Dhaka: হাসিনার পদত্যাগ দাবি, ফের অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ
উত্তরার বিএনএস সেন্টারের সামনে জমায়েত (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে হিংসার ঘটনায় নিহতদের স্মরণে ছিল কর্মসূচি। আর তাকে ঘিরে শুক্রবার থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানী ঢাকা-সহ বাংলাদেশের (Bangladesh) নানা এলাকা। শনিবারও কুমিল্লা শহরে কোটা সংস্কারপন্থী পড়ুয়াদের মিছিলে গুলি চলেছে বলে অভিযোগ। রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে নতুন করে উত্তাল হয়ে উঠল বাংলাদেশ। এদিন থেকে আন্দোলনকারীদের যৌথমঞ্চ, 'বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন'-এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের (Bangladesh) সংবাদমাধ্যম 'প্রথম আলো' জানাচ্ছে, শাহবাগ (Dhaka) এলাকায় জড়ো হয়েছেন শ'য়ে শ'য়ে মানুষ। আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের এক দফা সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই চত্বরের বেশ কিছু গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। রবিবার আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়। তাতে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। মুন্সিগঞ্জে নিহত দুই, রংপুরে নিহত এক, মাগুরায় নিহত একচজন। শনিবার গাজিপুরে একজন নিহত হয়েছেন। এদিন আবার চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় শাসকদল আওয়ামি লিগ এবং তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লিগের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছে। আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান শাসকদলের নেতা-কর্মীরা। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে আট জন জখম হয়েছে। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা পরে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৮। ‘প্রথম আলো’র দাবি, এর মধ্যে মুন্সিগঞ্জে দু’জন, বগুড়ায় তিনজন, মাগুরায় দু’জন, পাবনায় দু’জন, রংপুরে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশের হিন্দু মন্দিরে অশ্লীল ভিডিও তৈরি! গ্রেফতার দিলশাদ ও আজিম
এদিন রংপুরে শাসকদল আওয়ামি লিগের সাংসদের বাড়িতে আগুন ধরানোর অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, এদিন সকালে সাংসদ আবুল কালাম আহসানুল হক চৌধুরীর বাড়িতে আগুন ধরিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। পাশাপাশি ঢাকায় (Dhaka) পরিবাগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২১ নম্বর কাউন্সিলর মহম্মদ আসাদুজ্জামানের কার্যালয়ে আন্দোলনকারীরা আগুন ধরিয়েছেন বলে অভিযোগ। গাজিপুরে আওয়ামি লিগের কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। ঢাকার সিএমএম আদালত চত্বরে পুলিশের একটি ভ্যানও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। শনিবারও কুমিল্লা শহরে কোটা সংস্কারপন্থী পড়ুয়াদের মিছিলে গুলি চলেছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্তত পাঁচজন আন্দোলনকারী। সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের হামলায় আহত আরও বহু ছাত্র। অভিযোগ, শাসকদল আওয়ামি লিগের যুব সংগঠন যুব লিগ এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারে। ওই ঘটনার পরে কুমিল্লার চান্দিনায় উপজেলা সহকারি কমিশনারের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন মারমুখী আন্দোলনকারীরা। এই পরিস্থিতিতে ফের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকারি সংস্থা।
শনিবারই ঢাকায় শহিদ মিনার (Bangladesh) চত্বরে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। এ ছাড়াও এ বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেন আন্দোলনের আর এক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। শহিদ মিনারে হাজার হাজার ছাত্র জনতার সমাবেশে ডাক দেওয়া হয় অসহযোগের। মূলত, হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন (Bangladesh Protest) চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অসহযোগ চলাকালীন বাংলাদেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানগুলি খোলা রাখা হবে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। কোনও নাগরিক আর কর দেবেন না। বিদ্যুৎ, গ্যাস বা অন্যান্য পরিষেবা বাবদ বিলও দেবেন না কেউ। অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ থাকবে সরকারি- বেসরকারি সমস্ত প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ, অফিস-আদালত। কেবলমাত্র হাসপাতাল, ওষুধের দোকান, দমকল, ইন্টারনেট পরিষেবা দফতর, সংবাদমাধ্যমের মতো জরুরি পরিষেবাগুলি চালু থাকবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।