ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও চাপা পড়ে রয়েছেন অনেকে...
ছবি: সংগৃহীত
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রবল ভূমিকম্পের (Earthquake) জেরে বিধ্বস্ত তুরস্ক (Turkey) ও পড়শি দেশ সিরিয়ার (Syria) বিস্তীর্ণ অংশ। সোমবার কাকভোরে অনুভূত হয় প্রথম ভূমিকম্প। তার পর আরও দুবার। বুধবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৫ হাজার। অসংখ্য বাড়ি পড়েছে ভেঙে। এর আগে ২০১৫ সালে নেপালেও হয়েছিল এরকম ধ্বংসাত্মক একটি ভূমিকম্প। প্রাণ হারিয়েছিলেন ৮ হাজার ৮০০ মানুষ। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে প্রাণের স্পন্দন খুঁজে বেড়াচ্ছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। ভূমিকম্প বিপর্যস্ত সিরিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। তাইওয়ানের রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি এক মাসের বেতন দান করেছেন তুরস্কের ত্রাণ তহবিলে। অন্যান্য সাহায্যও পাঠিয়েছে তাইওয়ান। তুরস্ক ট্যুইটার অ্যাক্সেস ফিরিয়ে এনেছে। সিরিয়ায় যাতে আরও বেশি করে ত্রাণ আসতে পারে তাই দুটো নতুন বর্ডার খুলে দেওয়া হয়েছে। হাসান নামে সিরিয়ার এক বাসিন্দা বলেন, জিন্দেইরিশ শহরে হাজার হাজার বাড়িতে ধরেছে ফাটল। ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও চাপা পড়ে রয়েছেন অনেকে।
এদিকে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে ভারতের ছ নম্বর বিমানটিও পৌঁছে গিয়েছে তুরস্কে (Earthquake)। উদ্ধারকারী দল, ডগ স্কোয়াড এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র পাঠানো হয়েছে এই বিমানেও। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ খবর জানিয়েছেন। এর আগে ৩০ শয্যা বিশিষ্ট একটি ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালও তুরস্কে পাঠিয়েছে ভারত। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে জীবিতদের উদ্ধার করতে ডগ স্কোয়াডের বিশেষ প্রশিক্ষিত চারটি কুকুর আগেই পাঠিয়েছিল ভারত। পাঠানো হয়েছিল বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ১০১ জন বিশেষ প্রশিক্ষিত সদস্যকেও। তুরস্কের উদ্ধারকারী দলকে সহযোগিতা করতেই গিয়েছে ভারতের এই দল। তাঁদের সঙ্গে পাঠানো হয়েছিল জীবনদায়ী বিভিন্ন ওষুধও।
এদিকে, ফের কম্পন হতে পারে এই আশঙ্কায় হাজার হাজার শহরবাসীকে বসতবাড়িতে ফিরে যেতে নিষেধ করেছেন তুরস্কের প্রশাসন। জানা গিয়েছে, শহরাঞ্চলেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। সিরিয়া এবং তুরস্কের কম্পন বিধ্বস্ত অঞ্চলে জীবন্ত মানুষের সন্ধান পেতে আঁতিপাঁতি করে খুঁজছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, গুরুতর জখম না হলে এখনও অনেকেরই বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রবল ঠান্ডায় উদ্ধার কাজে ঘটছে বিঘ্ন। তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ অঞ্চলে বর্তমানে তাপমাত্র রয়েছে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে। বাধ্য হয়ে সব হারানো মানুষগুলো ঠাঁই নিয়েছেন পথে দাঁড়িয়ে থাকা কোনও গাড়ি কিংবা অস্থায়ী তাঁবুতে। তুরক্সের অ্যাক্সেস দ্রুত খুলে দেওয়া হবে জানিয়ে দিয়েছেন ট্যুইটারের সিইও ইলন মাস্ক।
আরও পড়ুুন: ‘ভারতের অগ্রগতি সহ্য করতে পারছেন না কেউ কেউ’, বিরোধীদের খোঁচা প্রধানমন্ত্রীর
অন্যদিকে, ভূমিকম্পের (Earthquake) খবর আগাম দিতে না পারায় এবং উদ্ধারকাজ ঠিকঠাক না হওয়ায় সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছে তুরস্কের বিরোধী দলগুলি। বুধবার তার জবাবে সরকারের তরফে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইওয়্যাপ আর্দোগাঁ স্বীকার করে নিয়েছেন সরকারের খামতির কথা।
এদিকে, ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্ক ও সিরিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও। অর্থ সংগ্রহ করতে আগামী মাসে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ডোনার কনফারেন্স করা হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরশুলা ভন দার লেয়েন পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন সিরিয়া ও তুরস্ক সরকারকে। তিনি বলেন, এরকম একটি বিপদের দিনে কেউই একা থাকবেন না।
Tags: