ভারতীয় মহাসাগর অঞ্চলে চিনের আধিপত্যকে আটকাতে গেলে, ভারতকে পাশে পাওয়াটা যে জরুরি তা জানেন বাইডেন।
মোদি-বাইডেন সাক্ষাত।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রস্তুতি চলছে গ্রুপ ছবি তোলার। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Modi) ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। হঠাতই মোদিকে পিছন থেকে কাঁধে হাত দিয়ে ডাকলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট (US President) জো বাইডেন (Joe Biden)! একটু চমকে গেলেও বাইডেনকে দেখেই জড়িয়ে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই ভাইরাল জি-৭ বৈঠকের সেই ভিডিও। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্টের এই আচরণ ভারতের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।
জি-৭ বৈঠকে (G7 summit) যোগ দিতে দু দিনের সফরে জার্মানির (Germany) মিউনিখে গিয়েছেন মোদি। সেখানে নানা দেশের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে আলাপচারিতা সারেন প্রধানমন্ত্রী। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে মোদিকে দূর থেকে দেখতে পেয়ে সেখানে হাজির হন বাইডেন। প্রধানমন্ত্রীও বাইডেনকে দেখতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে দুই শীর্ষ নেতার একাত্মতা। ক্যামেরা বন্দি হয়েছে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও বন্ধুত্বের বুনট।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে চাইছে বাইডেন প্রশাসন। ভারত সেখানে গুরুত্ববপূর্ণ স্থান দখল করে। ভারত প্রযুক্তির কেন্দ্র। বিশেষত ভারতে ক্রেতাদের বিপুল বাজার রয়েছে। বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তির জিনিসও সেখানে তৈরি হয়। তাই ভারতের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক মজবুত করতে চায় আমেরিকা। এশিয়া মহাদেশের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও ভারত অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে রেখেছে। চিন হোক বা আমেরিকা, সকলেই ভারতের এই সক্ষমতা সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। ভারতীয় মহাসাগর অঞ্চলে চিনের আধিপত্যকে আটকাতে গেলে, ভারতকে পাশে পাওয়াটা যে জরুরি তা জানেন বাইডেন। তাই নিজে এগিয়ে এসে বন্ধুত্বের ভিত মজবুত করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পাশে থাকার বার্তা দিল ভারতও।
আরও পড়ুন: দুই বন্ধুর চায়ে পে চর্চা! জি-৭ বৈঠকে আলাপচারিতায় মোদি-মাক্রঁ
তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে আমেরিকা সহ ইউরোপের শক্তিধর দেশগুলির যত চাপই থাক না কেন, নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে আসবে না নয়াদিল্লি জি-৭ বৈঠকেও সে কথা বুঝিয়ে দেন মোদি। শক্তির ক্ষেত্রে বিশ্বের গরিব দেশগুলির পক্ষে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি বন্ধ করার জন্য এই মুহূর্তে আমেরিকা এবং পশ্চিমের কিছু দেশের চাপ রয়েছে ভারতের উপর। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমের দেশগুলিকে শুনিয়ে এদিন মোদি বলেন, “আপনারা আশা করি সবাই একমত হবেন, শক্তি শুধুমাত্র ধনীদেরই হাতের মুঠোয় থাকবে এটা হতে পারে না। আর এখন ভূকৌশলগত কারণে যখন জ্বালানির দাম আকাশ ছোঁয়া, তখন এই কথাটা মনে রাখা আরও জরুরি।” সোমবার মিউনিখে জি-৭ বৈঠকে পরিবেশ, শক্তি এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অধিবেশনে ভারতের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন মোদি।