ISKCON: বাংলাদেশে হিন্দুদের জীবন বাঁচাতে আত্মগোপনের পরামর্শ ইসকনের…
ইসকনের হিন্দু সন্ন্যাসী। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘শান্তিতে’ নোবেল পেয়ে এখন ‘অশান্তির’ জন্য কুখ্যাত হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস। গত ৫ অগাস্টের পর থেকেই সংখ্যালঘু হিন্দুরা (Bangladesh Monk) নিপীড়নের শিকার হয়ে চলেছেন ওই দেশে। মঠ, মন্দির, মূর্তি, হিন্দুদের বাড়ি-ঘর, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন আক্রমণ করছে কট্টর মুসলিম জেহাদিরা। ওই দেশে হিন্দুদের সুরক্ষার দাবিতে পথে নেমে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন হিন্দু ধর্মগুরু চিন্ময় কৃষ্ণ দাস।
অত্যাচার, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ-খুনের সবরকম সীমা অতিক্রম করে গিয়েছে মৌলবাদীরা। কার্যত হিন্দু শূন্য করার ভয়াবহ চক্রান্ত চলেছে ওই দেশে। এই অবস্থায় কলকাতা ইসকনের (ISKCON) সহ সভাপতি রাধারমণ দাস বলেছেন, “জীবন বাঁচাতে আপনারা হিন্দু পরিচয় গোপন করুন। সন্ন্যাসীরা জীবন রক্ষা করতে পরিচয় আত্মগোপন করুন।” ফলে প্রশ্ন উঠছে এ কোন বাংলাদেশে পরিণত হল? বিপ্লবী মাস্টার দা সূর্যসেন, প্রীতিলতা, কালীপদ মুখোপাধ্যায়, বিনয়-বাদল-দীনেশের জন্মভূমিতে আজ কারা রাজত্ব করছে?
কলকাতা ইসকনের (ISKCON) পক্ষ থেকে রাধারমণ দাস বলেছেন, “বাংলাদেশে ইসকন সন্ন্যাসীদের (Bangladesh Monk) এখন থেকে ধর্মীয় পরিচয়কে আত্মগোপন করে, এমন পোশাকই পরার কথা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গৈরিক পোশাক ব্যবহার না করাই শ্রেয়। এখন থেকে গলার তুলসীর মালা লুকিয়ে রাখতে হবে। কপালে তিলক কাটা যাবে না। চন্দন কাঠের তিলক মুছে ফেলতে হবে। টাক মাথা এবং টিকি ঢাকতে মাথায় টুপি পরতে হবে। ভিক্ষা করতে গেলে বা প্রার্থনা করতে গেলে জপের মালা যেন প্রকাশ্যে না ব্যবহার করেন, সেই দিকে নজর দিতে হবে। মন্দিরের বাইরে গেলে হিন্দু পরিচয় জ্ঞাপক সব পরিচয়কে আত্মগোপন করতে হবে। মঠ থেকে বাইরে বের হলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বাংলাদেশে বিপজ্জনক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সন্ন্যাসীদের টার্গেট করে আক্রমণ করা হচ্ছে।”
আরও পড়ুনঃ আইনজীবী আইসিইউতে, ‘ভয়ে’ দাঁড়ালেন না অন্য কেউ, আরও ১ মাস জেলে চিন্ময় প্রভু
বাংলাদেশে হিন্দু নিধনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে চট্টগ্রাম এবং রংপুরে লক্ষ লক্ষ হিন্দুরা আট দফা দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছিল। তার মুখ্য নেতৃত্বে ছিলেন সনাতনী গুরু চিন্ময় কৃষ্ণ (Bangladesh Monk)। ইউনূস প্রশাসন আন্দোলনকে ভয় পেয়ে দ্রুত দমন করতে এই হিন্দু সন্ন্য়াসীকে গ্রেফতার করে। এরপর লাগাতার চট্টগ্রাম সহ নানা জেলায় হিন্দু নিধনের যজ্ঞ শুরু করে মুসলিম দুষ্কৃতীরা। মিথ্যা মামলা যেমন দেওয়া হচ্ছে, ঠিক তেমনি হিন্দুদের হয়ে আইনজীবীরা পাশে দাঁড়ালে প্রাণঘাতী হামলাও চলছে প্রকাশ্যে। জেলে বন্দি চিন্ময় কৃষ্ণের জন্য খাবার নিয়ে গেলে দুই আরও সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার করে ইউনূস প্রশাসন। এমনকী, চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামকে টার্গেট করে নানা ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে অন্তর্বর্তী সরকার। ঢাকা সহ একাধিক জেলার হিন্দু যুবকদের নির্বিচারে গ্রেফতার চলছে এবং মোবাইল নিয়ে গিয়ে সনাতনী জাগরণ জোটের সঙ্গে যুক্ত কিনা তা দেখা হচ্ছে। প্রচুর পরিমাণে মিথ্যা মামলা দিয়ে হিন্দুদের জনজীবনে অত্যাচার চালানো হচ্ছে। দেশে আইন শৃঙ্খলা এবং শাসন বলে কিছু নেই।
মঙ্গলবার আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণের (Bangladesh Monk) জামিনের শুনানি ছিল। কিন্তু তার ঠিক একদিন আগেই এই তাঁর আইনজীবী রমেন রায়কে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। মৌলবাদী মুসলমানদের আঘাতে গুরুতর জখম হলে ওই আইনজীবীকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। হামলার পাশাপাশি বাড়িতে আক্রমণও করা হয় বাড়িতে। অপর দিকে ভয়ে দ্বিতীয় কোনও আইনজীবী প্রভুর পক্ষে আদালতে হাজির হননি। মামলা পিছিয়ে গিয়েছে ১ মাস। ইসলাম সংখ্যা গরিষ্ঠ রাষ্ট্রে এই ভাবে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় কলকাতা ইসকনের (ISKCON) পক্ষ থেকে ওই দেশের সন্ন্যাসী এবং হিন্দুদের নিয়ে অত্যন্ত চিন্তা-উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।