির পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত। গত বছর যা ৬ শতাংশে পৌঁছয়। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্যের ২১ শতাংশ বাজার দখল করতে পারে ভারত।
পোশাক শিল্প বাংলাদেশের জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০২৪ সালে এটি ছিল জিডিপির ১১ শতাংশ। এই খাতের প্রায় ৮০ শতাংশ রাজস্ব আসে রফতানি থেকে। এই অবস্থায় পোশাক শিল্প কমে গেলে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিতে পারে। বহু মানুষ চাকরি হারাতে পারেন। বিপুল ঋণের বোঝা বহন করতে হতে পারে ঢাকাকে। এমন পরিস্থিতি বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতো অর্থনৈতিক পতনের দিকে ঠেলে দিতে পারে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেডিমেড পোশাক রফতানি করেছে বিশ্ব বাজারে। আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে বাংলাদেশের পোশাকের বিপুল চাহিদা। শেখ হাসিনার সময়কালে এই বস্ত্র শিল্পের উপরে ভরসা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। তাদের বরাতে জুটেছিল উন্নয়নশীল দেশের তকমাও। আপাতত প্রবল বিদ্রোহের জেরে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা দেশত্যাগী। সেইসঙ্গে বিগত মাস দুয়েক ধরে চলা অশান্তির পরিবেশে বাংলাদেশের রফতানি প্রবল ভাবে ধাক্কা খেয়েছে। ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশের গৌরব এবং ভরসার বস্ত্র শিল্পও।
আরও পড়ুন: “নীতীশ তো চোখের আরাম করতে যাচ্ছেন”, লালুর মন্তব্যে তুঙ্গে বিতর্ক
এই সুযোগ ছাড়তে নারাজ ভারতীয় বস্ত্র শিল্পপতিরা (Garment Industry)। ইউরোপ, আমেরিকার পাশাপাশি পশ্চিম এশিয়ার বাজার দখলের মরিয়া চেষ্টা চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। যার প্রভাব কোম্পানি ও কাপড়ের মিলের স্টকে দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। গ্লোবাল ব্র্যান্ডগুলো তাদের পণ্য উৎপাদন বা সংগ্রহের জন্য নতুন স্থান খুঁজছে, এমন পরিস্থিতিতে ভারতের সুরাট শহর একটি বিকল্প হিসেবে উঠে আসতে পারে। ইতিমধ্যেই দেখা গিয়েছে, সুরাটের গার্মেন্ট শিল্পে বড় বড় ব্র্যান্ডগুলোর আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। শিল্পের অভ্যন্তরীণ সূত্র অনুযায়ী, গ্লোবাল ব্র্যান্ডগুলো এখানে প্রস্তুত পোশাক উৎপাদন এবং সরবরাহ সম্পর্কে জানতে চাইছে। যদি এই আকর্ষণ অর্ডারে পরিণত হয়, তবে সুরাটের গার্মেন্ট শিল্পের বৃদ্ধির হার বর্তমানে ১২ শতাংশ থেকে ২০-২৫ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। দক্ষিণ গুজরাট চেম্বার অফ কমার্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশিস গুজনির মতে, নতুন অর্ডারগুলি শুধুমাত্র সুরাট নয়, অন্যান্য ভারতীয় শহরগুলিকেও লাভবান করতে পারে, যেখানে বস্ত্র শিল্পের কেন্দ্র রয়েছে। তিরুপুর ও কোয়েম্বাটুর (তামিলনাড়ু), লুধিয়ানা (পাঞ্জাব) এবং নয়ডার (উত্তরপ্রদেশ) মতো শহরগুলোও লাভবান হতে পারে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।