Donald Trump: পানামা খাল ফিরে পেতে চাইছেন ট্রাম্প, কেন জানেন?
পানামা ক্যানেল নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করল ট্রাম্প (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ পানামা ক্যানেল এখন আমেরিকার মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, এই ক্যানেলের (Panama Canal) ওপর বাড়ছে চিনা আধিপত্য! এই খাল ব্যবহারকারী মার্কিন জাহাজগুলি থেকে অন্যায়ভাবে বাড়তি কর আদায় করা হচ্ছে। প্রশান্ত এবং আটলান্টিক মহাসাগরকে যুক্ত করা এই খাল পরিচালনায় চিনের খবরদারি বরদাস্ত করা হবে না বলে বার্তা দিলেন আমেরিকার হবু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। জানিয়ে দিলেন, যদি পানামা প্রশাসন সঠিকভাবে এই খাল পরিচালনা করতে না পারে সেক্ষেত্রে আমেরিকা সেটি ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাবে।
সমুদ্রপথে সারা বিশ্বের মোট পণ্য-পরিবহণের প্রায় ৫ শতাংশের ক্ষেত্রে পানামা খাল (Panama Canal) ব্যবহৃত হয়। এতে দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ উপকূল ঘুরে যেতে হয় না বলে অনেকটা সময় ও জ্বালানি বাঁচে। খালটি তৈরি করেছিল আমেরিকা। ১৯১৪ সালে নির্মাণকাজ শেষের পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকা এবং পানামা প্রশাসন যৌথভাবে খালটি পরিচালনার দায়িত্ব সামলেছিল। ১৯৭৭ সালে আমেরিকার ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের আমলে সই হওয়া চুক্তির ফলে ১৯৯৯ থেকে এই খালটির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পায় পানামা। কিন্তু, সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প অভিযোগ তুলেছেন, "পানামা খালটি ১১০ বছর আগে ব্যবসার জন্য চালু করা হয়েছিল। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জীবন ও সম্পদের জন্য বিশাল ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল। মূলত, খালটি তৈরির সময় জঙ্গলে মশার কামড়ে ৩৮ হাজার আমেরিকান পুরুষ মারা গিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার এক ডলারের বিনিময়ে খালটি তাঁর কার্যকালের সময় এটি শুধুমাত্র পানামার জন্য দিয়েছিলেন। চিন বা অন্য কারও জন্য নয়।" তাঁর কথায়, "আমাদের নৌবাহিনী এবং বাণিজ্যের প্রতি অত্যন্ত অন্যায় এবং অবিবেচক আচরণ করা হচ্ছে। এই খালপথ ব্যবহার করতে দেওয়ার বিনিময়ে পানামা আমেরিকার কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে।" তিনি আরও বলেন, "পানামা যে ফি নিচ্ছে, তা হাস্যকর। আমাদের দেশকে নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার।" আমেরিকা ছাড়াও পানামা খাল মূলত ব্যবহার করে চিন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। ট্রাম্পের কথায় ইঙ্গিত, সেখানে চিনের প্রভাব বাড়ছে। ভাবী প্রেসিডেন্ট বলেছেন, "এই চ্যানেলটি চালাবে শুধুমাত্র পানামা, চিন বা অন্য কেউ নয়। পানামা যদি কাজটা সুরক্ষিত, দক্ষ এবং নির্ভরযোগ্য ভাবে করতে না পারে, তা হলে আমরা দাবি করব, বিনা প্রশ্নে পানামা খাল সম্পূর্ণ ভাবে আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হোক।"
আরও পড়ুন: ভারত থেকে ব্রহ্মোস মিসাইল কিনতে চলেছে ভিয়েতনাম
পানামার (Panama Canal) প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো ট্রাম্পের বক্তব্যকে তার দেশের সার্বভৌমত্বের অপমান বলে দ্রুত প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, "পানামা খালের প্রতিটি বর্গমিটার এবং আশেপাশের এলাকা পানামার অন্তর্গত। আর তা পানামার অন্তর্ভুক্ত থাকবে।" তিনি আরও বলেন, "পানামাবাসীদের অনেক বিষয়ে ভিন্ন মত থাকতে পারে। কিন্তু যখন আমাদের খালের কথা আসে, তখন আমরা সবাই আমাদের পানামানিয়ার পতাকার নীচে একত্রিত হব।" তিনি বিশেষভাবে ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করেই খালের দাম বৃদ্ধির সমালোচনার জবাব দেন। তিনি দাবি করেন যে সরবরাহ-ও-চাহিদার খরচের ওপর ভিত্তি করে শুল্ক নির্ধারণ করা হয়। "শুল্কগুলি একটি ইচ্ছার ওপর সেট করা হয় না," তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন এবং তারপরে আরও বেশি জাহাজ ট্রাফিক পরিচালনার জন্য খালটি প্রসারিত করার জন্য পানামার স্বায়ত্ত্বশাসিত উদ্যোগের ওপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, "খরার কারণে এই খালের কার্যকলাপে প্রভাব পড়েছিল। এমন একটি কঠিন বছরের পরে খরচ মেটাতে এবং খালের পরিকাঠামো বজায় রাখার জন্য ফি বাড়ানো হয়েছিল।" উল্লেখযোগ্যভাবে, খালটি পানামার অর্থনীতির মূল চাবিকাঠি এবং এটি সরকারের বার্ষিক রাজস্বের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ উৎপন্ন করে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।