img

Follow us on

Wednesday, Oct 30, 2024

Flood in Libya: ‘ড্যানিয়েল’-এ নিশ্চিহ্ন লিবিয়ার একাংশ! মৃত্যু ৫০০০ পার, নিখোঁজ আরও ১০ হাজার

ঝড় এবং বন্যায় লিবিয়ার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত?

img

বন্যায় বিধ্বস্ত লিবিয়া। সংগৃহীত চিত্র।

  2023-09-13 17:50:50

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিধ্বংসী ঝড় আর সঙ্গে আসা ভয়ঙ্কর বৃষ্টির জেরে সৃষ্ট প্লাবন— এই দুয়ের মিশেলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত লিবিয়া (Flood in Libya)। এমনিতে, বছরভর যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অবস্থায় থাকে উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশ। এবার প্রাকৃতিক রোষানলে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল দেশটির একাংশ। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ হাজারের গণ্ডি। নিখোঁজ ১০ হাজারের বেশি।

ঘাতকের নাম ‘ড্যানিয়েল’

জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে প্রবল শক্তিতে সেদেশে আছড়ে পড়ে শক্তিশালী ঝড় ‘ড্যানিয়েল’ (Storm Daniel)। ঝড়ের দাপটে ব্যাপক বৃষ্টি হয়। এর জেরে পরপর নদীবাঁধ ভেঙে গেলে, প্লাবিত হয় আশেপাশের শহর ও এলাকায়। জলে তোড়ে ভেসে যায় উপকূলবর্তী ডার্না শহরের একাংশ (Flood in Libya)। একটা বড় অংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় জলের তলায়। আর সেই সঙ্গে তলিয়ে যান হাজার হাজার মানুষ। ডার্না ছাড়াও ঝড়ের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বাতাহ, আল-বায়দা, আল-মার্জ, তোবরুকের মতো শহর। ঝড়ের প্রভাবে যে দিকে তাকানো যায়, সেই দিকেই কেবল ধ্বংসস্তূপ আর মৃত দেহ, জনশূন্য এলাকা।

সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর গ্রিসের উপকূলবর্তী ভূমধ্যসাগরে উৎপন্ন হয়েছিল ঝড় ‘ড্যানিয়েল’। ৫ ও ৬ তারিখে গ্রিসে রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়। প্রবল বর্ষণে গ্রিসেই ১৫ জনের মৃত্যু হয়। এর পর ড্যানিয়েল আরও শক্তি সঞ্চয় করে ‘মেডিকেন’ (মেডিটেরানিয়ান হারিকেন)-এ পরিণত হয়ে আছড়ে পড়ে লিবিয়ায় (Flood in Libya)। লিবিয়ার আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন অংশে ১৫০ থেকে ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। হড়পা বানের সৃষ্টি হয়। জানা গিয়েছে, সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে আল-বায়দাত শহরে। সেখানে ২৪-ঘণ্টায় ৪০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি  তবে এদের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ডার্না এবং বেনগাজি শহরের।

এত ক্ষয়ক্ষতির কারণ কী?

জানা গিয়েছে, ডারনায় বেশ কয়েকটি নদীবাঁধ রয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে তিনটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় হড়পা বানে জলের তোড়ে ভাসিয়ে নিয়ে একেবারে সমুদ্রে নিয়ে ফেলেছে বহু বসতি। আর তার জেরেই বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। সংবাদসংস্থার খবর অনুযায়ী, প্রথমে বৃষ্টির ফলে চাপ পড়ে ভেঙে যায় ডার্না শহরের ১২ কিমি আগে থাকা একটি বাঁধ। পর্যায়ক্রমে, তা চাপ ফেলে শহরের ১ কিমি আগের একটি বাঁধের ওপর। সেটিও ভেঙে গেলে, গোটা শহর জলের তোড়ে ভেসে যায়। ডার্না শহরেই কমপক্ষে ১০০০ দেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে গোটাটাই সরকারি হিসেব। প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। লিবিয়ার উপকূলবর্তী একটি শহরের জনসংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার। জলের তোড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে শহরের একটি অংশ। বেসরকারি হিসেব বলছে, এখানেই মৃতের সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে (Flood in Libya)। 

‘ভুতুড়ে’ শহরে পরিণত ডার্না

সংবাদসংস্থা জানাচ্ছে, ডার্না শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। একটা অংশ রাতারাতি যেন মানচিত্র থেকে ‘ভ্যানিশ’ হয়ে গিয়েছে। সেখানে প্রায় কিছুই অবশিষ্ট নেই। গাড়িঘোড়া উল্টে পড়ে রয়েছে রাস্তার ধারে। গাছপালা উপড়ে ঢেকে গিয়েছে রাস্তা। ঘরবাড়ি সব ভেঙে পড়ে রয়েছে। একটি লোকও চোখে পড়ছে না কোথাও। চারদিকে শুধু লাশের পাহাড়। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবি এবং ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, ডার্নার বুক দিয়ে তীব্র গতিতে জল ছুটে চলেছ। এখন সেখানে শুধু শ্মশানের স্তব্ধতা। ধসের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে আরও কয়েকশো দেহ। কিছু মানুষ যাঁরা এখনও বেঁচে রয়েছেন শহরে, তাঁরা ঘরে বন্দি (Flood in Libya)। 

প্রশাসনের বক্তব্য

লিবিয়ার অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী এবং পূর্বাঞ্চল প্রশাসনের সদস্য হিচেম আবু চকিত্তত জানিয়েছেন, শহরের ২৫ শতাংশ ধুয়ে মুছে গেছে। ডারনা শহরেই মারা গেছেন প্রায় দুই হাজার ২০০ জন। লিবিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রী ওথমান আবদুলজলিল সোমবার ক্ষতিগ্রস্থ শহর পরিদর্শন করেন। তিনি ঝড়ের ও বন্যার ধ্বংসলীলায় শহরকে ভুতের শহর বলে মন্তব্য করেন। এছাড়াও ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ দ্য রেড ক্রস অ্যান্ড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতিনিধিরা জানান, নিখোঁজ হওয়া মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। 

প্রতিবেশী দেশগুলির সাহায্যের আশ্বাস

লিবিয়ার (Flood in Libya) প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনায় প্রতিবেশী দেশগুলি নিজেদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ ১৬৮টি অনুসন্ধান এবং উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে। সম্প্রতি ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করতে ইতালি সাহায্য পাঠিয়ছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও লিবিয়াতে সৌদি আরব, আমেরিকা সাহায্যের জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছে।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

Tags:

Madhyom

bangla news

Bengali news

Flood in Libya


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর